জামালপুরের সকল উপজেলার মত দেওয়ানগঞ্জ উপজেলাতেও চলতি মৌসুমে বোরো ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। তবে ধানের দাম এবং শ্রমিক সংকট নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন কৃষকরা। মাঠে ধান পেকে গেলেও শ্রমিক সংকটে ধান কাটতে হিমশিম খেতে হচ্ছে তাদের।উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, মাঠের প্রায় ৮০ শতাংশ ধান পেকে গেছে। বর্তমানে আবহাওয়া অনুকূলে থাকলেও ধান কাটা, মাড়াইয়ের শ্রমিকের চাহিদা বেড়েছে। যে কারণে প্রয়োজনীয় সংখ্যক শ্রমিক মিলছে না। শ্রমিক সংকটে ধান কাটা ব্যাহত হচ্ছে।জানা গেছে, বর্তমানে প্রতি মণ ধান বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার থেকে ১ হাজার ১০০ টাকায়। কিন্তু একজন শ্রমিকের দৈনিক মজুরি গুনতে হচ্ছে ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা, সঙ্গে দুই বেলার খাবার ও চাল দিতে হচ্ছে আলাদা করে। এতে ধান বিক্রির পর খরচ তুলেই হিমশিম খেতে হচ্ছে কৃষকদের। সার, বীজ, কীটনাশক, সেচ—সব মিলিয়ে উৎপাদন খরচ বেড়েই চলেছে। উপরন্তু প্রয়োজন অনুযায়ী শ্রমিক না পাওয়ায় অনেক কৃষক বাধ্য হয়ে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে ধান কাটার কাজ করছেন।বাহাদুরাবাদ ইউনিয়নের চর বাহাদুরাবাদ গ্রামের কৃষক গণি মিয়া জানান, 'আমার তিন বিঘা জমিতে ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। তবে এ বছর ধানের দাম নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছি। সার, সেচ, বীজ—সব খরচ ওঠাতে পারলেই নিজেকে লাভবান মনে করব।'চর আমখাওয়া ইউনিয়নের কৃষক আব্দুল আলী বলেন, ২ বিঘা জমিতে ধান চাষে খরচ হয়েছে ২০ হাজার টাকা। এখন ধান ঘরে তুলতে আরও ১০ হাজার টাকা শ্রমিক খরচ হবে। যদি ন্যায্য দাম না পাই, তাহলে লোকসানেই পড়তে হবে।দেওয়ানগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আলমগীর আজাদ বলেন, চলতি মৌসুমে বোরো ধান চাষে আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ধানের ফলন খুব ভালো হয়েছে। এবারের মৌসুমে ৭ হাজার ৮৭০ হেক্টর জমিতে বোরো ধান আবাদ হয়েছে এবং উৎপাদন হতে পারে প্রায় ৪৫ হাজার ৫০০ টন। ইতোমধ্যে ৫০ শতাংশ মাঠের ধান কাটা হয়েছে।তিনি বলেন, একযোগে ধান পেকে যাওয়ায় শ্রমিক সংকট দেখা দিয়েছে, তবে এই সংকট মোকাবিলায় উপজেলায় ৫টি কম্বাইন হারভেস্টার রয়েছে, যা দিয়ে কম শ্রমিকে দ্রুত ধান কাটা ও মাড়াই করা সম্ভব। কৃষকদের এই যন্ত্রের সহায়তা নেওয়ার আহ্বান জানান তিনি।