রাজবাড়ীতে পালকীর পাতায় লুকানো ঐতিহ্যের স্বাদ; বর্ষবরণে ভিন্ন মাত্রা

মোঃমজিবুর রহমান খান জুয়েল প্রকাশিত: ১৬ এপ্রিল , ২০২৫ ১২:৫৬ আপডেট: ১৬ এপ্রিল , ২০২৫ ১২:৫৬ পিএম
রাজবাড়ীতে পালকীর পাতায় লুকানো ঐতিহ্যের স্বাদ; বর্ষবরণে ভিন্ন মাত্রা
এক সময় বাঙালির বিয়ের অপরিহার্য অনুষঙ্গ ছিল পালকী

এক সময় বাঙালির বিয়ের অপরিহার্য অনুষঙ্গ ছিল পালকী। গ্রাম-বাংলার ঐতিহ্যবাহী এই বাহনটি এক সময় ছিল বিয়ের কনের শোভাযাত্রার প্রধান আকর্ষণ। লাল-সবুজে সাজানো পালকী, বেহারার গানের তালে তালে কনে যখন শ্বশুর বাড়ির পথে রওনা দিতেন, তখন সেটা ছিল এক অপূর্ব দৃশ্য।
কিন্তু সময়ের পালা-বদলে পালকীর জায়গা নিয়েছে মোটরগাড়ি, মাইক্রোবাস কিংবা লাক্সারি কার। এখন বিয়ে বাড়িতে পালকী দেখা দুষ্কর। খুব একটা দেখা যায় না এই ঐতিহ্যবাহী বাহনটি।
তবে বাংলা নববর্ষ, বিশেষ করে পহেলা বৈশাখে রাজবাড়ী জেলার বিভিন্ন এলাকায় সেই পুরনো দিনের পালকীর দেখা মেলে। তবে তা আর বাস্তব বিয়ের জন্য নয়, বরং শিশুরা খেলনার ছলে বসে ওই পালকীতে। কখনো স্বামী-স্ত্রী সেজে, কখনো কেবল রঙিন পোশাক পরে, তারা হয়ে ওঠে আনন্দ উৎসবের কেন্দ্র-বিন্দু। পালকী ঘিরে চলে গান, নাচ, উৎসবের আমেজ। বেহারারা সুর তুলে গেয়ে যান। “পালকী চলে ধীরে ধীরে, বউ নিয়ে যায় পাড়া ঘুরে।”
রাজবাড়ী জেলার পাংশা, বালিয়াকান্দি, কালুখালী, রাজবাড়ী সদর, গোয়ালন্দ উপজেলার বসস্তপুর, খানখানাপুর, বহরপুর, কাঁটাখালী, বরাট, উড়াকান্দা, মিজানপুর, চন্দনী সহ বিভিন্ন এলাকায় এমন দৃশ্য বৈশাখ উপলক্ষে চোখে পড়ে। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, নতুন প্রজন্মকে গ্রামীণ সংস্কৃতির সাথে পরিচিত করাতে এমন আয়োজন করা হয়। এটি শিশুদের যেমন আনন্দ দেয়, তেমনি বয়স্কদের মনেও জাগিয়ে তোলে গ্রামীণ সুর।
বাঙালির উৎসবমুখর ঐতিহ্যে পালকীর এই ক্ষণিকের ফিরে আসা যেন স্মরণ করিয়ে দেয় আমাদের অতীতের শিকড় কতটা সমৃদ্ধ ছিল।
সকাল থেকে বিভিন্ন এলাকায় শুরু হয় র‌্যালি। র‌্যালিতে শুধু পালকী নয়, গ্রামীণ সাজে, বিভিন্ন বয়সী, বিভিন্ন পেশা-শ্রেণীর নারী-পুরুষ অংশ নেয়। 
গোয়ালন্দ উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. নাহিদুল রহমান জানান, পহেলা বৈশাখ সকল শ্রেণী পেশার মানুষ এক কাতারে দাঁড়ানোর মেল বন্ধন। এই পহেলা বৈশাল আমাদের মনে করিয়ে দেয় লুকানো বাংলার ঐতিহ্যের স্বাদ।

এই বিভাগের আরোও খবর

Logo