সেন্ট মার্টিন "" বাংলাদেশের একমাত্র প্রবাল দ্বীপ। সারি সারি নারকেলের গাছ ও প্রাকৃতিকগতভাবে বিভিন্ন সৌন্দর্য এবং নয়নাভিরাম প্রবাল দ্বারা বেষ্টিত এই দ্বীপ । সেন্টমার্টিন কে স্থানীয়রা নারিকেল জিঞ্জিরা নামে ও ডাকে/ চিনে।
দেশী ও বিদেশী পর্যটকদের কাছে ভ্রমণ ও অবকাশ যাপনের জন্য আকর্ষণীয় ও লোভনীয় এই দ্বীপ। কক্সবাজার জেলার অন্তর্গত টেকনাফ উপজেলার একটি ইউনিয় সেন্ট মার্টিন। টেকনাফ থেকে ৯ কিলোমিটার ও মিয়ানমার থেকে ৮ কিলোমিটার দূরত্বে নাফ নদীর ও বঙ্গোপসাগরের মোহনায় অবস্থিত এই সেন্টমার্টিন দ্বীপ।
সেন্ট মার্টিন সম্বন্ধে অনুসন্ধান করতে গিয়ে উঠে এসেছে নানান চমকপ্রদ তথ্য। বিভিন্ন নির্ভরযোগ্য সূত্র এবং স্থানীয় প্রবীণ জনগণের কাছে এই দ্বীপ সম্পর্কে জানতে চাইলে, তারা বলেন,, আনুমানিকন প্রায় ৫০০০ বছর পূর্বে এই দ্বীপ জেগে উঠেছিল এবং তখন টেকনাফ থেকে পায়ে হেঁটে এই দ্বীপে যাওয়া যেত। সূত্র আরো জানায়,, ওই সময়ে কোন এক প্রাকৃতিক দুর্যোগে এই দ্বীপ সাগরের নিচে পূণরায় তলিয়ে যায়।
কিন্তু মহান আল্লাহ তায়ালার অপার কৃপায় ১৭৬২ খ্রিস্টাব্দে আবারো জেগে উঠে দ্বীপটি । পরবর্তীতে খুব সম্ভবত ১৮৯০ খ্রিস্টাব্দের দিকে কিছু বাঙালি ও রাখাইন সম্প্রদায়ের লোক ( যারা ছিল মৎস্যজীবী)) সর্বমোট ১৩ টি পরিবার নিয়ে এই দ্বীপে বসবাস শুরু করে। এবং তারা তাদের পানির তৃষ্ণা মিটাতে দ্বীপের চারিপাশে সারি সারি নারিকেল গাছ রোপন করে, যার প্রেক্ষিতে এই দ্বীপের নাম হয়ে যায় নারিকেল পিঞ্জিরা।
১৯৩০ খ্রিস্টাব্দে ব্রিটিশ ভু- জরিপ দল দ্বীপটিকে ব্রিটিশ ভারতের অংশ হিসেবে নেয় এবং জরিপের এক খ্রিষ্টান ব্যক্তির নাম অনুসারে স্থানীয়দের দেয়া জিঞ্জিরা নাম পরিবর্তন করে " সেন্টমার্টিন " নাম করন করা হয়। বিশ্ব কাল পরিক্রমায় ব্রিটিশ থেকে ভারত স্বাধীন হয় এবং বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পরে ভৌগলিজ সীমারেখা ও বাংলাদেশের জল সীমানায় দ্বীপটি অবস্থিত বিধায় দেশি এবং বিদেশি পর্যটকরাও সেন্টমার্টিন এর বেড়াতে যেতে পারতো সরকারি /বেসরকারি কোন প্রতিষ্ঠান বা কোন ব্যক্তির অনুমতি ছাড়া শুধুমাত্র যাতায়তের ভাড়া পরিশোধের মাধ্যমে।
কিন্তু বর্তমানে সেন্টমার্টিন বা নারিকেল জিঞ্জিরায় ভ্রমণ করতে গেলে পর্যটকদের কক্সবাজার জেলা প্রশাসন থেকে রেজিস্টেশন করিয়ে যেতে হবে। কক্সবাজার জেলা প্রশাসকের পক্ষ থেকে এই ঘোষণা আসার সাথে সাথেই সারাদেশে আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে। সবার প্রশ্ন একটাই,,, যে সেন্টমার্টিন দ্বীপে দেশি-বিদেশি পর্যটক অনায়াসে আসা যাওয়া করেছে, দেশের রাজস্ব এসেছে, সেখানে এখন কেন রেজিস্টেশন করে যেতে হবে ? কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের মাধ্যমে সরকারের কাছে এই রেজিস্ট্রেশন প্রথা বাতিল করার জোর দাবি জানিয়েছেন অত্র জেলার স্থানীয় জনগণ।