চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার কৃষ্ণ পদ রায় বলেছেন, পুলিশ পলিসি মেকার নয়, বাস্তবায়নের চেষ্টা করেন মাত্র। কোনো এলাকার আইন-শৃঙ্খলা রক্ষার ক্ষেত্রে পুলিশের পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট সকলকে এগিয়ে আসতে হবে। সাম্প্রতিক সময়ে কিশোর গ্যাংয়ের কথা আলোচনায় আসছে। পুলিশ ফাইনালি কাজ করে।
অর্থাৎ পুলিশের কাজ হচ্ছে ধরে জেলে পুরে দেওয়া। কিন্তু এ পর্যায়ে আসার আগের বিষয়টি ভাবতে হবে। যদি কোনো ছাত্র ক্লাসে অনুপস্থিত থাকে, ঐ সময় তারা কোথায় থাকে খবর রাখতে হবে। প্রথমদিকে ক্লাস ফাঁকি দিয়ে অন্য খারাপ লোকের সান্নিধ্যে যায়। পরবর্তীতে নিজেরাই খারাপ কাজে জড়িয়ে পড়ে। এ ব্যাপারে সর্বাগ্রে পরিবারকেই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে হবে। ২১ মে মঙ্গলবার চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের পিএইচপি ভিআইপি লাউঞ্জে সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময়কালে তিনি এসব কথা বলেন।চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সভাপতি সালাহ্উদ্দিন মো. রেজার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক দেবদুলাল ভৌমিক। সিএমপি কমিশনার তাঁর নিজের অতীতের কথা বর্ণনা করে বলেন, আপনারা অনেকেই জানেন আমার প্রথম পেশা ছিলো সাংবাদিকতা।
পুলিশের চাকরিতে না আসলে হয়তো আমি এখনো সাংবাদিকতাই করতাম। সেই পেশার লোকজন যখন আমাকে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সম্মান সুচক সদস্যপদ দিয়ে সম্মানিত করেছেন তাতে আমি খুবই আপ্লুত। চট্টগ্রামে পুলিশ কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে চট্টগ্রামের নানা স্তরের সাংবাদিকদের সহযোগিতা পেয়েছি। চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ সাংবাদিকদের সাথে অতীতে ছিলো, বর্তমানে আছে এবং ভবিষ্যতেও থাকবে। তিনি বলেন, আমরা যদি প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হই- ‘কারো জন্য ভালো কিছু করতে না পারি, কিন্তু খারাপ কিছু করবো না,’-তাহলে অবশ্যই আমরা সমাজের জন্য, দেশমাতৃকার জন্য কাজ করতে সক্ষম হবো। চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশে পলিটিক্সের কোনো জায়গা নেই। সবাই যার যার জায়গা থেকে কাজ করে যেতে হবে। সিএমপি’র পুলিশ সবসময় ভালো কাজ করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
পুলিশ শত ভালো কাজ করলেও কোনো সমস্যা হলেই তা পুলিশের ওপর চাপিয়ে দেয়ার প্রবণতা দেখা যায়।সভাপতির বক্তব্যে সালাহউদ্দিন মো. রেজা বলেন, কৃষ্ণ পদ রায় চট্টগ্রামের সাংবাদিকদের একজন ঘনিষ্ঠ মানুষ। চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সম্মানপ্রদ জীবন সদস্যপদ প্রদান করতে পেরে আমরা আনন্দিত। তিনি শুধু সাংবাদিক নন, চট্টগ্রামের মানুষের কাছে একজন জনবান্ধব পুলিশ কর্মকর্তা হিসেবে পরিচিত। চট্টগ্রামের আইন-শৃঙ্খলার ক্ষেত্রে যে স্বাভাবিক পরিস্থিতি বিরাজমান, এর পেছনে রয়েছে তাঁর বিচক্ষণতা এবং পেশাসুলভ মন-মানসিকতা।স্বাগত বক্তব্যে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক দেবদুলাল ভৌমিক বলেন, চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে চট্টগ্রামের স্বাভাবিক আইনশৃঙ্খলার পাশাপাশি পুলিশ প্রশাসনেও কোনো অস্থিরতা নেই। কৃষ্ণ পদ রায় একজন ব্যতিক্রমী মানবিক ও দায়িত্ববান মানুষ। তাঁর মতো চৌকস কর্মকর্তা বাংলাদেশের সম্পদ।
তিনি চট্টগ্রামে সাংবাদিকের সাথে পুলিশের মেলবন্ধন যেভাবে সুদৃঢ় করেছেন, তা অনুকরণীয়।যুগ্ম সম্পাদক শহীদুল্লাহ শাহরিয়ারের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সিনিয়র সহ-সভাপতি চৌধুরী ফরিদ, সাবেক সাধারণ সম্পাদক ফারুক ইকবাল, ডিসি (দক্ষিণ) মোস্তাফিজুর রহমান, চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের কার্যকরী সদস্য জসীম চৌধুরী সবুজ এবং বীর মুক্তিযোদ্ধা মঞ্জুরুল আলম মঞ্জু, সিনিয়র সাংবাদিক শফিউল আলম ও নুরুল আলম।অনুষ্ঠানের শুরুতে কৃষ্ণ পদ রায়কে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সম্মানপ্রদ জীবন সদস্য সম্মাননা স্মারক এবং ফুলেল শুভেচ্ছা প্রদান করা হয়। এ সময় চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সহ-সভাপতি মনজুর কাদের মনজু, অর্থ সম্পাদক রাশেদ মাহমুদ, সাংস্কৃতিক সম্পাদক নাসির উদ্দিন হায়দার, ক্রীড়া সম্পাদক এম সরওয়ারুল আলম সোহেল, গ্রন্থাগার সম্পাদক কুতুব উদ্দিন, সমাজসেবা ও আপ্যায়ন সম্পাদক আল রাহমান, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক খোরশেদুল আলম শামীম, কার্যকরী সদস্য মো. আইয়ুব আলী, চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের বিভিন্ন পর্যায়ের উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তা এবং প্রেস ক্লাবের স্থায়ী-অস্থায়ী সদস্যসহ বিভিন্ন প্রিন্ট, ইলেকট্রনিক ও অনলাইন মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।