তানোরে জমে উঠেছে কোরবানির পশুর হাট, দেশি গরুতে খুশি খামারি ও ক্রেতারা

নিজস্ব প্রতিবেদক প্রকাশিত: ৪ জুন , ২০২৫ ১৪:৫৯ আপডেট: ৪ জুন , ২০২৫ ১৪:৫৯ পিএম
তানোরে জমে উঠেছে কোরবানির পশুর হাট, দেশি গরুতে খুশি খামারি ও ক্রেতারা

রাজশাহীর তানোর উপজেলায় কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে জমে উঠেছে পশুর হাটগুলো। এবছর ভারতীয় গরুর অনুপস্থিতিতে দেশি খামারিদের গরু বিক্রি বাড়ায় খুশি খামারিরা। হাটে ক্রেতা-বিক্রেতাদের পদচারণায় মুখরিত হয়ে উঠেছে মুন্ডমালা, চৌবাড়িয়া, গোল্লাপাড়া সহ অন্যান্য পশুর হাট। তুলনামূলকভাবে দাম কিছুটা কম হলেও, খামারিরা এবার ন্যায্য দাম পাচ্ছেন বলে জানিয়েছেন।
দেশি গরুতেই কোরবানির প্রস্তুতি তানোরের বৃহৎ মুন্ডমালা পশুর হাটে সোমবার সরেজমিনে দেখা যায়, দেশি গরু ও ছাগলে সয়লাব হাট। সকাল থেকে শুরু হয়ে চলে রাত পর্যন্ত কেনাবেচা। ভোর থেকেই দেশের বিভিন্ন জেলা ও উপজেলা থেকে খামারি ও ব্যবসায়ীরা গরু ও ছাগল নিয়ে হাটে আসেন। সকাল ৮টা হতে দুপুর ১টা পর্যন্ত ছাগলের বেচাকেনা হলেও এর পর থেকেই হাট দখল করে নেয় গরু। হাটে দেখা গেছে, ছোট, মাঝারি ও বড় সাইজের গরু নিয়ে ব্যাপক দর কষাকষি করছেন ক্রেতারা। বেশিরভাগ ক্রেতাই মাঝারি সাইজের গরুর দিকে ঝুঁকছেন। এসব গরুর দাম ৬০ হাজার থেকে ১ লাখ ১০ হাজার টাকার মধ্যে। বড় গরুর দাম দেড় লাখ থেকে ২ লাখ টাকা পর্যন্ত উঠছে। ছোট গরু বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৭৫ হাজার টাকায়।
ভারতীয় গরুর অনুপস্থিতিতে দেশি খামারির স্বস্তি
খামারি ও গরু ব্যবসায়ীদের দাবি, এবছর বিজিবির কড়া নজরদারির কারণে ভারত থেকে গরু বা মহিষ আমদানি হয়নি। ফলে দেশীয় খামারিদের গরুর চাহিদা বেড়েছে। মুন্ডমালা হাটে গরু নিয়ে আসা খামারি আমিনুল হোসেন বলেন, “আমি কয়েকটি গরু এনেছিলাম, সব বিক্রি হয়ে গেছে। দামও ভালো পেয়েছি। লোকসান হয়নি, ক্রেতারাও খুশি।
গরু ব্যবসায়ী সোলেমান হোসেন বলেন, “ভারতীয় গরু না থাকায় দেশি গরুর চাহিদা বেড়েছে। তবে এখনও ক্রেতা তুলনামূলক কিছুটা কম। তারপরও দাম ভালো, তাই খামারিরা লাভের মুখ দেখছেন।ক্রেতাদের আগ্রহ দাম তুলনামূলক কম গরু কিনতে আসা রায়হান আলী বলেন,গত বছরের তুলনায় এবছর গরুর দাম কিছুটা কম। তাই আগে ভাগেই কিনে নিচ্ছি। ঈদের কাছাকাছি গেলে দাম বাড়ার সম্ভাবনা থাকে। চৌবাড়িয়া হাটে গরু বিক্রি করতে যাওয়া খামারি জিয়া হোসেন   বলেন আমার খামারে পাঁচটি মাঝারি গরু ছিল। এর মধ্যে তিনটি চৌবাড়িয়া হাটে বিক্রি করে, দুইটি মুন্ডমালায় এনেছি। দাম কিছুটা কম হলেও লাভ হচ্ছে।শেষ সময়ে জমে উঠছে হাটগুলো মুন্ডমালা পৌরসভার পাশাপাশি তানোরের চৌবাড়িয়া হাট, গোল্লাপাড়া হাটেও চলছে কেনাবেচার ব্যস্ততা। ঈদের আগে মঙ্গলবার ও শুক্রবার তানোর গোল্লাপাড়ায় এবং শুক্রবার চৌবাড়িয়ায় বসছে ঈদের শেষ পশুর হাট। বিশেষ করে চৌবাড়িয়া হাটকে ঘিরে ব্যাপক প্রস্তুতি চলছে, কারণ এটিই তানোর অঞ্চলের সর্ববৃহৎ পশুর হাট। সার্বিক চিত্র দেশি গরুর দাপট, খামারিদের প্রত্যাশা পূরণ সব মিলিয়ে রাজশাহীর তানোরে এবারের কোরবানির পশুর হাটগুলোতে দেশি গরুই প্রধান ভরসা হয়ে উঠেছে। ভারতীয় গরুর অনুপস্থিতি, মাঝারি সাইজের গরুর চাহিদা এবং তুলনামূলক সাশ্রয়ী দামের কারণে খুশি খামারি ও ক্রেতারা। এতে যেমন দেশীয় খামারিরা লাভবান হচ্ছেন, তেমনি ক্রেতারাও পাচ্ছেন পছন্দের গরু যুক্তিসঙ্গত দামে। ঈদ যত ঘনিয়ে আসছে, ততই জমে উঠছে তানোরের পশুর হাটগুলো।

এই বিভাগের আরোও খবর

Logo