শেরপুর নকলায় জীবিতকে ‘মৃত’ দেখিয়ে অন্যের নামে যাচ্ছে বিধবা ভাতা

নাম :রেজাউল হাসান প্রকাশিত: ১০ জুলাই , ২০২৪ ১৭:২৩ আপডেট: ১০ জুলাই , ২০২৪ ১৭:২৩ পিএম
শেরপুর নকলায় জীবিতকে ‘মৃত’ দেখিয়ে অন্যের নামে যাচ্ছে বিধবা ভাতা
এদিকে মৃত ছুফেতুল্লার স্ত্রী এর নাম পরিবর্তন করে মাহমুদা বেগম নামে আরেকজনের নামে সেই ভাতা দেওয়া হচ্ছে বলে জানা যায়। উপজেলার ৬নং পাঠাকাটা ইউনিয়নের জাঙ্গীরাড় পাড় গ্রামে এ ঘটনাটি ঘটেছে।জানা যায়, প্রায় ২০ বছর আগে মোছাঃ রাবেয়া এর স্বামী ছুফেতুল্লাহ মারা যান।

শেরপুরের নকলা উপজেলার মৃত ছুফেতুল্লার স্ত্রী  রাবেয়া বেগম (৮০) নামে এক বৃদ্ধাকে ‘মৃত’ দেখিয়ে তার বিধবা ভাতার কার্ড বাতিল করা হয়েছে। গত ছয় মাসের বেশী সময় ধরে তিনি বিধবা ভাতা পাচ্ছেন না।

এদিকে মৃত ছুফেতুল্লার স্ত্রী এর নাম পরিবর্তন করে মাহমুদা বেগম  নামে আরেকজনের নামে সেই ভাতা দেওয়া হচ্ছে বলে জানা যায়। উপজেলার ৬নং পাঠাকাটা  ইউনিয়নের জাঙ্গীরাড় পাড় গ্রামে এ ঘটনাটি ঘটেছে।জানা যায়, প্রায় ২০ বছর আগে  মোছাঃ রাবেয়া এর স্বামী ছুফেতুল্লাহ  মারা যান।

এরপর থেকে তিনি সন্তান ও স্বজনদের সহযোগিতায় কোনোমতে জীবন যাপন করছেন।  বিধবা ভাতা চালু হলে তিনি সেই তালিকায় যুক্ত হন।এরপর তিন মাস অন্তর অন্তর তিনি নিয়মিত ভাতা পেয়ে যাচ্ছেন। তবে ২০-১২-২০২৩ সালের ডিসেম্বর মাস থেকে  তার মোবাইলে ভাতা মেসেজ আসা বন্ধ হয়ে যায়। কেন এমনটি হয়েছে তা তিনি জানতে পারেননি। এ অবস্থায় তার বড় ছেলে মোঃ নজরুল ইসলাম বই নিয়ে স্থানীয়  ইউপি সদস্য মোঃ বাজু মিয়ার  কাছে বিষয়টি জানালে তিনি বলেন তুমি যাও বিষয়টি আমি চেয়ারম্যানের সাথে পরামর্শ করে দেখবো,  কিন্তু আর দেখা হয়নি।

পরে উপজেলা সমাজ সেবা অফিসে গেলে জানতে পারেন, প্রায় ছয় মাস  আগে উপকারভোগি মৃত ছুফেতুল্লার স্ত্রী মারা গেছেন।কিছুদিন পর  তিনি সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার কাছে  মাকে নিয়ে যান, এবং তিনি যে মারা যাননি তা প্রমাণের চেষ্টা করেন। এভাবে ছয় মাস  পার হলেও কোনো কাজ হয়নি। তারপর  ইউপি চেয়ারম্যানের কাছে  বলা হয়,  ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুছ সালাম বলেন এরকম ছোট খাটো ভুল হতেই পারে  এখন অপেক্ষা করা ছাড়া উপায় নেই।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে মৃত ছুফেতুল্লার স্ত্রী, প্রতিনিধিকে বলেন,‘আমি কেমনে  মরলাম,তা এইডা মেম্বর চেয়ারম্যান   কবার পাবো, আমার চাইড ডা  পুলা ওরা কয়ডা টেহা কামাই কইরা ওরাই চলবার পাইনা, আর আমি বুড়া মানুষ, আমার জামাই মইরা গেছে মেলাদিন আগে, আমিও কামাই করতে পারিনা,সরকারি এই কয়ডা টেহা দিয়া কোনো মতে চলছিলাম। অহন টেহা না পাইয়া অ্যা হে চালায়। আমারে জেতা (জীবিত) কইর‌্যা একটা ব্যবস্থা কইর‌্যা দেইন আইন্নেরা, অসুখ-বিসুখ অইলে ওষুধ খাঅনের টেহা নাই।’ 

ওই বৃদ্ধার বিধবা ভাতা দেওয়ার একটি বইয়ের বই নং-১১৬৩ ফটোকপি নিয়ে নকলা  উপজেলা সমাজ সেবা কার্যালয়ে গিয়ে অনলাইন সার্চ করে দেখা যায়, ২০২৩সালের ২০ ডিসেম্বর মৃত ছুফেতুল্লার স্ত্রীকে  মৃত দেখিয়ে তার ভাতা পাশের গ্রামের মোছাঃ মাহমুদা বেগমের  নামে প্রতিস্থাপন করা হয়। এরপর থেকে মাহমুদা বেগম  বিধবা ভাতা পাচ্ছেন। 

এ বিষয়ে ৫ নং ওয়ার্ডের মেম্বার মোঃ বাজু মিয়ার কাছে জানতে চাইলে তিনি নানাভাবে বুজানোর চেষ্টা করেন। এ বিষয়ে  উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মোঃ আলমগীর হোসেন  বলেন, যে ইউনিয়ন পরিষদের তথ্যমতে আমরা কার্যক্রম করে থাকি,তবে  ‘বিষয়টি খুবই দুঃখজনক। এ বিষয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। যেন আগের বৃদ্ধা তাঁর প্রাপ্য দ্রুততর সময়ে ফেরত পান।


এই বিভাগের আরোও খবর

Logo