শারিরীক অবস্থা দেখে তাৎক্ষণিক লাভলী কে উন্নত চিকিৎসার জন্য অজ্ঞান অবস্থায় চট্টগ্রাম আগ্রাবাদের মা ও শিশু হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। চিকিৎসকের পরামর্শে সেখানে তাকে সিজারিয়ান অপারেশন করা হয়। লাভলীর ঘরে আসে ফুটফুটে কন্যাসন্তান। সন্তান জন্ম দিলেও সংজ্ঞাহীন অবস্থায় ছিলেন তিনি। নিজের মেয়েকে দেখার হুঁশ ছিল না। শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাকে ঐদিনই ও নবজাতককে আইসিইউতে ভর্তি করানো হয়। শুক্রবার (৭ জুন) সকাল ৯টা ৪০ মিনিটের দিকে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন তিনি। মেয়ের মুখ দেখার আগেই স্বজনদের কাঁদিয়ে পরপারে পাড়ি জমালেন লাভলী।
প্রচলন আছে নারীর জীবনে সবচেয়ে সুন্দর মুহূর্ত হলো, মাতৃত্বের স্বাদ পাওয়া। মা হওয়ার ঐশ্বরিক অনুভূতি নিতে একজন নারীকে বহু ধকল সামলাতে হয়। নাড়ী ছেঁড়া ধন, সন্তান দুনিয়ায় আসার পর নাকি নারীর সব কষ্ট কর্পূরের মতো উবে গিয়ে শান্তি হয়ে ফিরে আসে। সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী শাওরীন মোস্তফা লাভলী ছিলেন সন্তানসম্ভবা। গত মঙ্গলবার (৪জুন) তার নিয়মিত শারীরিক পরিক্ষা করতে যায় ডাঃ সুমির তত্বাবধানে, বেসরকারি এশিয়ান হাসপাতাল চকরিয়া থানা রাস্তার মাথায়। ঐদিন সন্ধ্যা হঠাৎ খিচুনি আসলে, ডাক্তার না এসে মোবাইলে পরামর্শ দে তার সহকর্মী কে। পরবর্তীতে ৫ জুন ভোর ৬ ঘটিকার সময় পূণরায় খিচুনি দেখা দিলে ও ডাক্তারকে জানানো হলে।তিনি চিকিৎসা দিতে কালক্ষেপণ করেন ১০টা পর্যন্ত অপেক্ষা করতে বলেন।
শারিরীক অবস্থা দেখে তাৎক্ষণিক লাভলী কে উন্নত চিকিৎসার জন্য অজ্ঞান অবস্থায় চট্টগ্রাম আগ্রাবাদের মা ও শিশু হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। চিকিৎসকের পরামর্শে সেখানে তাকে সিজারিয়ান অপারেশন করা হয়। লাভলীর ঘরে আসে ফুটফুটে কন্যাসন্তান। সন্তান জন্ম দিলেও সংজ্ঞাহীন অবস্থায় ছিলেন তিনি। নিজের মেয়েকে দেখার হুঁশ ছিল না। শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাকে ঐদিনই ও নবজাতককে আইসিইউতে ভর্তি করানো হয়। শুক্রবার (৭ জুন) সকাল ৯টা ৪০ মিনিটের দিকে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন তিনি। মেয়ের মুখ দেখার আগেই স্বজনদের কাঁদিয়ে পরপারে পাড়ি জমালেন লাভলী।
তার মৃত্যুতে শোকের আবহ সৃষ্টি হয়েছে গোটা চট্টগ্রামের আদালত পাড়া থেকে চকরিয়া জনপদে। দু'বছর আগে বিয়ের পিঁড়িতে বসা লাভলীর গ্রামে চলছে শোকের মাতম। অনেকে তার মৃত্যুতে শোক জানাচ্ছেন বিভিন্নভাবে। কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলা মাইজ কাকারার, অবসর প্রাপ্ত শিক্ষক বাদশা মিয়া ও অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষিকা মোতাহেরার পাঁচ ছেলেমেয়ের মধ্যে লাভলী একমাত্র মেয়ে। তিনি চট্টগ্রামের প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের ১৪তম ব্যাচের শিক্ষার্থী। তিনি সুপ্রিম কোর্ট ও চট্টগ্রাম বারের আইনজীবী ছিলেন।
লাভলীর ভাই এইচ.এম বাবলু হাসান বলেন, ‘আমার একমাত্র বোন আজ (শুক্রবার) সকাল ৯টা ৪০ মিনিটে চট্টগ্রাম মা ও শিশু হাসপাতালে ইন্তেকাল করেন। এশার নামাজের পর মাইজ কাকারা কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। আমার বোনের জন্য দোয়া করবেন। আল্লাহ আমার বোনকে জান্নাতের মেহমান হিসেবে কবুল করুন। বোন হারানো যে কত কষ্টের তা বোঝানো সম্ভব না।তিনি আরো বলেন চিকিৎসার নামে মুলত এশিয়ান হাসপাতাল একটি কসাই খানা।আমি প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষন করছি। তাদের বৈধতা আছে কিনা আর মিডউয়াফাই এর কাজ করলেতো আর ডাক্তার হওয়া যায় না।
নিজের মেয়েকে একবারের জন্য দেখতে পারল না, এর চেয়ে হৃদয়বিদারক আর কিছু হতে পারে না। জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি এস. এম সাদ্দাম হোসাইন বলেন বিশ্ববিদ্যালয়ে আইন বিভাগের সবচাইতে নম্র, ভদ্র,নিরহংকারী বন্ধু ছিল আমাদের। হাজার হাজার জনতার অংশগ্রহণ জানাজায় আসলে সবার কপালে জুটেনা। তাহার পরিবারের প্রতি সমবেদনা ও তাহার আত্মার মাগফেরাত কামনা করি।
কক্সবাজার জেলা পরিষদের সাবেক সদস্য আসমাউল হোসনা বলেন, ‘প্রিয় বান্ধবী আমাদের সবাইকে ছেড়ে চলে গেছে। এটা বলতে আকাশসম কষ্ট হচ্ছে, সে কথা কী করে বোঝাব। ওর মত জীবন গড়া বিদায় নেওয়া সবার সৌভাগ্য থাকেনা। কখনো ভাবিনি তার মৃত্যু সংবাদ এতো তাড়াতাড়ি দেখতে হবে কিংবা শুনতে হবে।