যশোর রেলস্টেশনের শেষপ্রান্তে ওভারব্রিজ, প্লাটফর্ম বদলাতে ঝুঁকি ও দুর্ভোগ

এসএম মিরাজুল কবীর টিটো প্রকাশিত: ২৯ জুন , ২০২৪ ১৪:২৫ আপডেট: ২৯ জুন , ২০২৪ ১৪:২৫ পিএম
যশোর রেলস্টেশনের শেষপ্রান্তে ওভারব্রিজ, প্লাটফর্ম বদলাতে ঝুঁকি ও দুর্ভোগ
সরেজমিন দেখা যায়, যাত্রীরা স্টেশনে এসে প্রথমে এক নম্বর প্লাটফর্মে অবস্থান করেন। ট্রেন কোন প্লাটফর্মে দাঁড়াবে কন্ট্রোল রুম থেকে মাইকে ঘোষণা দেয়া হয়। ট্রেন স্টেশনে পৌঁছনোর অল্প কিছু সময় আগে এটি জানানো হয়। আর তার পরপরই প্রথম প্লাটফর্ম থেকে দ্বিতীয় প্লাটফর্মে যেতে তাড়াহুড়ো শুরু হয় যাত্রীদের। তাদের অনেকে দুই দুইটি রেললাইন পাড় হয়ে দুই নম্বর প্লাটফর্মে যান। ট্রেন স্টেশনের কাছাকাছি চলে এসেছে, প্লাটফর্ম ছুঁই ছুঁই করছে তখনও ঝুঁকি নিয়ে এই পারপার চলে। তবে সচেতন মানুষদের বেশির ভাগ কষ্ট সহ্য করে ওভারব্রিজ পাড়ি দেন।

ওভারব্রিজ স্টেশনের একদম শেষ প্রান্তে হওয়ায় প্লাটফর্ম বদলের সময় দুর্ভোগ ও দুর্ঘটনার ঝুঁকির মধ্যে পড়ছেন যাত্রীরা। যশোর স্টেশনের দুটি প্লাটফর্ম থেকে যাত্রীরা বিভিন্ন রুটের ২৪টি ট্রেনে ওঠানামা করে। কোনো ট্রেন যখন দুই নম্বর প্লাটফর্মে যাত্রাবিরতি করে তখন অনেক খানি হেঁটে ওভার ব্রিজ দিয়ে সেখানে যাওয়া লাগে। সাথে ব্যাগ ও মালপত্র নিয়ে অনেক দূরের ওভার ব্রিজ পেরোতে গিয়ে গলদঘর্ম হতে হয়। আবার অনেকে ট্রেন আসার আগ মুর্হূতে রেললাইন পেরিয়ে দ্বিতীয় প্লাটফর্মে যাওয়ার সময় জীবন ঝুঁকির সম্মুখিন হন।

স্টেশন কর্তৃপক্ষ জানায়, প্লাটফর্মের একদম শেষ প্রান্তের ওভার ব্রিজটি যাত্রী পারাপারের জন্য না। ৪০ বছরেরও বেশি সময় আগে স্থানীয় বাসিন্দাদের নিরাপদে পারাপারের স্বার্থে ওভারব্রিজটি নির্মাণ করা হয়।

সরেজমিন দেখা যায়, যাত্রীরা স্টেশনে এসে প্রথমে এক নম্বর প্লাটফর্মে অবস্থান করেন। ট্রেন কোন প্লাটফর্মে দাঁড়াবে কন্ট্রোল রুম থেকে মাইকে ঘোষণা দেয়া হয়। ট্রেন স্টেশনে পৌঁছনোর অল্প কিছু সময় আগে এটি জানানো হয়। আর তার পরপরই প্রথম প্লাটফর্ম থেকে দ্বিতীয় প্লাটফর্মে যেতে তাড়াহুড়ো শুরু হয় যাত্রীদের। তাদের অনেকে দুই দুইটি রেললাইন পাড় হয়ে দুই নম্বর প্লাটফর্মে যান। ট্রেন স্টেশনের কাছাকাছি চলে এসেছে, প্লাটফর্ম ছুঁই ছুঁই করছে তখনও ঝুঁকি নিয়ে এই পারপার চলে। তবে সচেতন মানুষদের বেশির ভাগ কষ্ট সহ্য করে ওভারব্রিজ পাড়ি দেন।

যশোর রেলস্টেশন কর্তৃপক্ষ জানায়, যাত্রীদের প্লাটফর্ম পারাপারে একটি ওভারব্রিজ নির্মাণের একটি প্রস্তাবনা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। সূত্রমতে, স্টেশনটিতে বিভিন্ন রুটের ২৪টি ট্রেন থামে। প্রতিদিনি প্রায় ২০ হাজার মতো যাত্রী এসব ট্রেনে ওঠানামা করে।

স্টেশনের দক্ষিন পাশের ওভারব্রিজটি এক ও দুই নম্বর প্লাটফর্মের একদম শেষপ্রান্তে। এক নম্বর প্লাটফর্মটির শেড (ছাউনি) যেখানে শেষ হয়েছে ওভারব্রিজটি তার থেকেও বেশ খানিকটা দূরে।

সৈয়দ আশরাফ আলী নামে পেশায় একজন ঠিকাদার জানান, ব্যবসার কাজে তিনি দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ট্রেনে যাতায়াত করেন। অনেক সময় কোনো কোনো ট্রেন দুই নম্বর প্লাটফর্মে যাত্রাবিরতি করে। আর তখন ট্রেন ধরতে ওই প্লাটফর্মে যেতে নাস্তানাবুদ হতে হয়। দূরে একটি ওভারব্রিজ আছে। সেটি দিয়ে পার হয়ে প্লাটফর্ম বদল করা বেশ কঠিন।

দেখা গেছে, বহু পুরাতন এই ওভার ব্রিজের সাথে নতুন করে একটি সিঁড়ি সংযুক্ত করা হয়েছে। সিঁড়িটি বেশ খাড়া ভাবে উঠে ব্রিজে মিশেছে। ফলে এটি দিয়ে নিচে নামাটাও বেশ ঝুঁকিপূর্ণ।

নওশিন নঈম নামে এক নারী দুই সন্তান নিয়ে স্টেশনে ট্রেনের অপেক্ষায় ছিলেন। তার দুই হাতে দুটি ব্যাগ ছিল। তিনি বলেন, মাইকে ‘অ্যানাউন্স’ করা হয়েছে আর কিছুক্ষণের মধ্যে তাদের ট্র্রেনটি দুই নম্বর প্লাটফর্মে এসে দাঁড়াবে। এখন সাথে থাকা শিশু ও ব্যাগ নিয়ে রেললাইন পার হওয়া নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছি। কথা বলতে বলতে তিনি ওভার ব্রিজের দিকে ছুট লাগান।

রেল উন্নয়ন সংগ্রাম কমিটি যশোরের নেতা তসলিম উর রহমান বলেন, স্টেশনের শেষ মাথার ওভার ব্রিজটি বিগত শতাব্দির ৮০’র দশকে নির্মিত হয় মূলত চাঁচড়া রায়পাড়া ও শংকরপুরের মানুষজনের পারাপারের জন্য। বহু আগে থেকেই ওই এলাকার মানুষজন নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য কেনকাটার জন্য রেলবাজারে আসেন। আর তাদের নিরাপদে পারাপারের জন্য সেটি নির্মাণ হয়।

তিনি বলেন, প্রতিদিন ঢাকার তিনটি ট্রেন স্টেশনে থামে। এ ছাড়াও অন্যান্য রুটের ট্রেনও এখানে যাত্রাবিরতি করে। ফলে প্রচুর যাত্রী সমাগম হয়। এ ছাড়া আগে একটিমাত্র প্লাটফর্ম ছিলো। তাই যাত্রী পারাপারে প্লাটফর্মের তেমন দরকার ছিল না। কিন্তু এখন জরুরি। কারণ যাত্রীদের সাথে অনেক লাগেজ থাকে। আর সেগুলো বহন করে রেললাইন দিয়ে পারাপার করাটা যেমন কঠিন; তেমনি ঝুঁকিপূর্ণও।

যশোর রেলস্টেশন মাস্টার আয়নাল হোসেন জানান, ওভার ব্রিজ না থাকায় প্লাটফর্ম বদলের সময় যাত্রীদের সত্যিই সমস্যা হয়। বিশেষ করে বৃদ্ধ, নারী ও প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের প্রথম প্লাটফর্ম থেকে দ্বিতীয় প্লাটফর্মে যেতে অনেক কষ্ট ও দুর্ভোগের মধ্যে পড়তে হয়। যাত্রীদের সুবিধার জন্য ওভারব্রিজ নির্মাণের প্রয়োজনীয়তার বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।

এই বিভাগের আরোও খবর

Logo