চট্টগ্রামের গ্লোবাল নলেজ প্রতিষ্ঠানের আড়ালে মানব ও অর্থ পাচার, নেই কোনো বৈধ কাগজ

মোঃ ইসমাইল ইমন প্রকাশিত: ২৬ মে , ২০২৪ ০৭:৪৭ আপডেট: ২৬ মে , ২০২৪ ০৭:৪৭ এএম
চট্টগ্রামের গ্লোবাল নলেজ প্রতিষ্ঠানের আড়ালে মানব ও অর্থ পাচার, নেই কোনো বৈধ কাগজ
চট্টগ্রামে গ্লোবাল নলেজ নামে প্রতিষ্ঠান খুলে স্বত্বাধিকারী শাহীন টিটু দীর্ঘদিন যাবত ইউরোপের বিভিন্ন দেশ ও মধ্যপ্রাচ্যে শ্রমিক ও ছাত্র পাঠানোর নামে মানব ও অর্থ পাচার করে আসলেও তার নেই কোনো বৈধ কাগজপত্র। শাহীন টিটুর মানব ও অর্থ পাচার নিয়ে গত ১৯শে মে ২০২৪ ইংরেজি তারিখে দৈনিক গণকন্ঠ পত্রিকায় “গ্লোবাল নলেজ প্রতিষ্ঠানের আড়ালে ইউরোপের দেশগুলোতে ছাত্র ও শ্রমিক পাঠানোর নামে চলছে মানব ও অর্থ পাচার” শিরোনামে একটি সংবাদ প্রকাশিত হয়। সংবাদ প্রকাশের পর থেকে গ্লোবাল নলেজ প্রতিষ্ঠানের মালিক শাহীন টিটুর বিরুদ্ধে একের পর এক লোমহর্ষক অভিযোগ বেড়িয়ে আসতে থাকে, ফলে অনুসন্ধান অব্যাহত থাকে। অনুসন্ধানে বেরিয়ে এসেছে লোমহর্ষক অনেক তথ্য।

চট্টগ্রামে গ্লোবাল নলেজ নামে প্রতিষ্ঠান খুলে স্বত্বাধিকারী শাহীন টিটু দীর্ঘদিন যাবত ইউরোপের বিভিন্ন দেশ ও মধ্যপ্রাচ্যে শ্রমিক ও ছাত্র পাঠানোর নামে মানব ও অর্থ পাচার করে আসলেও তার নেই কোনো বৈধ কাগজপত্র। শাহীন টিটুর মানব ও অর্থ পাচার নিয়ে গত ১৯শে মে ২০২৪ ইংরেজি তারিখে দৈনিক গণকন্ঠ পত্রিকায় “গ্লোবাল নলেজ প্রতিষ্ঠানের আড়ালে ইউরোপের দেশগুলোতে ছাত্র ও শ্রমিক পাঠানোর নামে চলছে মানব ও অর্থ পাচার” শিরোনামে একটি সংবাদ প্রকাশিত হয়। সংবাদ প্রকাশের পর থেকে গ্লোবাল নলেজ প্রতিষ্ঠানের মালিক শাহীন টিটুর বিরুদ্ধে একের পর এক লোমহর্ষক অভিযোগ বেড়িয়ে আসতে থাকে, ফলে অনুসন্ধান অব্যাহত থাকে। অনুসন্ধানে বেরিয়ে এসেছে লোমহর্ষক অনেক তথ্য।

শাহীন টিটু ফটিকছড়ির নিন্মবিত্ত পরিবারে বেড়ে উঠা ধূর্ত ও চতুর প্রকৃতির লোক। আর্থিক অনটনে বড় হয়ে বিগত ১৫/২০ বছর আগে বেছে নেন মানব পাচারের ব্যবসা। “গ্লোবাল নলেজ” নাম দিয়ে ট্রেড লাইসেন্স নিয়ে বসে যান নগরীর চকবাজার এলাকায়। টার্গেট ছাত্র। চট্টগ্রামের চকবাজার এলাকাটি একটি ছাত্র অধ্যুষিত এলাকা, এখানে চট্টগ্রাম কলেজ, সরকারি মহসিন কলেজ, কাজেম আলী কলেজসহ কয়েকটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস অবস্থিত। এছাড়া উন্নতমানের ডজনখানেক কোচিং সেন্টার চকবাজার ও তার আশপাশ এলাকায়। দূর্ত শাহীন টিটু চকবাজার এলাকায় “গ্লোবাল নলেজ” সাইনবোর্ড দিয়ে শুরু করেন আদম ব্যবসা। একাধিক ফেইজে চটকদার বিজ্ঞাপন ও পোস্টারিং করে শুরু করেন প্রচারণা। জমে উঠে মানব পাচার ব্যবসা, সাথে শুরু করেন অবৈধ হুন্ডি ব্যবসাও।

বনেজান কোটিপতি, শুরু করেন অর্থ পাচার। শাহীন টিটুর ইমরান নামের এক ভাই থাকেন ইউরোপের পোলাণ্ড রাষ্ট্রে এবং শ্বশুর বাড়ি লোকজন দুবাই থাকার সুবাদে জমজমাট হয় অবৈধ হুন্ডি ব্যবসা। দারুণ সুবিধা পায় অর্থ পাচারেও। বর্তমানে দুবাইতে শাহীন টিটুর শ্বশুরের মাধ্যমে অনেক সম্পদ ক্রয় করার গুঞ্জন রয়েছে ফটিকছড়ি জুড়ে। বিস্তারিত অনুসন্ধান শেষে প্রকাশ করা হবে। চকবাজার এলাকায় তার টার্গেট পূরণের পর কিছুদিন চলে যায় আত্মগোপনে। পরে বেরিয়ে এসে আত্মপ্রকাশ করেন নগরীর মুরাদপুরে গ্লোবাল নলেজ এর অফিস। সেখান থেকে গিয়ে নগরীর জি, ই, সি মোড়ে গড়ে তুলেছেন গ্লোবাল নলেজ নামের নতুন প্রতারণার ফাঁদ । খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বিদেশে শ্রমিক ও ছাত্র পাঠানোর কোন বৈধ কাগজ পত্র নেই শাহীন টিটুর। আছে শুধু একটি ট্রেড লাইসেন্স। 

একাধিক ট্রাভেল এজেন্সির মালিকের সাথে কথা বলে জানাগেছে, বিদেশে শ্রমিক পাঠানোর কাজ করতে হলে ১ম সিভিল এভ্যিয়েশন ও ট্যুরিজম মন্ত্রণালয়ের লাইসেন্স, ২য় পররাষ্ট্র ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন, ছাত্রের বেলায় শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ছাড়পত্র ও ৩য় সংশ্লিষ্ট দেশের অ্যাম্বাসি ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সাথে চুক্তিপত্র ৪র্থ এসোসিয়েশন অব ট্রাভেলস এজেন্সি(আটাব) এর সদস্য পদ গ্রহণ।

(আটাব) এর সদস্য না হলে কোন লাইসেন্স নবায়ন হবেনা এমনটি জানিয়েছেন এক (আটাব) নেতা।
উল্লেখিত বৈধ কাগজপত্রের একটিও তার নেই এমনই জানিয়েছেন গ্লোবাল নলেজ প্রতিষ্ঠানের সাবেক একজন কর্মচারি।
  তিনি তার নাম প্রকাশ না করার শর্তে আরো পিলেচমকানো তথ্য দেন যার সত্যতা যাচাই করে আগামীতে প্রকাশিত হবে৷ 
শাহীন টিটুর “গ্লোবাল নলেজ” নামীয় প্রতিষ্ঠানের সিভিল অ্যাভিয়েশন লাইসেন্স রিক্রুটিং লাইসেন্স সংশ্লিষ্ট দেশ ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সাথে চুক্তিপত্র ও (আটাব) এর সদস্যপদ সব বিষয়ে সত্যতা জানতে ফোন করি শাহীন টিটুর মুঠোফোনে। বারবার ফোন করার পরেও তিনি ফোন রিসিভ না করায় তার মোবাইল ম্যাসেঞ্জার ও হোয়াটসঅ্যাপে ক্ষুদেবার্তা পাঠিয়েও তার কোন মতামত বা বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
 
বর্তমানে তার জিইসি মোড়ের অফিস বন্ধ রয়েছে। এমন তথ্যের ভিত্তিতে সরে জমিনে পরপর তিনদিন গিয়ে তার অফিস বন্ধের সত্যতা মিলে। আশেপাশের লোকজন জানান সেদিন বেশ কিছু লোকজন “গ্লোবাল নলেজ” অফিসে এসে হট্টগোল করলে থানা পুলিশ প্রতারিত হওয়া বিক্ষুব্ধ ভুক্তভোগীদের নিবৃত্ত করেন। এরপর থেকে অফিস বন্ধ রয়েছে। তার অফিস সূত্রে জানা গেছে শাহীন টিটু বেশিরভাগ অর্থ পাচার করেছেন পোল্যান্ড ও দুবাইতে। তার পাচারকৃত বেশির ভাগ টাকা পাঠিয়েছে হুন্ডিতে। এছাড়া নারী পাচার ও স্বর্ণ পাচারের সাথেও তার সম্পৃক্ততা রয়েছে এমন একটি তথ্য জানিয়েছে সূত্রটি। তার নারী পাচার ও স্বর্ণ পাচারের বিষয়ে অনুসন্ধান চলমান রয়েছে।

এই বিভাগের আরোও খবর

Logo