চট্টগ্রাম নগরীর ইসলামী ব্যাংকের চকবাজার শাখার লকার থেকে ১৫০ ভরি স্বর্ণালঙ্কার গায়েব হওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
চট্টগ্রাম নগরীর ইসলামী ব্যাংকের চকবাজার শাখার লকার থেকে ১৫০ ভরি স্বর্ণালঙ্কার গায়েব হওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
বিষয়টি ১ জুন শনিবার জানিয়েছেন লকারে রাখা স্বর্ণের মালিক নগরীর চট্টেশ্বরী সড়কের গোয়াছি বাগান এলাকার বিটিআই বেভারলী হিলসের বাসিন্দা রোকেয়া আকতার বারী।
তিনি বলেন ‘ব্যাংকের কর্মকর্তা-কর্মচারীরাই এসব স্বর্ণ সরিয়ে ফেলেছেন। লকার থেকে স্বর্ণ গায়েব হওয়ার পর চকবাজার থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করতে গেলে থানা পুলিশ রহস্যজনক কারণে তা নেয়নি। এখন এ ঘটনায় আদালতে মামলা করার প্রস্তুতি নিচ্ছি।’
লকার থেকে গায়েব হওয়া ১৫০ ভরি স্বর্ণালঙ্কারের মধ্যে রয়েছে ৪০ পিস হাতের চুড়ি (বড় সাইজ)। যার ওজন ৬০ ভরি। গলা ও কানের চার জোড়া অলঙ্কার। যার ওজন ২৫ ভরি। ১০ ভরি ওজনের একটি গলার চেইন। ২৮ ভরি ওজনের সাতটি চেইন। ১৫ ভরি ওজনের চারটি আংটি। ৩০ জোড়া কানের দুল। যার ওজন ১১ ভরি।
এ প্রসঙ্গে রোকেয়া আকতার বারীর ছেলে রিয়াদ মোহাম্মদ বলেন, ‘গত বুধবার দুপুর দেড়টার দিকে ইসলামী ব্যাংক চকবাজার শাখার লকারে গচ্ছিত রাখা কিছু স্বর্ণালঙ্কার আনতে যান আমার মা। লকারের দায়িত্বে থাকা ব্যাংক কর্মকর্তাকে সঙ্গে নিয়ে দেখেন লকারটি খোলা, সঙ্গে চাবি ঝুলছে। তখন স্বর্ণ গায়েব হওয়ার বিষয়টি জানতে পারেন। লকারে ১০-১১ ভরি স্বর্ণ রেখে বাকি ১৫০ ভরি সরিয়ে ফেলা হয়েছে। বিষয়টি সঙ্গে সঙ্গে ব্যাংকের কর্মকর্তাদের জানানো হয়।’
এরপর বিষয়টি ব্যাংকের কর্মকর্তারা চকবাজার থানা পুলিশকে মৌখিকভাবে জানান উল্লেখ করে রিয়াদ মোহাম্মদ মারজুক বলেন, ‘চকবাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ওয়ালী উদ্দিন আকবরসহ পুলিশ সদস্যরা ব্যাংকে গিয়ে কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলেন। ওই দিন বিকালে চকবাজার থানায় জিডি করতে গেলে ওসি ব্যস্ত আছেন বলে তা গ্রহণ করেননি। এরই মধ্যে আমরা আইনজীবীর সঙ্গে কথা বলেছি। তারা আদালতে মামলা করার পরামর্শ দিয়েছেন। আগামী সোমবার আদালতে মামলা করবো।’
রোকেয়া আকতার বলেন, ‘গত ১৬-১৭ বছর ধরে চকবাজারের ইসলামী ব্যাংকের একটি লকার ব্যবহার করছি। পাশাপাশি আমার নামে একটি অ্যাকাউন্টও রয়েছে এই ব্যাংকে। এর আগে কখনও এ ধরনের ঘটনা ঘটেনি। গত বুধবার দুপুর দেড়টার দিকে কিছু স্বর্ণ লকার থেকে আনতে গিয়ে দেখি, স্বর্ণালঙ্কার গায়েব হয়েছে। ব্যাংকের কর্মকর্তা-কর্মচারীরাই এসব স্বর্ণ সরিয়ে ফেলেছেন বলে আমি ধারণা করছি।’
এ ব্যাপারে জানতে ইসলামী ব্যাংকের চকবাজার শাখার ম্যানেজার শফিকুল মওলাকে একাধিকবার কল দিলেও রিসিভ করেননি। হোয়াটসঅ্যাপে এসএমএস পাঠিয়ে এ বিষয়ে জানতে চাইলেও কোনও সদুত্তর দেননি।
চকবাজার থানার ওসি ওয়ালী উদ্দিন আকবরের কাছে জানতে চায়লে তিনি বলেন, ‘ইসলামী ব্যাংকের চকবাজার শাখার লকার থেকে ১৫০ ভরি স্বর্ণালঙ্কার গায়েবের বিষয়টি ২৯ মে আমাকে মৌখিকভাবে জানিয়েছিলেন স্বর্ণের মালিক। আমি ব্যাংকে গিয়ে খোঁজখবর নিয়েছি। তবে এখন পর্যন্ত ব্যাংকের লোকজন কিংবা ভুক্তভোগী থানায় মামলা করতে আসেননি। এমনকি এ ব্যাপারে লিখিত কোনও অভিযোগ দেননি তারা।