যশোরের অভয়নগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে মিলছে না বিনা মূল্যে জলাতঙ্ক (র্যাবিস ভ্যাকসিন) রোগের টিকা। গত শনিবার (৯ আগস্ট) মজুদ শেষ হওয়ায় টিকাদান বন্ধ রয়েছে হাসপাতালটিতে।
হাসপাতাল সূত্র জানায়, জলাতঙ্ক রোগের টিকা বা ভ্যাকসিনের মজুদ শেষ হওয়ার আগেই সরবরাহ করা প্রয়োজন ছিল। পর্যাপ্ত মজুদ না থাকায় দরিদ্র ও নিম্ন আয়ের মানুষ এই মরণব্যাধিতে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
এদিকে, চড়া মূল্যে ফার্মেসি থেকে টিকা ও সিরিঞ্জ কিনতে হচ্ছে রোগীদের। যে কারণে বিপাকে পড়ছেন আক্রান্ত অনেকেই।
সরেজমিন সোমবার (১১ আগস্ট) সকালে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে দেখা যায়, কুকুর ও বিড়ালের কামড়-আঁচড়ের শিকার কয়েকজন জরুরি বিভাগে বসে রয়েছেন। টিকা না থাকায় দুশ্চিন্তায় রয়েছেন তারা।
দায়িত্বরত স্বাস্থ্যকর্মীর টেবিলে থাকা নোটিশে লেখা, ‘জলাতঙ্ক (র্যাবিস ভ্যাকসিন) রোগের টিকা সরবরাহ সাময়িক বন্ধ থাকায় দুঃখিত। আক্রান্ত রোগীদের নিজ দায়িত্বে টিকা কেনার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে’। সেই নোটিশ দেখিয়ে বাইরে থেকে টিকা কেনার পরামর্শ দিচ্ছেন স্বাস্থ্যকর্মীরা। এ জন্য চারজন রোগীকে একত্রিত হয়ে এক ভাওয়েল ভ্যাকসিন কিনতে হচ্ছে।অনেকের কাছে টাকা না থাকায় টিকা না দিয়ে ফিরে যাচ্ছেন বাসায়।
কুকুরের কামড়ের শিকার উপজেলার ধোপাদী গ্রামের সাত বছর বয়সী সোহানের বাবা মেহেদী ইসলাম বলেন, ‘বাড়ির সামনে খেলা করার সময় ছেলেকে কুকুরে কামড়ায়। দ্রুত উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে এলে জানতে পারি টিকা শেষ হয়ে গেছে। আরো তিনজন রোগীর অপেক্ষায় জরুরি বিভাগে বসে আছি।’
গুয়াখেলা গ্রামের মীর আলী সরদার (৪০) বলেন, ‘বাড়ির পোষা বিড়াল কামড় ও আঁচড় দিয়েছে।
ভ্যাকসিন নিতে এসে শুনি তা শেষ হয়ে গেছে। এক ঘণ্টা অপেক্ষার পর চারজন রোগী হয়েছে। হাসপাতালের সামনে একটি ফার্মেসি থেকে ৪৬০ টাকায় এক ভাওয়েল টিকা কিনেছি। চারটি সিরিঞ্জও কিনতে হয়েছে। তিনি বলেন, ‘চারজন রোগীকে প্রথম ডোজ দেওয়া হয়েছে। অসচ্ছল পরিবারের জন্য এই টিকা ও সিরিঞ্জ কেনা কষ্টের ব্যাপার। দুঃখের বিষয় সরকারি হাসপাতালে জলাতঙ্কের টিকা নেই।’
অভয়নগর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আলীমুর রাজিব বলেন, ‘২০২৪-২৫ অর্থবছরে উপজেলা পরিষদ থেকে ৬৪০ ভাওয়েল (পিস) ভ্যাকসিন পেয়েছিলাম। এক ভাওয়েল ভেঙে চারজন রোগীকে টিকা দেওয়া হয়েছে। একজন রোগীকে তিনবার টিকা দিতে হয়। টিকা শেষ হওয়ায় আক্রান্ত অনেক রোগী ফিরে যাচ্ছেন। বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে জানানো হয়েছে।’
এ ব্যাপারে অভয়নগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পার্থ প্রতিম শীল এপ্রতিবে বলেন, ‘জলাতঙ্কের টিকা (র্যাবিস) শেষ হওয়ার খবর পেয়েছি। নতুন করে টিকা কেনার প্রক্রিয়া চলছে।’