সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি, বৈষম্যহীনতা, সমঅধিকার, অগ্রগতি ও গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ বিনির্মাণের লক্ষ্যে নীলফামারীর ডিমলায় জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির মহাসমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি, বৈষম্যহীনতা, সমঅধিকার, অগ্রগতি ও গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ বিনির্মাণের লক্ষ্যে নীলফামারীর ডিমলায় জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির মহাসমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। শনিবার( ১৬ই নভেম্বর) সন্ধ্যা সাড়ে ৭ টায় ডিমলা ইসলামিয়া ডিগ্রি কলেজ মাঠে উপজেলা বিএনপির আয়োজনে এই জনসমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। উপজেলা বিএনপির সভাপতি অধ্যক্ষ মনোয়ার হোসেন সভাপতিত্বে এবং উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক গোলাম রব্বানী প্রধানের সঞ্চালনায় জনসমাবেশে বক্তব্য প্রদান করেন উপজেলা বিএনপি সিনিয়র সভাপতি আরিফুল ইসলাম লিটন,উপজেলা জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির সাধারণ সম্পাদক বদিউজ্জামান রানা,এতে প্রধান বক্তা হিসেবে বক্তব্য রাখেন নীলফামারী জেলা বিএনপি'র সভাপতি আ.খ.ম.আলমগীর হোসেন সরকার,বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন, নীলফামারী জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক জহুরুল আলম। জনসমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে যুক্ত হয়ে নেতা-কর্মীদের উদ্দেশ্যে বক্তব্য প্রদান করেন নীলফামারী-০১ ডোমার-ডিমলা আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ইঞ্জিঃ শাহরিন ইসলাম চৌধুরী তুহিন অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ও সাবেক সংসদ ইঞ্জিনিয়ার শাহরিন ইসলাম চৌধুরী তুহিন তার বক্তব্যে বলেন, 'দীর্ঘ ১৬ বছর যাবৎ ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার দুঃশাসন, বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ড, নির্যাতন-নিপীড়নের মাঝেও বিএনপির নেতা-কর্মীরা তাদের নীতি-আদর্শ থেকে এক বিন্দু সরে যায়নি। মহান মুক্তিযুদ্ধে ধর্ম-বর্ণ ভেদাভেদ ভুলে যেভাবে অংশগ্রহণ করেছিল, ঠিক একইভাবে ২৪-এর গণবিপ্লবেও এসব পরিচয় ছিল না। সবার এক পরিচয় ছিল বাংলাদেশি। সেক্ষেত্রে সংখ্যালঘু, সংখ্যাগুরু, বাঙালি, অবাঙালি বলে কিছু নেই। বরং দলমত, ধর্মবর্ণ নির্বিশেষে প্রত্যেকটি নাগরিকেরই এক রাষ্ট্র বাংলাদেশ।তিনি আরও বলেন, ১৯৮৬ সালের নির্বাচনে অংশগ্রহণ করা নিয়ে লালদিঘী ময়দানের জনসভায় শেখ হাসিনা বলেছিলেন যারা নির্বাচনে যাবে, তারা জাতীয় বেইমান হবে।সেবার আওয়ামী লীগও অংশগ্রহণ করেছিল এবং তাদের দোসর ছিল জামায়াতে ইসলামী। গত ১৭ বছর যাবৎ বিএনপির নেতা-কর্মীদের মতো তারাও নির্যাতনের শিকার হয়েছে। অথচ নতুন স্বাধীনতার পর জামায়াত একটি ফ্যাসিস্ট দলকে ক্ষমা করেছে।তিনি বলেন, যারা হত্যার শিকার হয়েছে, যারা হতাহত হয়েছে, তারা ন্যায়বিচার পাওয়ার স্বাধীনতা লাভ করুক এছাড়া যারা হত্যা করেছে, অত্যাচার করেছে তাদের বিচার চায় বিএনপি। দোষীদের শাস্তি ভোগ করতে হবে।বিএনপি একটি আপোষহীন দল।
বর্তমান সময়ে তিনি বিএনপির নেতা-কর্মীদের সংযত হওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেন,আমরা এখনো বিরোধীদলে আছি। বর্তমানে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্বে আছে। জনমানুষের দোয়া ও ভালোবাসায় বিএনপির ভালো সময় যাচ্ছে। এজন্য সকল নেতা-কর্মীকে সংযত হতে হবে। সাধারণ জনগণের ভালোবাসায় থাকতে হবে। সবার সাথে ভালো আচরণ করতে হবে। সাধারণ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়, এমন উদ্যত ব্যবহার করা যাবে না। ক্ষুদ্র মতপার্থক্যের জন্য বৃহৎ স্বার্থকে জলাঞ্জলি দেওয়া যাবেনা।ডোমার-ডিমলার আগামীর উন্নয়ন সম্পর্কে তিনি বলেন, 'বিএনপি ক্ষমতায় আসলে আমরা শিক্ষার মানোন্নয়ন করবো। আমি চাই প্রত্যেক ঘরে অন্ততঃ একজন শিক্ষিত ডিগ্রিধারী ব্যক্তি থাকবে। নারীদের শিক্ষিত করে তোলার ক্ষেত্রে আমরা পদক্ষেপ গ্রহণ করবো। নীলফামারীতে ভালো ও উন্নতমানের হাসপাতাল করার উদ্যোগ নেওয়া হবে এবং সর্বোপরি কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করে বেকারত্ব দূর করতে কাজ করা হবে।এসময় আরো বক্তব্য রাখেন,ডিমলা সদর ইউনিয়ন এর বিএনপির সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম ডিয়ার , সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মজিদ , উপজেলা যুবদলের আহবায়ক শহিদুল ইসলাম উপজেলা যুবদলের আহবায়ক শহিদুল ইসলাম সেলিম,সদস্য সচিব আশিক-উল ইসলাম লিমন , উপজেলা কৃষক দলের আহবায়ক নুর আলম, উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহবায়ক সবুজ খান, ও সদস্য সচিব আলমগীর হোসেন প্রিন্স,ডিমলা সদর ইউনিয়নের আহবায়ক সোহাগ খান লোহানি, ও সদস্য সচিব মিল্টার, যুগ্ন আহবায়ক আবু বক্কর সিদ্দিক, ছাত্রদলের আহ্বায়ক শামীম, সদস্য সচিব রাসেল। জনসমাবেশকে সফল করতে দুপুর থেকে ইউনিয়ন এবং ডিমলা শহরের বিভিন্ন জায়গা থেকে খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে বিএনপি, যুবদল, ছাত্রদল স্বেচ্ছাসেবক দল, কৃষক দল, তাঁতী দল, শ্রমিক দল সহ বিভিন্ন সংগঠনের নেতা-কর্মীরা সমাবেশস্থলে উপস্থিত হন। হাজার হাজার নেতাকর্মীর উপস্থিতিতে বলা যায়,ডিমলা ইসলামিয়া ডিগ্রি কলেজ মাঠে কোনায় কোনায় ভরে যান ডিমলা শঠিবাড়ী মোড় পর্যন্ত পুরো সড়ক সহ আশেপাশের বিভিন্ন সড়কে নেতা-কর্মীদের অংশ গ্রহণে জনসমাবেশটি জনসমুদ্রে পরিপূর্ণ হয়ে উঠে।