চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জে এক বিধবা নারী ধর্ষণের শিকার হয়েছেন।অভিযুক্তরা নিজেদের অপকর্ম ঢাকতে ষড়যন্ত্র করে ভাসুর পুত্রের সাথে অনৈতিক সর্ম্পকের অভিযোগ তুলে ভিডিও ধারণ করে। ওই ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়ার ভয় দেখিয়ে অর্থ আদায়ের ঘটনার অভিযোগ উঠেছে।
এ ঘটনায় সোমবার (১২ফেব্রুয়ারি) ভুক্তভোগী নারী থানায় মামলা করলে রাতেই প্রধান অভিযুক্ত মাইনুদ্দিন মিজিকে আটক করে পুলিশ। পরে মঙ্গলবার (১৩ফেব্রুয়ারি)সকালে অভিযুক্তকে চাঁদপুর আদালতে এবং নারীকে ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য চাঁদপুর সরকারি হাসপাতালে পাঠায়। উপজেলার পাইকপাড়া উত্তর ইউনিয়নের বিষুরবন্দ গ্রামের এ ঘটনায় ওই এলাকায় তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে মামলা সূত্রে জানা যায়, গত বৃহস্পতিবার (১ ফেব্রæয়ারি) রাতে প্রাকৃতিক ডাকে সাড়া দিতে বিধবা নারী ঘরের বাহিরে গেলে অভিযুক্তরা এই সুযোগে তার ঘরে প্রবেশ করে, ভয়ভীতি দেখিয়ে ধর্ষণ করে। পরে নিজেদের অপকর্ম ঢাকতে কুট কৌশলের আশ্রয় নেয় তারা।এরই অংশ হিসেবে ভুক্তভোগীর ভাসুরের ছেলেকে ঘুম থেকে ডেকে তুলে ঘরের বাহিরে নিয়ে মারধর করে এবং চাচীর সাথে অবৈধ সম্পর্ক রয়েছে এমন স্বীকারোক্তি নেয়ার চেষ্টা করে তা ভিডিও ধারণ করে।
এক পর্যায়ে ওই ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়ার ভয় দেখিয়ে অভিযুক্তরা দুই লক্ষ টাকা অর্থ দাবী করে। ভুক্তভোগীর ভাসুরের ছেলে একটি স্কুলের শিক্ষকতা পেশায় থাকার কারণে সম্মানের ভয়ে অভিযুক্তদের ৫০ হাজার টাকা দিতে বাধ্য হয়। এতেও অভিযুক্তরা ক্ষ্যান্ত না হয়ে পুনরায় মোটা অংকের অর্থ দাবি ও ওই নারীকে আবারো ধর্ষণের চেষ্টা করে। এক পর্যায়ে অভিযুক্তদের আতঙ্কে দুই সন্তানকে নিয়ে ভুক্তভোগী ওই নারী স্বামীর বাড়ি ছেড়ে বাবার বাড়ীতে আশ্রয় নেন। বিষয়টি সহ্য করতে না পেরে সোমবার (১২ ফেব্রুয়ারি) বিকালে থানার লিখিত অভিযোগ দায়ের করে। অভিযোগটি আমনে নিয়ে মামলা হিসেবে গ্রহন পূর্বক পুলিশ অভিযুক্তদের মধ্যে মাইনুদ্দিন মিজিকে সোমবার (১২ ফেব্রুয়ারি) রাতে আটক করে এবং মঙ্গলবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) সকালে আদালতে প্রেরণ করে।ভুক্তভোগীর ভাসুরের ছেলে জানান, আমার অসুস্থ মাকে দেখতে ঘটনার দিন সন্ধ্যায় আমি বাড়িতে আসি। আমার মায়ের সাথে ঘুমিয়ে ছিলাম। গভীর রাতে মাইনুদ্দিন মিজি আমাকে ঘুম থেকে ডেকে তুলে,আমাকে চড়থাপ্পর দিয়ে ভয়ভীতি দেখিয়ে আমার চাচীর সাথে দাঁড় করায়।একপর্যায়ে আমাকে তারা আমার চাচীর সাথে অবৈধ সম্পর্ক রয়েছে বলে স্বীকার করতে বাধ্য করে ভিডিও ধারণ করে। এরপরেই অভিযুক্তরা আমার কাছ থেকে দুই লক্ষ টাকা দাবি করে নচেৎ তা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়ার ভয়ভীতি দেখায়। আমি পেশার কারণে ও আত্মসম্মানের ভয়ে বাড়ির অন্যান্য চাচীদের সাথে যোগাযোগ করে তাদের ৫০ হাজার টাকা দেই। কিš‘ তারা পুনরায় আমার নিকট থেকে আরো টাকা দাবি করে এবং আমার চাচীকে বাড়ি থেকে বের হয়ে যেতে বাধ্য করে।এব্যাপারে ফরিদগঞ্জ থানার ওসি সাইদুল ইসলাম বলেন, ঘটনার শিকার ওই নারীর অভিযোগটি মামলা হিসেবে গ্রহণ পূর্বক সোমবার রাতেই অভিযুক্ত একজনকে আটক করে মঙ্গলবার (১৩ ফেব্রæয়ারি) সকালে চাঁদপুর আদালতে এবং ভিকটিমকে চাঁদপুর সদর হাসপাতালে পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে।