বহুল প্রতীক্ষিত কর্ণফুলী বঙ্গবন্ধু টানেল উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী

মোঃ ইসমাইল ইমন প্রকাশিত: ২৮ অক্টোবর , ২০২৩ ১৪:২৬ আপডেট: ২৮ অক্টোবর , ২০২৩ ১৪:২৬ পিএম
বহুল প্রতীক্ষিত কর্ণফুলী বঙ্গবন্ধু টানেল উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী
অবশেষে বহুল প্রতীক্ষিত কর্ণফুলী টেনেল তথা বঙ্গবন্ধু টেনেলের দ্বার উন্মোচন হয়েছে, খুলছে ‘স্বপ্নদুয়ার’ নদীর তলদেশে নির্মিত দেশের প্রথম টানেল বঙ্গবন্ধু টানেল। বঙ্গবন্ধু টেনেলের কর্ণফুলী নদীর উত্তর ও দক্ষিণ প্রান্তকে সংযোগ করে চট্টগ্রামকে পরিণত করবে ওয়ান সিটি টু টাউন।

অবশেষে বহুল প্রতীক্ষিত কর্ণফুলী টেনেল তথা বঙ্গবন্ধু টেনেলের দ্বার উন্মোচন হয়েছে, খুলছে ‘স্বপ্নদুয়ার’ নদীর তলদেশে নির্মিত দেশের প্রথম টানেল বঙ্গবন্ধু টানেল। বঙ্গবন্ধু টেনেলের কর্ণফুলী নদীর উত্তর ও দক্ষিণ প্রান্তকে সংযোগ করে চট্টগ্রামকে পরিণত করবে ওয়ান সিটি টু টাউন। ২৮ অক্টোবর শনিবার বেলা ১১টা ৪০ মিনিটে বহুল প্রতীক্ষিত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেলটি উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। উদ্বোধনের পর আল্লাহর দরবারে দুহাত তুলে দোয়া করেন প্রধানমন্ত্রী।

প্রধানমন্ত্রী প্রথমে পতেঙ্গায় কর্ণফুলী নদীর পশ্চিম তীরে এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেল পার হয়ে আনোয়ারায় নদীর দক্ষিণ তীরে অপর নাম ফলক উন্মোচন করেন। এরপর দুপুরে জনসভার মঞ্চে যাবেন প্রধানমন্ত্রী। জনসভা শেষে তিনি ঢাকায় ফিরে যাবেন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেলটি চট্টগ্রাম বন্দরকে সরাসরি আনোয়ারা উপজেলার সাথে সংযুক্ত করা ছাড়াও সরাসরি কক্সবাজারকে চট্টগ্রামের সাথে সংযুক্ত করবে। ৩৫ ফুট প্রস্থ এবং ১৬ ফুট উচ্চতা বিশিষ্ট দুটি টিউব ১১ মিটার ব্যবধানে তৈরি করা হয়েছে। ফলে ভারী যানবাহন সহজেই টানেলের মধ্য দিয়ে চলাচল করতে পারবে। এই টানেলে যানবাহন ঘণ্টায় ৮০ কিলোমিটার বেগে চলতে পারবে। টানেলের দৈর্ঘ্য ৩.৪০ কিলোমিটার। যার সঙ্গে ৫.৩৫ কিলোমিটারের এপ্রোচ রোডের পাশাপাশি ৭৪০ মিটারের একটি সেতু রয়েছে। যা মূল শহর, বন্দর এবং নদীর পশ্চিম দিককে এর পূর্ব দিকের সঙ্গে সংযুক্ত করেছে।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেল পাড়ি দিয়ে টোল পরিশোধ করছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১৬ সালের ১৪ অক্টোবর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং যৌথভাবে টানেলটির ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। ২০১৯ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি প্রথম টানেল টিউবের বোরিং কাজের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। টানেল নির্মাণ হওয়ায় এ অঞ্চলে কয়েক হাজার কোটি টাকার বিনিয়োগ হবে। এতে করে কয়েক লাখ মানুষের কর্মসংস্থানও হবে। পর্যটন খাতে কক্সবাজারের পর আকর্ষণীয় স্থান হচ্ছে চট্টগ্রামের পতেঙ্গা সমুদ্রসৈকত ও আনোয়ারা পারকি'র চর বিচ। আগে পতেঙ্গা সমুদ্রসৈকত থেকে সড়কপথে শহরের ভেতর দিয়ে আনোয়ারায় যেতে সময় লাগত ৪ ঘণ্টা। বঙ্গবন্ধু টানেল চালু হলে লাগবে মাত্র ২০ মিনিট। দক্ষিণ এশিয়ায় এটিই একমাত্র নদীর তলদেশে টানেল। সঙ্গত কারণেই এ স্থাপনাকে কেন্দ্র করে আকর্ষণ বাড়বে দর্শনার্থীদের।

টানেলকে ব্যবহার করে রপ্তানিমুখী চিংড়ির উৎপাদন ও সরবরাহ দ্রুত বেড়ে যাবে, যৌক্তিক প্রত্যাশা ব্যবসায়ীদের। অবকাঠামো খাতে উন্নয়নের এ বিপ্লব আন্তর্জাতিক বিনিয়োগকারীদের আকৃষ্ট করবে। চট্টগ্রামে এরই মধ্যে অর্থনৈতিক অঞ্চল, পাওয়ার হাব, গভীর সমুদ্রবন্দর ও চট্টগ্রাম বন্দর সম্প্রসারণসহ বিভিন্ন মেগা প্রকল্প চলমান রয়েছে। টানেল চালু হলে পদ্মা সেতুর পর বাংলাদেশের সক্ষমতার অন্যতম আরেকটি দৃষ্টান্ত স্থাপন হবে।

বঙ্গবন্ধু টানেলকে ঘিরে পাল্টে গেছে আনোয়ারা-কর্ণফুলী সহ পুরো দক্ষিণ চট্টগ্রামের চিত্র। বিশেষ করে সরকারের মেগা প্রকল্পগুলো উন্নয়নের পরিবর্তনের ছোঁয়ায় বদলে যাচ্ছে আনোয়ারার অর্থনীতির দৃশ্যপট। ভৌগোলিক কারণে একদিকে সমুদ্রবন্দরের পাশে অন্যদিকে বঙ্গবন্ধু টানেল নির্মাণের ফলে আনোয়ারা হবে আন্তর্জাতিক যোগাযোগের ক্ষেত্রে শ্রেষ্ঠ এক মাধ্যম। স্লোগানে মুখর প্রধানমন্ত্রীর জনসভাস্থল স্লোগানে মুখর,খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে নেতাকর্মীরা জনসভাস্থলে সমবেত হচ্ছে। আনোয়ারায় কোরিয়ান ইপিজেড (কেইপিজেড) মাঠে এক জনসভায় ভাষণ দেবেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগ এ সমাবেশের আয়োজন করছে। প্রধানমন্ত্রীর আগমনে আজ শনিবার ভোর থেকেই চট্টগ্রামের বিভিন্ন এলাকা থেকে বাস-ট্রাক-পিকআপে, পায়ে হেটে, যে যেভাবে পারছে খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে নেতাকর্মীরা আনোয়ারা-কর্ণফুলী উপজেলায় অবস্থান নেয়। পরে স্লোগানে-স্লোগানে জনসভাস্থলে ঢুকতে শুরু করেন নেতাকর্মীরা।

এই বিভাগের আরোও খবর

Logo