বীরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের যৌথ অভিযানে বীরগঞ্জ উপজেলার পৌর শহরের পেশেন্ট কেয়ার প্রাইভেট হাসপাতাল এবং মা ও শিশু হাসপাতাল এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে অভিযান চালিয়ে ২০ হাজার টাকা করে মোট ৪০ হাজার টাকা জরিমানা করেন। মঙ্গলবার (৫ মার্চ-২০২৪) বেলা ১১টা থেকে ২টা পর্যন্ত ২ঘণ্টা ব্যাপী অভিযান পরিচালনা শুরু করেন পৌর শহরের সেন্টার পাড়ায় পেশেন্ট কেয়ার প্রাইভেট হাসপাতালে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ছাড়া অপারেশন করা এবং পর্যাপ্ত নার্স না থাকায় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন ২০০৯ এর ৪৫ ধারা অনুযায়ী ২০ হাজার টাকা জরিমানা করেন। প্রাইভেট হাসপাতালকে ১ মাসের মধ্যে সকল শর্ত পূরণ করার নির্দেশনা দেন।
এরপর উপজেলা গেট সংলগ্ন মা ও শিশু হাসপাতাল এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টার কর্তৃপক্ষ টের পেয়ে রোগীকে ক্লিনিকের কক্ষে রেখেই তালা মেরে দেন। ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মমতাজ বেগম অভিযান পরিচালনা করার সময় তালাবন্ধ অবস্থায় ১জন রোগীকে দেখতে পান। তাৎক্ষণিক ওই রোগীকে ৫০ শয্যা বিশিষ্ট বীরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে অ্যাম্বুলেন্স এর মাধ্যমে রেফার করেন। রংপুর মেডিকেল কলেজের এম বি বিএস মোঃ নোমান ইসলাম নিরবকে না রেখেই, তার নাম দেখিয়ে হাসপাতাল পরিচালনা করছেন। লাইসেন্সবিহীন এবং বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ছাড়া অপারেশন করা, পর্যাপ্ত নার্স না থাকায় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন ২০০৯ ধারা অনুযায়ী ২০ হাজার টাকা জরিমানা করে। অনির্দিষ্টকালের জন্য মা ও শিশু হাসপাতাল এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টার সিলগালা করে, সকল শর্ত পূরণ করে চালু করার নির্দেশনা দেন।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন বীরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা অফিসার ডাঃ মোহাম্মদ মহসীন, বীরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এর মেডিকেল অফিসার (রোগ নিয়ন্ত্রণ) ডাঃ সৈয়দ সাব্বির-উল-ইসলাম,
উপজেলা স্যানিটারী ইন্সপেক্টর ও নিরাপদ খাদ্য পরিদর্শক, ফরিদ বিন ইসলামসহ জেলা পুলিশ ফোর্স অভিযানিক দলের অন্যান্যরা।
জেলা ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মমতাজ বেগম বলেন, ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর অবৈধ ক্লিনিক এবং ডায়াগনস্টিক সেন্টারের বিরুদ্ধে অভিযানে মাঠে নেমেছি। অনিয়ম, অব্যবস্থাপনা ও প্রয়োজনীয় কাগজপত্র না থাকায় ২টি প্রতিষ্ঠানকে জরিমানা করা হয়েছে। আগামীতেও এই অভিযান অব্যাহত থাকবে।
এবিষয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ মোহাম্মদ মহসীন জানান, অভিযানের সময় মা ও শিশু জেনারেল হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ হাসপাতালের ভিতরে রোগী রেখে বন্ধ করে পালিয়ে যায়। মানসম্মত স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র, যোগ্য ও দক্ষ লোকবলসহ সুন্দর পরিবেশ সৃষ্টি করার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা না থাকার অপরাধে ৪৫ ধারা মোতাবেক ২০ হাজার টাকা জরিমানা এবং হাসপাতালে কে বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়। অন্যদিকে পেশেন্ট কেয়ার প্রাইভেট হাসপাতালের মালিক কে ৪৫ ধারা মোতাবেক ২০ হাজার টাকা জরিমানা এবং মানসম্মত স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র, যোগ্য ও দক্ষ লোকবলসহ সুন্দর পরিবেশ সৃষ্টি করার প্রয়োজনীয় নিদের্শনা দেয়া হয় এবং এক মাস পর্যন্ত সময়সীমা বেধে দেয়া হয়। এ ব্যপারে পেশেন্ট কেয়ার হাসপাতাল এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারের পরিচালক, শিক্ষক মোঃ শফিকুল ইসলামের সাথে কথা হলে তিনি সত্যতা স্বীকার করে জানান, তার প্রতিষ্ঠানকে ভোক্তা অধিকার আইনে ২০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
পেশেন্ট কেয়ার হাসপাতালের বিরুদ্ধে সিজারের সময় নবজাতকের মৃত্যুর ঘটনা, অদক্ষ লোকবল ব্যবহার এসব সঠিক নয় এবং নিহত নবজাতকের বাবা আবু বক্কর সিদ্দিকের কোন অভিযোগ নাই মর্মেও তিনি জানিয়েছেন। এ রিপোর্ট লিখা পর্যন্ত মা ও শিশু জেনারেল হাসপাতাল বন্ধ রাখার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।