ফরিদপুর জেলার কানাইপুরের ঢাকা - খুলনা মহাসড়কের দিগনগর নামক স্হানে বাস ও পিকাপের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীদের তথ্য মতে জানা যায, ১৬ এপ্রিল মঙ্গলবার আনুমানিক সকাল ৮ ঘটিকায় ঢাকা থেকে মাগুরা-ঝিনাইদা গামী উত্তরা ইউনিক পরিবহনের একটি বাসের সাথে বিপরীত দিক থেকে আসা একটি পিকআপ ভ্যানের সাথে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয় এবং পিকাপটি দুমড়ে মুচরে যায়। এতে ঘটনাস্থলেই পিকাপের চালক সহ ১১ জনের মর্মান্তিক মৃত্যু হয়। গুরুতর আহত অবস্থায় ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয় আরও দুই জনের।শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত মৃতের মোট সংখ্যা ১৩ জন।
জানা যায় ফরিদপুর জেলার আলফাডাঙ্গা উপজেলা থেকে পিকআপ ভ্যানটি মালামালের পরিবর্তে যাত্রী বহন করে ফরিদপুর যাচ্ছিলো। যাত্রীদের মধ্য হতে কেউ কেউ ত্রাণের টিন সংগ্রহের জন্য ফরিদপুর জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে যাচ্ছিলেন। আবার কেউ কেউ ঈদের ছুটি শেষে ফিরে যাচ্ছিলেন কর্মস্থল ঢাকায়। পিকাপের যাত্রা-ই তাদের শেষ যাত্রায় পরিনত হলো।
শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত একই পরিবারের চারজনসহ মোট ১৩ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানা যায়। নিহতল সবাই পিকআপের যাত্রী ছিলেন। মৃতের মধ্যে ৩ জন পুরুষ ৪ জন শিশু ও ৬ জন নারী রয়েছে বলে ফরিদপুরের বঙ্গবন্ধু মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক ডাক্তার দীপক কুমার বিশ্বাস নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন ঘটনাস্থলেই ১১ জনের মৃত্যু হয় এবং হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আরো দুইজনের মৃত্যু হয়। গুরুতর আহত অবস্থায় একজনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় প্রেরণ করা হয়েছে। আরো ৫ জন বর্তমানে চিকিৎসাধীন রয়েছেন এবং এদের প্রত্যেকেই আশঙ্কা মুক্ত বলে তিনি জানান। নিহতদের পরিচয় সনাক্তের কাজ চলছে। ইতি মধ্যে যাদের পরিচয় সনাক্ত করা হয়েছে তাদের লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হচ্ছে।
দুর্ঘটনার পর পরই ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার সহ প্রশাসনের অন্যান্য কর্মকর্তা বৃন্দ। জেলা প্রশাসক তার বক্তব্যে বলেন, দুইটি গাড়ির চালকদের অসতর্কত, অসাবধানতা এবং এক লেনের গাড়ি অন্য লেনে চালানোর কারণে দুর্ঘটনাটি ঘটে থাকতে পারে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। এ ঘটনায় ফরিদপুরের জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেটকে প্রধান করে ৫ সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। নিহতের প্রত্যেকের পরিবারকে ৫ লাখ টাকা এবং আহতদের ৩ লাখ টাকা করে সরকারি সহায়তার সিদ্ধান্ত হয়েছে। তাছাড়া নিহতদের দাফনের জন্য প্রত্যেক পরিবারকে বিশ হাজার এবং আহতদেরকে ১০ হাজার টাকা করে সহায়তার কথাও উল্লেখ করেন।
ফরিদপুরের মাদারিপুর অঞ্চলের হাইওয়ে পুলিশ সুপার শাহিন আলম খান বলেন,এ ঘটনায় হাইওয়ে পুলিশের পক্ষ থেকে আলাদাভাবে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে।