ঘূর্ণিঝড় মিধিলি ইটভাটা গুলোতে অর্ধকোটি টাকার ক্ষতি

শরীফ হোসাইন প্রকাশিত: ২৩ নভেম্বর , ২০২৩ ০৬:৩৬ আপডেট: ২৩ নভেম্বর , ২০২৩ ০৬:৩৬ এএম
ঘূর্ণিঝড় মিধিলি ইটভাটা গুলোতে অর্ধকোটি টাকার ক্ষতি
এক মাস ধরে ভাটার মালিকরা নতুন ইট তৈরি করে পোড়ানোর জন্য সাজিয়ে রেখেছিলেন। এরই মধ্যে ঘূর্ণিঝড়ের আঘাতে সব ইট কাদামাটিতে পরিণত হয়ে যায়। দু-একজন ভাটা মালিক পলিথিন দিয়ে ঢেকে কিছুটা রক্ষা করতে পারলেও বেশির ভাগ মালিকই কাঁচা ইট রক্ষা করতে পারেননি।

ঘূর্ণিঝড় মিধিলির প্রভাবে ভোলায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে কৃষি খাতে। এর পরই জেলার ইটভাটাগুলোর স্থান। ভাটাগুলোতে শুধু ইট বানানো শুরু হয়েছে। এ রকম প্রায় ১৩০টি ইটভাটায় কাঁচা ইটগুলো গলে পানিতে মিশে গেছে।

এক মাস ধরে ভাটার মালিকরা নতুন ইট তৈরি করে পোড়ানোর জন্য সাজিয়ে রেখেছিলেন। এরই মধ্যে ঘূর্ণিঝড়ের আঘাতে সব ইট কাদামাটিতে পরিণত হয়ে যায়। দু-একজন ভাটা মালিক পলিথিন দিয়ে ঢেকে কিছুটা রক্ষা করতে পারলেও বেশির ভাগ মালিকই কাঁচা ইট রক্ষা করতে পারেননি।

ভোলা সদর উপজেলার উত্তর দিঘলদীর বাঘমারা এলাকায় আমির হোসেন নামের এক ব্যবসায়ীর মায়ের দোয়া ও সাবাব নামের দুটি ভাটায় গত রবিবার গিয়ে দেখা যায়, বৃষ্টি ও জোয়ারের পানিতে কাঁচা ইট গলে কাদামাটিতে পরিণত হয়েছে। বৃষ্টির সময় কাঁচা ইট পলিথিন দিয়ে ঢেকে কিছুটা রক্ষা করতে পারলেও জোয়ারের পানিতে সেগুলো প্লাবিত হয়ে কাদামাটিতে রূপ নিয়েছে।

এ ছাড়া পোড়ানোর জন্য চুল্লিতে সাজানো ইটও গলে গেছে। একই অবস্থা ভোলার অন্যান্য ইটভাটারও। ইটভাটার মালিক আমির হোসেন জানান, একটি ইট আগুনে বসানোর আগে প্রায় চার টাকা খরচ হয়। এ রকম প্রায় ২৫ লাখ ইট নষ্ট হয়েছে তাঁর। এসব ইট মাঠ থেকে তুলে আবার ইট বানাতে এক মাস সময় লাগবে। এ সময় ইটের কারিগর ও শ্রমিকদের বসিয়ে বসিয়ে বেতন দিতে হবে। আবার মাঠ পরিষ্কার করতেও ১০ থেকে ১৫ লাখ টাকা খরচ আছে।

অপরদিকে ঘূর্ণিঝড় মিধিলির প্রভাবে বিধ্বস্ত হয়েছে সদর উপজেলার অ্যাডভান্স অটো ব্রিকস। ঝড়ে তাদের একটি উৎপাদন শেড উড়িয়ে নিয়ে গেছে। অ্যাডভান্স অটো ব্রিকসের পরিচালক মাহমুদ হোসেন সুমন জানান, বিশাল আকারের শেডটি ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে বিধ্বস্ত হওয়ার কারণে তাঁদের প্রায় এক কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। ভাটার অন্য মালপত্র ও যন্ত্রপাতি বিকল হয়ে গেছে। কারখানার উৎপাদনও বন্ধ রয়েছে।

শুধু মায়ের দোয়া, সাবাব কিংবা অ্যাডভান্স অটো ব্রিকস নয় ভোলার সদর উপজেলার সোনালী, জাহিদ, রিয়াদ, বাঘা, সেভেন স্টার, রূপালী-১, রূাপালী-২, খান, প্রাইম, ফাইভস্টার, পান্না, মুকুল, একতা, অ্যাডভান্স ভাটাসহ ২৬টি ইটভাটার একই অবস্থা। এসব ভাটার প্রায় সব কটিই কাদা-পানিতে একাকার।

চরফ্যাশন ইটভাটা মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. বাবুল জানান, উপজেলার প্রায় ৩০টি ভাটার অনেকেই ইট শুকিয়ে পোড়ানোর প্রস্তুতি নিয়েছিলেন। কারো চুল্লিতে ইট সাজানো হয়ে গিয়েছিল। কেউ বৃহস্পতিবার চুলায় আগুন দিয়েছেন। কিন্তু শুক্রবার সকাল থেকে টানা বৃষ্টি শুরু হলে ইট পলিথিন দিয়ে ঢেকে দেন। শনিবারে আসে উচ্চ জোয়ার। এক রাতেই সব শেষ।

ভোলা জেলা ইটভাটা মালিক সমিতির সভাপতি মোশারেফ হোসেন দুলাল বলেন, ভোলার এমন কোনো ভাটা নেই, যার ক্ষতি হয়নি। আমার নিজেরও ১০ লাখ ইট নষ্ট হয়ে গেছে। গড়ে একেকটি ভাটার ৩০ থেকে ৪০ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। সব মিলিয়ে ইটভাটার প্রায় অর্ধকোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে।

এই বিভাগের আরোও খবর

Logo