নান্দাইল দীঘিতে পর্যটন কেন্দ্রের স্বপ্ন ৩০ বছরেও বাস্তবায়িত হয়নি

মো: জাহিদুল ইসলাম (জাহিদ) প্রকাশিত: ১৩ জুলাই , ২০২৪ ১৫:৫৪ আপডেট: ১৩ জুলাই , ২০২৪ ১৫:৫৪ পিএম
নান্দাইল দীঘিতে পর্যটন কেন্দ্রের স্বপ্ন ৩০ বছরেও বাস্তবায়িত হয়নি
সেই থেকে এই দীঘি রাজা নন্দলালের নামে নান্দাইল দীঘি হিসাবে পরিচিত লাভ করেছে।স্থানীয় বাসিন্দারা এই দীঘির সৌন্দর্য দেখে বড় হয়েছেন।তাদের পূর্বপুরুষদের স্মৃতি জড়িয়ে আছে এই দীঘির সাথে।কিন্তু প্রায় ৩০ বছর হয়ে গেল এই দীঘি পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে ওঠার স্বপ্ন আজও অধরাই থেকে গেছে।

জয়পুরহাটের কালাই উপজেলার পুনট ইউনিয়নে অবস্থিত ঐতিহাসিক নান্দাইল দীঘি, প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের এক অনন্য লীলাভূমি। ১ কিলোমিটার দৈর্ঘের প্রায় ৬০ একর আয়তনের এই দীঘির নির্মাণ ও কারুকাজ মুগ্ধ করে ইতিহাসপ্রেমীদের।রাজা নন্দলালের নির্দেশে ১৬১০ খ্রিস্টাব্দে প্রজাকুলের চাষ ও পানির কষ্ট লাঘবের জন্য লাখো শ্রমিকের মাধ্যমে এক রাতে খনন করা হয়েছিল এই দীঘি।

সেই থেকে এই দীঘি রাজা নন্দলালের নামে নান্দাইল দীঘি হিসাবে পরিচিত লাভ করেছে।স্থানীয় বাসিন্দারা এই দীঘির সৌন্দর্য দেখে বড় হয়েছেন।তাদের পূর্বপুরুষদের স্মৃতি জড়িয়ে আছে এই দীঘির সাথে।কিন্তু প্রায় ৩০ বছর হয়ে গেল এই দীঘি পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে ওঠার স্বপ্ন আজও অধরাই থেকে গেছে।

নান্দাইল দীঘির স্বচ্ছ জলরাশি,সবুজ ছায়াঘেরা পরিবেশ ও শীতকালে অতিথি পাখির আগমনে এটি হয়ে ওঠে এক প্রাণবন্ত স্থান।প্রতি বছর ঈদ উৎসবে হাজারো পর্যটক ভিড় জমালেও পর্যাপ্ত অবকাঠামোর অভাবে তারা মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন। লোকবলের অভাবে দীঘির পাড়ের মূল্যবান গাছগাছালি লোপাট হচ্ছে,নির্বিচারে গড়ে উঠছে বসতি-বাড়ি,যা দীঘির প্রাকৃতিক সৌন্দর্যকে হুমকির মুখে ফেলেছে।

আমজাদ হোসেন নামে এক বয়স্ক ব্যক্তি বলেন,"আমাদের এলাকা আরও সুন্দর হবে,পর্যটকরা আসবে,আমাদের ছেলে-মেয়েরা চাকরি পাবে। কিন্তু এতদিনেও কিছুই হয়নি।আমাদের সন্তানরা যেন এই স্বপ্নটা দেখতে পারে,এই আমার অনুরোধ। স্থানীয় ব্যবসায়ী জহির হোসেন বলেন,"নান্দাইল দীঘি এলাকায় পর্যটন কেন্দ্র হলে আমরা স্থানীয় ব্যবসায়ীরা অনেক লাভবান হব। নতুন নতুন ব্যবসার সুযোগ তৈরি হবে,আমাদের জীবিকা উন্নত হবে।সরকারের প্রতি আমাদের বিনীত অনুরোধ,পর্যটন কেন্দ্র যেন দ্রুত বাস্তবায়ন হয়।"

নান্দাইল দীঘি কলেজের অধ্যক্ষ সামছুল আলম বলেন,"আমি একজন শিক্ষক হিসেবে চাই আমাদের এলাকা সুন্দর ও উন্নত হোক। পর্যটন কেন্দ্র হলে আমাদের শিক্ষার মানোন্নয়নের পাশাপাশি আরও অনেক কিছু শেখার সুযোগ হবে। আমরা চাই নান্দাইল দীঘি শুধু আমাদের না, সারা দেশের মানুষের কাছে পরিচিত হোক।"উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো.আবুল হায়াত বলেন,"নান্দাইল দীঘির প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ও পর্যটন সম্ভাবনা বিপুল,কিন্তু এর যথাযথ ব্যবহার না হওয়ায় তা অবহেলিত রয়ে গেছে। পর্যটন কেন্দ্রের পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে পারলে এ এলাকা আরও আকর্ষণীয় হয়ে উঠবে।"

উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মিনফুজুর রহমান মিলন বলেন," নান্দাইল দীঘি এলাকায় পর্যটন কেন্দ্র নির্মাণের পরিকল্পনা অনেক পুরোনো।এলাকাবাসীর দীর্ঘদিনের দাবি পূরণ করতে আমরা বদ্ধপরিকর। কিন্তু বিভিন্ন জটিলতার কারণে আজও পর্যটন কেন্দ্র নির্মিত হয়নি।আমাদের হুইপের ঐকান্তিক প্রচেষ্টা এবং সরকারের সহায়তায় দ্রুতই পর্যটন কেন্দ্র স্থাপন হবে বলে আশাবাদী।"

স্থানীয় সংসদ সদস্য ও হুইপ আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন জানান ," নান্দাইল দীঘিতে পর্যটন কেন্দ্র স্থাপনের দাবী দীর্ঘদিনের। পর্যটন কেন্দ্র স্থাপনের জন্য স্থানীয় প্রশাসনের সহযোগিতায় তিনি পর্যটন মন্ত্রণালয় এবং বন ও পরিবেশ মন্ত্রনালয়সহ সরকারি বিভিন্ন দফতরের সঙ্গে সমন্বয় করে যাচ্ছেন। যাতে স্থানীয় যুব সমাজ কর্মসংস্থানের সুযোগ পায় এবং অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী হয়।"যত দ্রুত সম্ভব এটি বাস্তবায়নের জন্য তিনি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।"

এই বিভাগের আরোও খবর

Logo