মৌলভীবাজারে আবারও বন্যার আশঙ্কা, প্রহর গুনছে নদীতীরবাসী

জায়েদ আহমেদ প্রকাশিত: ২২ মে , ২০২৫ ১৫:২৫ আপডেট: ২২ মে , ২০২৫ ১৫:২৫ পিএম
মৌলভীবাজারে আবারও বন্যার আশঙ্কা, প্রহর গুনছে নদীতীরবাসী

মৌলভীবাজারের নদ-নদীগুলো যেন আবারও স্মরণ করিয়ে দিচ্ছে ভয়াবহ সেই দিনের গল্প। দুই দিনের টানা বর্ষণ আর উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে মনু, ধলাই, কুশিয়ারা ও জুড়ী নদীতে হঠাৎ করেই পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। জেলার জুড়ী নদী ইতোমধ্যেই বিপৎসীমার ৪৫ সেন্টিমিটার ওপরে বইছে—যা নিঃসন্দেহে পরিস্থিতিকে করেছে আরও উদ্বেগজনক।
গত বছরের বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত বাঁধগুলোর অনেকগুলোই এখনও পুরোপুরি মেরামত হয়নি। ফলে স্থানীয়দের মনে দেখা দিয়েছে নতুন করে দুশ্চিন্তা—“বাঁধ টিকবে তো?” এই প্রশ্নে ভাঙছে ঘুম, বাড়ছে অজানা আতঙ্ক। বিশেষ করে মনু ও ধলাই নদীর পাড়ঘেঁষা এলাকার মানুষজনের মাঝে স্পষ্ট শঙ্কা: বৃষ্টি যদি না থামে, তবে বিপর্যয় আসন্ন।আবহাওয়ার পূর্বাভাস বলছে আরও বৃষ্টিশ্রীমঙ্গল আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, গতকাল ও আজ সকাল পর্যন্ত জেলায় ১০৫ মিলিমিটার বৃষ্টি রেকর্ড করা হয়েছে। পাশাপাশি, আগামী কয়েক দিন আবহাওয়া আরও বৃষ্টিপূর্ণ থাকবে বলে পূর্বাভাস পাওয়া গেছে। এই অবিরাম বৃষ্টিপাত পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
প্রশাসনের আশ্বাস, তবু আশঙ্কা কাটছে নামৌলভীবাজার পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী খালেদ বিন ওয়ালিদ জানিয়েছেন, “আমরা সার্বক্ষণিক মনিটরিং করছি। জুড়ী নদীর পানি বিপৎসীমার ওপরে থাকলেও বাকিগুলো এখনও নিয়ন্ত্রণে। আতঙ্কের কিছু নেই।”
তবে বাস্তব চিত্র বলছে ভিন্ন কথা। কারণ বাঁধগুলোর দুর্বল অবস্থা, টানা বর্ষণের পূর্বাভাস ও উজানের ঢল এই তিনটি বিষয় একসাথে বিবেচনায় নিলে শঙ্কা অমূলক নয় বলেই মনে করছেন স্থানীয়রা।
নদীর বাঁকে নিঃশব্দ প্রতীক্ষামনু নদীর পাড়ে দাঁড়িয়ে একজন বৃদ্ধ কৃষকের কণ্ঠে শোনা গেল গভীর উদ্বেগ, “পানি যেভাবে বাড়ছে, আবার যদি আগের মতো হায়া (বন্যা) আসে, আমরা রক্ষা পাবো না। সরকার যদি এখনই ব্যবস্থা না নেয়, তাহলে বড় ক্ষতি হয়ে যাবে।”
এই মুহূর্তে প্রয়োজন দ্রুত, সমন্বিত ও বাস্তবমুখী পদক্ষেপ। বৃষ্টির আগাম সতর্কতা, ত্রাণ প্রস্তুতি এবং বাঁধগুলোর জরুরি সংস্কারই হতে পারে একটি সম্ভাব্য বিপর্যয় রোধের মূল চাবিকাঠি। প্রকৃতির এই অস্থির বার্তার জবাব দিতে হবে প্রস্তুতি দিয়ে, প্রতিক্রিয়া দিয়ে নয়।

এই বিভাগের আরোও খবর

Logo