৫ই মে ২০২৫, জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) গংগাচড়া উপজেলা শাখার আয়োজনে গংগাচড়া উপজেলা হলরুমে “নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত, গণপরিষদ নির্বাচন, নতুন সংবিধান প্রণয়ন এবং জাতীয় নির্বাচনের আগে মৌলিক সংস্কার করে ইনসাফভিত্তিক রাষ্ট্র গঠনের” লক্ষ্যে এক মতবিনিময় ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
এসময় গংগাচড়া উপজেলা শাখার ৯ ইউনিয়নের প্রায় ২০০ জন সংগঠকবৃন্দ অংশগ্রহন করেন।পবিত্র কুরআন তিলাওয়াত এর মাধ্যমে অনুষ্ঠানের আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হয়।
এরপর সভাপতির শুভেচ্ছা বক্তব্যে জেলা সংগঠক ইন্জিনিয়ার শেখ রেজোয়ান বিপ্লবের মধ্য দিয়ে যে পরিবেশ তৈরি হয়েছে,বিপ্লব কে ধারন করে তার সদ্ব্যবহার এর জন্য সবাইকে সর্বোচ্চ প্রস্তুতি নিতে বলেন।
এরপর ধারাবাহিক ভাবে উপজেলা সংগঠক বৃন্দ, জেলা সংগঠক বৃন্দ, কেন্দ্রীয় দায়িত্বশীল বৃন্দ বক্তব্য পেশ করেন।
উপজেলা সংগঠকদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন মোঃ আ.বারি, মোঃ মাসুদ রানা তৈয়ব, মোঃ জাহানুর রহমান, মোঃ শাহিনুর রহমান, মোঃ রিফাত চৌধুরি।
সংগঠকবৃন্দ নিজেদের পরিচিতি পেশ করেন।
এসময় রিফাত চৌধুরী বলেন " বিপ্লব কে ধারন করেন যারা, তাদের আর বিচ্ছিন্ন হওয়ার সুযোগ নেই।জুলাই এর রক্তের দায় রাত দিন আমাদের তাড়া করে বেড়ায়।শহীদ দের আকাঙ্ক্ষা কে ধারন করে গ্রামে গন্জে, পাড়ায় পাড়ায় ncp কে পৌছে যেতে হবে।
নেতৃবৃন্দের দৃষ্টি আকর্ষণ করে তিনি বলেন, কমিটি গঠনের সময় যারা সংগঠনকে ধারন করে,বিপ্লব কে ধারন করে দিন- রাত একাকার করে কাজ করছে তাদের কে যথাযথ মুল্যায়নের আহ্বান জানান"
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের উপজেলা সংগঠক শাহজালাল শ্রাবণ তার বক্তব্যে বলেন, রক্তের মধ্য দিয়ে যে নতুন বাংলাদেশ, এর জন্য আমাদের তার দায় পরিষদের জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে। অবিলম্বে জুলাই কে রাষ্ট্রীয়ভাবে স্বীকৃতি দিতে হবে।জুলাই সনদ ঘোষণা করতে হবে।আওয়ামিলীগ কে নিষিদ্ধ ঘোষণা করতে হবে।আমাদের ভাইদের ওপর হামলাকারীদের চিহ্নিত করে কঠোর শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।
এসময় বিশেষ অতিথি হিসেব৷ বক্তব্য রাখেন জেলা সংগঠক এম আলমগীর কবির।
তিনি বলেন "বিপ্লব কে অর্থহীন করার জন্য যাদের প্রচেষ্টা, সেই স্বৈরাচার আর তাদের দোসরদের চূড়ান্তভাবে পরাজিত করা হবে ইনশাআল্লাহ। গংগাচড়ার মাটিতে আওয়ামীলীগ আর জাতীয় পার্টির দোসরদের যে আতুরঘর, জুলাই বিপ্লবকে যারা ধারন করেন তাদের নেতৃত্বে, ncp এর নেতৃত্বে তা ভেঙে খান খান করে দেয়া হবে।
তিনি সকলকে একতাবদ্ধ হয়ে সক্রিয়ভাবে একতাবদ্ধ থেকে কাজ করার আহ্বান করেন।
প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় যুগ্ম মুখ্য সংগঠক জনাব আসাদুল্লাহ আল গালিব।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি গনপরিষদ নির্বাচনের যৌক্তিকতা, মৌলিক সংস্কারের রুপরেখা, ইনসাফভিত্তিক রাষ্ট্র গঠনের নিমিত্তে নির্মোহ আলোচনা করেন।
জুলাই এর দাবি হিসেবে অবিলম্বে দৃশ্যমান বিচার কার্যক্রম করার আহ্বান জানান।সংগঠকবৃন্দকে গ্রামে- গন্জে, পাড়ায় পাড়ায় জুলাই কে কেন্দ্র করে জনমত গঠনের আহ্বান জানান।
এসময় প্রধান আলোচকের বক্তব্য পেশ করেন যুগ্ম মুখ্য সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) সাদিয়া ফারজানা দিনা।
এসময় তিনি জুলাই কে যারা ইনিয়ে বিনিয়ে ভুলিয়ে দিতে চান তাদেরকে সতর্ক করে বলেন, জুলাই এসেছে পিলখানা,শাপলার শত শত শহীদ দের রক্তের মধ্য দিয়ে। এর মধ্য দিয়ে একটা রেজিম চেন্জ হয়নি, বরং রক্তপিপাসু স্বৈরাচারের পতন ঘটেছে।নারীদের সম অধিকার নিশ্চিত,নতুন সংবিধান প্রণয়নের গুরুত্ব, মৌলিক সংস্কার ও দৃশ্যমান বিচার কার্যক্রমের যৌক্তিকতা তুলে ধরে আওয়ামীলীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ ও নিবন্ধন বাতিলের দাবি জানান।
অনুষ্ঠানের সঞ্চালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন নাগরিক পার্টির অন্যতম উপজেলা সংগঠক মোঃ জীবন মিয়া এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন এর প্রতিনিধি আব্দুল্লাহ আল আরমান।
সমাপনী বক্তব্যে সভাপতি হিসেবে ইন্জিনিয়ার শেখ রেজোয়ান অনুষ্ঠানের শেষ পর্যন্ত ধৈর্যের সহিত অবস্থানের জন্য সকলকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন।জুলাই,পিলখানা, শাপলা গনহত্যার বিচারের দাবিতে সকলকে সক্রিয় থাকার আহ্বান জানান।আওয়ামীলীগ নিষিদ্ধের দাবিতে জনমত গঠন সঙ্গে থাকার আহ্বান জানান।সাংবাদিক,আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারীবাহিনীর সদস্যদের ধ্যনবাদ জানিয়ে প্রোগামের সমাপ্তি ঘোষণা করেন।
বিক্ষোভ মিছিল,
মতবিনিময় ও আলোচনা সভা শেষে জেলা ও কেন্দ্রের নেতৃবৃন্দের উপস্থিতিতে জাতীয় নাগরিক পার্টির দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক,জুলাই বিপ্লবের অন্যতম নেতা হাসনাত আব্দুল্লাহ' র উপর নেক্কারজনক হামলা ও ৫ই মে শাপলা গনহত্যার প্রতিবাদে জাতীয় নাগরিক পার্টি এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের যৌথ উদ্দোগে বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়।
বিক্ষোভ মিছিলটি উপজেলা পরিষদ গেট থেকে ডাক বাংলো মোড় পর্যন্ত প্রদক্ষিণ করে জিরো পয়েন্টে এনসিপির গংগাচড়া উপজেলা সংগঠক রিফাত চৌধুরীর বক্তব্যের মধ্য দিয়ে শেষ হয়।