শালিখাতে বন্যাত্তর কৃষকরা ঘুরেদাড়াতে চেষ্টা করছে

তারিকুল ইসলাম প্রকাশিত: ৬ সেপ্টেম্বর , ২০২৫ ১৭:৩৬ আপডেট: ৬ সেপ্টেম্বর , ২০২৫ ১৭:৩৬ পিএম
শালিখাতে বন্যাত্তর কৃষকরা ঘুরেদাড়াতে চেষ্টা করছে

অতি বৃষ্টির এবং উজান থেকে নেমে আসা পানিতে সৃষ্ট বন্যায় শলিখা উপজেলার আমন আবাদের অধিকাংশ জমির ফসল নষ্ট হয়েছে। যার কারনে কৃষকরা ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন।
তলিয়ে যাওয়া ফসল রক্ষা করতে উপজেলার বিভিন্ন এলাকার কৃষকেরা নিজ উদ্যোগ ও অর্থায়নে পানি অপসারণ পুর্বক ফসল বাঁচানোর চেষ্টাও করেছিলেন অনেকে। অনেকে আবার তৈরি করেছিলেন আপদকালীন বীজতলা। তাই এসব এলাকার মাঠ থেকে বন্যার পানি সরে যাওয়ায় কৃষকেরা তাদের খরচ বাচাতে আবারো আমন ধান রোপনে ব্যস্তসময় পার করছেন।
চসরেজমিনে বিভিন্ন মাঠ ঘুরে দেখা যায়, বন্যার ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে আমন ধান রোপনে ব্যস্ত সময় পার করছেন চাষিরা। কেউ বীজতলা প্রস্তুত করছেন, কেউ ধানের চারা রোপন করতে মাঠ প্রস্তুত করছেন, দেখে মনে হচ্ছে দম ফেলার সময় নেই তাদের।
উপজেলা সদর আড়পাড়া ইউনিয়নের দিঘী গ্রামের রতন বিশ্বাস বলেন, এবার ৮ বিঘা জমিতে ধান লাগিয়া ছিলাম যার পুরোটাই তলিয়ে গিছিল। এখন পানি সরে গেছে তবে চারাগুলো সব মরে গেছে। তাই বিভিন্ন এলাকা থেকে চারা ক্রয় করে লাগানো শুরু করেছি যাতে করে খরচটা অন্তত উঠানো যায় ।
তালখড়ি ইউনিয়নের ছান্দড়া গ্রামের কৃষক ফিরোজ মোল্লা বলেন, ৪ বীঘা জমিতে ধান লাগিয়ে ছিলাম যার তিন বিঘা পানিতে তলিয়ে গিয়েছিল সেখানে আবার নতুন করে চাষাবাদ শুরু করেছি। ফসলের দাম ভালো পেলে খরচ উঠানো সম্ভব হবে।
উপজেলা কৃষি অফিস সুত্রে জানা গেছে, বন্যার পানিতে তলিয়ে যাওয়া ৯০ শতাংশেরও বেশি জমি থেকে বন্যার পানি সরে গেছে। এখন কৃষকরা পুনরায় চাষাবাদ শুরু করেছেন।
ইতোমধ্যে উপজেলা কৃষি অফিসের পক্ষ থেকে অর্ধ শতাধিক কৃষকের মাঝে আপদকালীন বীজতলা তৈরির জন্য মোট ২৮০ কেজি ধান বীজ প্রদান করা হয়েছে এবং বাংলাদেশ নিউক্লিয়ার কৃষি ইনিস্টিউটের (বিনা) পরিচালক মহোদয়ের নিকট হতে প্রাপ্ত ২০০০ কেজি আমন বীজ সহায়তা  ৪০০ জন কৃষককে প্রদানের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
এছাড়াও উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ৬৫ জন ক্ষতিগ্রস্ত সবজি চাষীদের ১০ কেজি চাল, ১ কেজি তেল, ১ কেজি মসুর ডালসহ শুকনা খাবার প্রদান করা হয়েছে। পাশাপাশি উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রকল্প গ্রহন করে আমনধানের আপদকালীন বীজতলা তৈরির জন্য ১৮৫ জন কৃষককে ৫ কেজি করে ধান বীজ ও পলিথিন প্রদান করা হয়েছে। 
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ আবুল হাসনাত বলেন, উজান থেকে আশা ফটকি নদীর পানি মাঠে ঢুকে পড়ে উপজেলার ৮৯৭ হেক্টর জমির ধান পুরোপুরি পানিতে নিমজ্জিত হয়। দীর্ঘদিন পানির নিচে থাকার ফলে রোপনকৃত ধানের চারাগুলো নষ্ট হয়ে যায়। বর্তমানে পানি দ্রুত নামতে শুরু করায় এবং এখনো আমন ধানের চারা রোপণের সময় থাকায় কৃষকগনের চাহিদা বিবেচনা করে যেই স্থানে প্রয়োজনের অতিরিক্ত চারা আছে সেখান থেকে চাষীদের আমন ধানের চারা প্রদানের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। পাশাপাশি উপজেলা কৃষি অফিস ও উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের মাঝে ধানের চারা, বীজ, শুকনো খাবার ও প্রণোদনার নগদ অর্থ প্রদান করা হয়েছে। এছাড়াও উপজেলার সকল ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের একটি তালিকা হয়েচে যাদেরকে ধারাবাহিকভাবে সহযোগিতার আওতায় আনা হবে বলে জানান তিনি।

এই বিভাগের আরোও খবর

Logo