রাজশাহীর তানোর উপজেলার মুন্ডুমালায় এক আদিবাসী নারীকে ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগে খাইরুল ইসলাম (৪৫) নামের এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। বুধবার (১৪ মে) রাত ৯টার দিকে নিজ বাড়ি থেকে তাকে গ্রেফতার করে মুন্ডুমালা তদন্ত কেন্দ্রের পুলিশ। খাইরুল ইসলাম তানোর উপজেলার বাধাঁইড় ইউনিয়নের নারায়নপুর গ্রামের বাসিন্দা এবং একই ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ও বিএনপি নেতা কামরুজ্জামান হেনার ছোট ভাই। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, দীর্ঘদিন ধরে খাইরুল ইসলাম এক আদিবাসী নারীকে বিভিন্নভাবে কু-প্রস্তাব দিয়ে আসছিলেন। একইসঙ্গে নানা রকম প্রলোভনের মাধ্যমে ওই নারীকে প্রলুব্ধ করার চেষ্টা করছিলেন তিনি। গত মঙ্গলবার (১৩ মে) সন্ধ্যার দিকে একান্নপুর গ্রামে ঘটনার শিকার ওই নারীর বাড়ি ফাঁকা থাকার সুযোগে খাইরুল সেখানে প্রবেশ করে। তিনি জোরপূর্বক ওই নারীকে জাপটে ধরেন। এ সময় ভুক্তভোগী নারীর চিৎকারে আশপাশের প্রতিবেশীরা দ্রুত ঘটনাস্থলে ছুটে এসে তাকে উদ্ধার করেন।
পরে ভুক্তভোগী নারী বুধবার (১৪ মে) তানোর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগ পাওয়ার পরপরই মুন্ডুমালা তদন্ত কেন্দ্রের পুলিশ রাতেই অভিযান চালিয়ে খাইরুল ইসলামকে গ্রেফতার করে। অভিযোগ দায়েরের বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পর বিএনপি নেতা কামরুজ্জামান হেনা ও তার অনুসারীরা ভুক্তভোগী নারী ও তার পরিবারকে গ্রাম ছাড়ার হুমকি দিতে থাকেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এতে ভিকটিম পরিবার নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে বলে জানিয়েছে স্থানীয়রা।
তানোর থানার মুন্ডুমালা তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ কমলেশ চন্দ্র সাহা জানান, “ঘটনার প্রাথমিক তদন্তে ধর্ষণের ঘটনা ঘটেনি, তবে ধর্ষণের চেষ্টা হয়েছে বলে ভুক্তভোগীর অভিযোগ রয়েছে। সেই অভিযোগের ভিত্তিতেই খাইরুল ইসলামকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১৫ মে) তাকে আদালতে সোপর্দ করা হবে। ঘটনাটি প্রকাশ পাওয়ার পর আদিবাসী সম্প্রদায়ের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ ও আতঙ্ক বিরাজ করছে। তারা ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও দোষীর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছে। এ বিষয়ে স্থানীয় মানবাধিকার কর্মীরাও ঘটনাটি গভীর উদ্বেগের সঙ্গে পর্যবেক্ষণ করছেন। তারা বলেছেন, আদিবাসী নারীদের প্রতি সহিংসতা দিন দিন বাড়ছে এবং প্রশাসনকে আরও কঠোর ভূমিকা নিতে হবে। গ্রেফতারকৃত খাইরুল ইসলাম দীর্ঘদিন ধরে স্থানীয়ভাবে প্রভাবশালী হিসেবে পরিচিত। তার ভাই সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান হওয়ায় সাধারণ মানুষ অনেক সময় ন্যায়বিচার থেকে বঞ্চিত হন বলে অভিযোগ রয়েছে।