২৪-এর অর্জিত স্বাধীনতার সংগ্রাম স্মরণে করতে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) ২০২৫ সালের ক্যালেন্ডারের প্রতিটি পাতায় ছাত্র-জনতার জুলাই বিপ্লবের বিভিন্ন সময়ে তোলা ছবি স্থান পেয়েছে। ক্যালেন্ডার শুরুর পাতায় তুলে ধরা হয়েছে জুলাই বিপ্লবের শুরুর সংগ্রাম এবং শেষ করা হয়েছে স্বাধীনতার সূর্যোদয়ের চিত্র দিয়ে। শিক্ষার্থীদের ঐক্যবদ্ধ সংগ্রামের চিত্র, প্রতিবাদী চেতনার উন্মোচন, সারাদেশের দেয়াল আঁকন থেকে কিছু সেরা চিত্র স্থান পেয়েছে ক্যালেন্ডারে। আরও আছে নারী শিক্ষার্থীদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ। বুক ভরা সাহস ও প্রাণ ভরা দেশপ্রেম নিয়ে চলেছে সংগ্রামের ৩৬ দিন। পাড়া-মহল্লা থেকে শুরু করে দেশের গুরুত্বপূর্ণ সড়কে চলেছে শিক্ষার্থীদের সংগ্রাম।বিভিন্ন মিডিয়াতে প্রচারিত হয়েছে সেই সংগ্রামের চিত্রগুলো। ঢাকার মেট্রোরেল, ফ্লাইওভার, ব্রিজ ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের দেয়ালে গ্রাফিটি করেছিল শিক্ষার্থীরা। ক্যালেন্ডারের মে মাসে/ বৈশাখ - জ্যৈষ্ঠের পাতায় রয়েছে শহীদ মুগ্ধর গ্রাফিটির চিত্র যেখানে লেখা ‘পানি লাগবে কারো? পানি, পানি, পানি’। পরের পাতায় রয়েছে শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশের হামলার চিত্র। সাথেই রয়েছে পুলিশের গাড়িতে শিক্ষার্থীর লাশ ঝুলানোর চিত্র। জুলাই মাসের পাতায় রয়েছে রিকশায় করে শিক্ষার্থীর লাশ নেওয়ার চিত্র। বিপরীতে রয়েছে শরীরে শিহরণ জাগানো শহীদ আবু সাঈদের সেই ‘মনের ভেতর উঠেছে ঝড়, বুক পেতেছি গুলি কর’ ভঙ্গিমার গ্রাফিটি। আগস্টের পাতায় রয়েছে ৫ আগস্টের সেরা ছবিটি। ২৪ শের স্বাধীনতার অর্জনে সেদিন বেরিয়ে এসেছিল ছাত্র-জনতা এবং পেশাজীবিরা। বাকৃবির জনসংযোগ ও প্রকাশনা দফতরের পরিচালক মোহাম্মদ তৌফিকুল ইসলাম জানান, '২০২৪ এর জুলাই বিপ্লব বাংলাদেশের ইতিহাসে একটি উল্লেখযোগ্য ও স্মরণীয় অধ্যায়। এই বিপ্লবে শিক্ষার্থীরা প্রমাণ করেছে যে ঐক্য ও সাহসিক সংগ্রাম দিয়ে পুরো দেশকে বদলে দেয়া সম্ভব। অন্যান্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মতো বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়সহ ময়মনসিংহের ছাত্র-জনতা এবং পেশাজীবিবৃন্দ এই আন্দোলনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। লাখো শহীদের ত্যাগ ও বীরত্বগাঁথা এক ফ্রেমে তুলে ধরা কখনোই সম্ভব নয়। তবুও বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ কে ফজলুল হক ভূঁইয়ার পরিকল্পনায় এবং জনসংযোগ ও প্রকাশনা দফতরের আমরা প্রত্যেকেই চেষ্টা করেছি জুলাই বিপ্লবের স্মরণীয় ঘটনাগুলোকে একটি ক্যালেন্ডারের মাধ্যমে ফুটিয়ে তুলতে, যাতে পুরো বছরটি জুড়ে জুলাই বিপ্লব মানুষের স্মৃতিতে গেঁথে থাকে। ' লাই বিপ্লব শুধুমাত্র একটি আন্দোলন ছিল না, এটি বৈষম্যের বিরুদ্ধে জনগণের সচেতনতা ও আন্দোলনের একটি নতুন উন্মোচন। দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে, ধর্ম, বর্ণ, দল নির্বিশেষে এই সংগ্রাম সমাজে নতুন আশার সঞ্চার করেছে। এর মাধ্যমে জনগণের মধ্যে সাহস ও দৃঢ়তা বৃদ্ধি পেয়েছে। তাদের আত্মত্যাগ প্রমাণ করেছে যে, একতার শক্তি এবং সংগ্রাম দিয়ে একটি দেশকে পরিবর্তন করা সম্ভব। বিপ্লবের মাধ্যমে দেশে গণতান্ত্রিক অধিকার প্রতিষ্ঠা, জনগণের মূল্যবোধ এবং স্বাধীনতার ধারণা ও আকাঙ্ক্ষা আরও দৃঢ় হয়েছে।