নদীর অব্যাহত ভাঙ্গনে কমছে চাষযোগ্য ফসলি জমি

এম আমির হোসাইন প্রকাশিত: ২১ জানুয়ারী , ২০২৪ ১০:৩০ আপডেট: ২১ জানুয়ারী , ২০২৪ ১০:৩০ এএম
নদীর অব্যাহত ভাঙ্গনে কমছে চাষযোগ্য ফসলি জমি
পটুয়াখালীর দশমিনা উপজেলায় বুড়াঁগৌরাঙ্গ ও তেঁতুলিয়া নদীর অব্যাহত ভাঙ্গনে কমছে চাষযোগ্য ফসলি জমি। নদী ভাঙ্গন রোধের ব্যবস্থা না থাকায় শত শত একর জমি নদীর গর্ভে বিলীন হওয়ায় এসব ফসলি জমি কমে যাচ্ছে। অপরদিকে লোকসংখ্যা বৃদ্ধির কারনে নির্মান হচ্ছে নতুন নতুন বাড়িঘর।

পটুয়াখালীর দশমিনা উপজেলায় বুড়াঁগৌরাঙ্গ ও তেঁতুলিয়া নদীর অব্যাহত ভাঙ্গনে কমছে চাষযোগ্য ফসলি জমি। নদী ভাঙ্গন রোধের ব্যবস্থা না থাকায় শত শত একর জমি নদীর গর্ভে বিলীন হওয়ায় এসব ফসলি জমি কমে যাচ্ছে। অপরদিকে লোকসংখ্যা বৃদ্ধির কারনে নির্মান হচ্ছে নতুন নতুন বাড়িঘর। 

সরেজমিনে দেখা গেছে, উপজেলার চর-বোরহান, চর-শাহজালাল ও চর হাদিতে প্রায় ১১ হাজার লোকের বসতি। প্রতি পরিবারের গড় লোকসংখ্যা ৬/৭ জন। পরিসংখ্যান অফিস সূত্রে জানা যায়, ২০১১ সালের জরিপে এ উপজেলায় লোকসংখ্যা ১ লাখ ২৩ হাজার ৩শ’ ৮৮ জন। বসত বাড়ির সংখ্যা ২৮ হাজার ৪শ’ ৯০টি। ২০১৮ সালে উপজেলা স্বাস্থ্য  বিভাগের জরিপে উপজেলার ৭টি ইউনিয়নে মোট লোকসংখ্যা ১ লাখ ৪৪ হাজার ২শ’ ৯৮ জন। বসত বাড়ির সংখ্যা ৪৭ হাজার ৯শ’ ১১টি’তে। ফলে ৮ বছরে উপজেলায় মোট লোকসংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে ২০ হাজার ৯শ’ ১০ জন। নতুন বসত বাড়ির সংখ্যা বেড়েছে ১৯ হাজার ৪শ’ ২১টি।

এদিকে উপজেলার বুড়াঁগৌরাঙ্গ ও তেঁতুলিয়া নদীর অব্যাহত ভাঙ্গনে গত কয়েক বছরে উপজেলার বীজ বর্ধন খামার, বাঁশবাড়িয়ার ঢনঢনিয়া, হাজির হাট, আউলিয়াপুর, চরঘূূর্নী, চরহাদি ও চর-বোরহানসহ মোট ১ হাজার ৭শ’ ৯৪ একর জমি নদীর গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। দেশের সর্ববৃহত বীজ বর্ধন খামারের আওতায় ১ হাজার ৪৪ একর জমি থাকলেও এবার চাষাবাদ করা হয় সাড়ে ৩শ’ একর জমি। নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে ৬শ’ ৯৪ একর জমি। ঢনঢনিয়া ও হাজির হাট ৫শ’ একর , চরহাদির ৪শ’ একর এবং চরবোরহানে ২শ’ একর জমি নদীর গর্ভে চলে গেছে। 

উপজেলার কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, ২০১১ সালের জরিপে আবাদযোগ্য জমির পরিমান ১৮ হাজার ৮শ’ ১০ হেক্টর। এক ফসলি জমি ১ হাজার ৬হেক্টর, দো-ফসলি ১৪ হাজার ৩শ’ ৪১ হেক্টর, তিন ফসলি ৩ হাজার ৪শ’ হেক্টর। মোট খাদ্য উৎপাদন হয় ৫৮ হাজার ৩শ’ ৩৪ মেট্রিকটন। ওই সালের লোকসংখ্য অনুসারে খাদ্যের চাহিদা ২০ হাজার ৮শ’ ২৯ মেট্রিকটন। ৩৪ হাজার ২শ’ ৭৯ মেট্রিকটন উদ্ধৃত্ত থাকে। যেহেতু লোক সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে ২০ হাজার ৯শ’ ১০ জন। প্রতিটি লোকের ৪শ’ ৬২ গ্রাম চাউলের খাদ্যের চাহিদা রয়েছে। ওই হিসাবে প্রতি বছরে ৩ হাজার ৫শ’ ২৬ দশমিক ০৫৩৩ মেট্রিকটন চাউলের খাদ্যের চাহিদা বৃদ্ধি পেয়েছে। খাদ্য উদ্ধৃত্ত থাকে ৩০ হাজার ৭শ’ ৫২ দশমিক ৯৪৬৭ মেট্রিকটন।

এ ব্যাপারে বাঁশবাড়িয়া ইউপি চেয়ারম্যান কাজী আবুল কালাম বলেন, উপজেলা সমন্বয় সভায় চরে বেড়িবাঁধ নির্মানের দাবি জানিয়েছি। দশমিনা সদর ইউপি চেয়ারম্যান এ্যাডভোকেট ইকবাল মাহামুদ লিটন বলেন, চরহাদীতে বেঁড়িবাধ নির্মানের জন্য উপজেলা প্রশাসনকে অবহিত করেছি। চরবোরহান ইউপি চেয়ারম্যান নজির আহমেদ সরদার বলেন, চরাঞ্চলে বেড়িবাঁধ না থাকায় ঝড় জলোচ্ছাসে নদী ও সাগরের নোনা পানি ঢুকে কৃষকের ফসলের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি করে তাই চরাঞ্চলে বেড়িবাঁধ নির্মান করা একান্ত প্রয়োজন।

এবিষয়ে উপজেলা কৃষি অফিসার মোহাম্মদ জাফর আহমেদ বলেন, প্রাকৃতিক দূর্যোগসহ চরাঞ্চলে নদী ও সাগরের নোনা পানি ঢুুকে কৃষকের ফসলের ক্ষতি  হচ্ছে।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার নাফিসা নাজ নীরা বলেন, পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃক উপজেলার গুরুত্বপূর্ন কিছু ¯’ানে জিও ব্যাগের মাধ্যেমে ভাঙ্গন রোধ করা হয়েছে। চরাঞ্চলে বেড়িঁবাধ আর নদীর ভাঙ্গন রোধে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহন করা হবে।

পটুয়াখালী-৩ (দশমিনা-গলাচিপা) আসনের সংসদ সংসদ সদস্য এস এম শাহজাদা সাজু এমপি বলেন, পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ে ডিও লেটার পাঠানো হয়েছে। নদীর ভাঙ্গন রোধসহ বেড়িবাঁধের বিষয়ে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহন করা হবে।

এই বিভাগের আরোও খবর

Logo