মুন্সিগঞ্জ জেলার ছয়টি উপজেলায় আউট অব স্কুল চিলড্রেন এডুকেশন প্রোগ্রাম এর আওতায় পাঁচ দিনব্যাপী (পঞ্চম শ্রেণীর) শিক্ষক ও সুপারভাইজারদের বিষয়ভিত্তিক প্রশিক্ষণ কর্মসূচি উদ্বোধন।

অধীর চন্দ্র দাস প্রকাশিত: ২৩ ডিসেম্বর , ২০২৪ ০৯:৩২ আপডেট: ২৩ ডিসেম্বর , ২০২৪ ০৯:৩২ এএম
মুন্সিগঞ্জ জেলার ছয়টি উপজেলায় আউট অব স্কুল চিলড্রেন এডুকেশন প্রোগ্রাম এর আওতায় পাঁচ দিনব্যাপী (পঞ্চম শ্রেণীর) শিক্ষক ও সুপারভাইজারদের বিষয়ভিত্তিক প্রশিক্ষণ কর্মসূচি উদ্বোধন।
মুন্সিগঞ্জ জেলার ছয়টি উপজেলায় চলমান আউট অব স্কুল চিল্ড্রেন এডুকেশন প্রোগ্রামের কর্মসূচিতে চলতি ডিসেম্বর মাসে ভিন্ন তারিখে ৫ দিন ব্যাপি উপজেলাগুলোতে শিক্ষক ও সুপারভাইজারদের প্রশিক্ষণ কার্যক্রম অনুষ্ঠিত হচ্ছে। উক্ত প্রশিক্ষণে ৩৯৫ টি শিক্ষণ কেন্দ্রের শিক্ষক এবং ২১ জন সুপারভাইজার ছয়টি উপজেলায় প্রশিক্ষণ গ্রহণ করছেন।

মুন্সিগঞ্জ জেলার ছয়টি উপজেলায় চলমান আউট অব স্কুল চিল্ড্রেন এডুকেশন প্রোগ্রামের কর্মসূচিতে চলতি ডিসেম্বর মাসে ভিন্ন তারিখে ৫ দিন ব্যাপি উপজেলাগুলোতে শিক্ষক ও সুপারভাইজারদের প্রশিক্ষণ কার্যক্রম অনুষ্ঠিত হচ্ছে। উক্ত প্রশিক্ষণে ৩৯৫ টি শিক্ষণ কেন্দ্রের শিক্ষক এবং ২১ জন সুপারভাইজার ছয়টি উপজেলায় প্রশিক্ষণ গ্রহণ করছেন। উক্ত প্রশিক্ষণের মাধ্যমে শিক্ষক ও সুপারভাইজাররা পিছিয়ে পড়া ও ঝড়ে পড়া শিক্ষার্থীদের কে আরো সুন্দরভাবে বাংলাদেশ বিনির্মাণে শিক্ষার আলো ছড়িয়ে দিতে পারবেন যা এ প্রশিক্ষণের মাধ্যমে তারা অর্জিত করবেন তাদের জ্ঞান ,তাদের দক্ষতা এবং তাদের চিন্তাশক্তি। যা গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের এই মহতী কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছে বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা রিসোর্স ইন্টিগ্রেশন সেন্টার ( রিক)। উক্ত প্রশিক্ষণ কর্মসূচি উদ্বোধনকালীন উপজেলা গুলোতে ভিন্ন ভিন্ন সময়ে উপস্থিত ছিলেন স্ব-স্ব উপজেলার উপজেলা নির্বাহী অফিসারগণ, উক্ত প্রশিক্ষণের কোর্স কো-অর্ডিনেটর হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জনাব মোঃ আব্দুল আলিম সহকারী পরিচালক জেলা উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা ব্যুরো, মুন্সিগঞ্জ।উপস্থিত ছিলেন জনাব মোঃ শামসুল হুদা, জেলা প্রোগ্রাম ম্যানেজার, মুন্সিগঞ্জ। উপস্থিত ছিলেন স্ব-স্ব উপজেলার উপজেলা ম্যানেজার গণ । আরও উপস্থিত ছিলেন উপজেলার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গগণ। এ প্রশিক্ষণে শিক্ষক ও সুপারভাইজারদের মাধ্যমে ঝরে পড়া প্রায় ১১ হাজার শিক্ষার্থী শিক্ষার আলোয় আলোকিত হবে। উক্ত প্রতিষ্ঠানটি সকল শিক্ষার্থীদের কে লেখাপড়া করার জন্য প্রয়োজনীয় উপকরণ সামগ্রী বিনামূল্যে বিতরণ করেন। শিক্ষার্থীদের কে সরকারি উপবৃত্তি ও প্রদান করা হয়। মুন্সিগঞ্জ জেলার টঙ্গীবাড়ী উপজেলার এক শিক্ষক মোহাম্মদ গোলাম আযম বলেন, রিক ২০২২ সাল থেকে মুন্সিগঞ্জ জেলায় out of school children education program (Ooscep) বিদ্যালয় বহির্ভূত ঝরে পড়া ছেলে-মেয়েদেরকে নিয়ে কাজ শুরু করে। কিন্তু "আউট অব স্কুল চিলড্রেন এডুকেশন প্রোগ্রাম" এর অধীনে কাজ করা শিক্ষকরা বর্তমানে বেশ কিছু চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি । এই কর্মসূচির শিক্ষকদের মাসিক বেতন প্রায় ৫০০০ টাকা হলেও বরাদ্দ জটিলতার কারণে আমরা প্রায় ১২ মাস যাবত বেতন ভাতা কিছুই পাচ্ছি না। "আমরা ঝরে পড়া শিশুদের নতুন জীবনে ফিরিয়ে আনার কাজ করছি। কিন্তু নিজেদের জীবন এখন অনিশ্চিত এভাবে চললে প্রোগ্রামের শিক্ষাদান প্রক্রিয়া বন্ধ হয়ে যেতে পারে।"তিনি আরো বলেন, আমরা ১২ মাসের মধ্যে ০৯ মাসের ঘর ভাড়া ঘরমালিকদের এখনো পরিশোধ করতে পারছি না । এজন্য ঘর মালিকরা আমাদের সাথে প্রতিনিয়ত খুব রুঢ় ব্যবহার করছেন। সমাজে এখন আমরা মুখও দেখাতে পারছি না তাদের ঠিক মতন ঘর ভাড়া না দিতে পারায়। আমরা শিক্ষার্থীদের মাঝে শিক্ষার কি আলো বিতরণ করব? আমরাই যেখানে অন্ধকারে নিমজ্জিত। প্রোগ্রাম সুপারভাইজাররা বলেন, "আমরা ন্যূনতম বেতনের উপর নির্ভর করি । ১২ মাস ধরে বেতন ভাতা না পাওয়ায় আমাদের দৈনন্দিন জীবন যাপন পরিচালনা করা অসম্ভব হয়ে উঠেছে। পরিবার পরিজন নিয়ে ঠিকমতো দুই বেলা দু'মুঠো না খেতে পারা ,ঋণ পরিশোধ করা- সবকিছুতেই আমরা বিপদে আছি।"নির্দিষ্ট সময় পর বেতন ভাতা পাওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হলেও তার বাস্তবায়ন হয়নি। এ নিয়ে একাধিকবার কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ জানালেও, মিলেনি তেমন কোন সমাধান। তাই ১২ মাস ধরে বেতন ভাতা না পাওয়ায় আউট অব স্কুল চিলড্রেন এডুকেশন প্রোগ্রামের সঙ্গে যুক্ত শিক্ষক ও সুপারভাইজাররা পড়ছেন আর্থিক সংকটে। শিক্ষা বিশেষজ্ঞরা বলেন, এই প্রোগ্রামটি মূলত শিক্ষা থেকে ঝরে পড়া এবং কখনো স্কুলে না যাওয়া শিশুদের পুনরায় শিক্ষা ব্যবস্থার আওতায় আনার জন্য চালু করা হয়েছিল ।প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের তত্ত্বাবধানে এটি পরিচালিত হয়। ২০২২ সালে শুরু হওয়া এ প্রকল্পে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক শিশুদের পুনরায় শিক্ষার আলোয় ফিরিয়ে আনার সাফল্য দেখা গেলেও, শিক্ষক ও সুপারভাইজারদের অর্থনৈতিক সংকট এর কার্যক্রম কে ব্যাহত করছে। তাদের মতে, প্রকল্পের শিক্ষার্থীরা এই পরিস্থিতির প্রভাব অনুভব করছে। শিক্ষার্থীদের অভিভাবকরাও এই পরিস্থিতির উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।"এই ধরনের প্রকল্প ঝরে পড়া শিশুদের পুনরায় শিক্ষার সুযোগ তৈরি করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। তবে বেতন না পাওয়ার মতো সমস্যাগুলো প্রোগ্রামের কার্যক্রম এবং এর উদ্দেশ্যকে বাধাগ্রস্ত করতে পারে।"মুন্সিগঞ্জ উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা ব্যুরোর সহকারী পরিচালক জনাব মোঃ আব্দুল আলীম বলেন, কিছু আমলাতান্ত্রিক জটিলতার কারণে এবং "প্রকল্পের জন্য নির্ধারিত বাজেট বরাদ্দের জটিলতার কারণেও এই সমস্যা তৈরি হয়েছে। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীনে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প এমন সংকটে পড়ায় শুধু শিক্ষকরাই বা সুপারভাইজাররাই নয় বরং ঝরে পড়া শিশুরাও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। বকেয়া বেতন ভাতা দ্রুত পরিশোধ এবং বাজেট বরাদ্দের জটিলতা দূর করে শিক্ষক ও সুপারভাইজারদের জন্য সুষ্ঠ পরিবেশ নিশ্চিত করাই এখন সময়ের দাবি। এই কর্মসূচির সফল বাস্তবায়ন এবং শিক্ষার্থীদের মূল ধারার শিক্ষা ব্যবস্থায় ফিরিয়ে আনার জন্য প্রকল্পের মেয়াদ ২০২৫ সাল পর্যন্ত বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে তবে অর্থ ছাড় ও প্রশাসনিক সমস্যা সমাধানে দ্রুত কাজ করা হচ্ছে।

এই বিভাগের আরোও খবর

Logo