কুষ্টিয়া কুমারখালীতে যান্ত্রিকযুগেও গরমে হাতপাখা তৈরিতে ব্যস্ত কারিগররা

মাহাবুব হোসেন প্রকাশিত: ৯ এপ্রিল , ২০২৪ ০৮:২৫ আপডেট: ৯ এপ্রিল , ২০২৪ ০৮:২৫ এএম
কুষ্টিয়া কুমারখালীতে যান্ত্রিকযুগেও গরমে হাতপাখা তৈরিতে ব্যস্ত কারিগররা
তালের পাখা প্রাণের শখা, শীতকালে যায় না দেখা, গরমকালে ভালবাসা ' গ্রাম বাংলায় এমন একটি প্রবাদ থাকলেও বৈজ্ঞানিক, আধুনিক ও যান্ত্রিক যুগে কদর বেড়েছে হাতে তৈরি তালপাতা পাখা বা শীতল পাখা । তবুও পৈতৃক এই পেশাকে যুগ যুগ ধরে আজও বুকে লালন পালন করে রেখেছে কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার সদকী ইউনিয়নের মালিয়াট গ্রামের দুই শতাধিক পরিবার ।

 তালের পাখা প্রাণের শখা, শীতকালে যায় না দেখা, গরমকালে ভালবাসা ' গ্রাম বাংলায় এমন একটি প্রবাদ থাকলেও বৈজ্ঞানিক, আধুনিক ও যান্ত্রিক যুগে  কদর বেড়েছে হাতে  তৈরি তালপাতা পাখা বা শীতল পাখা । তবুও পৈতৃক এই পেশাকে যুগ যুগ ধরে আজও বুকে লালন পালন করে রেখেছে কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার সদকী ইউনিয়নের মালিয়াট গ্রামের  দুই শতাধিক পরিবার ।
 
গ্রীষ্মের উষ্ণতা বাড়ার সাথে সাথে প্রতিদিনই খুব সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত শরীর শীতল করা তাল পাতার হাতপাখা তৈরিতে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছে এখানকার কারিগররা। 

জানা গেছে, গ্রাম বাংলার এই প্রাচীন হাতপাখা তৈরির প্রধান কাঁচামাল তাল গাছের পাতা, বাঁশ, সুঁতা বা লোহার চিকন তার (জি আই তার)। আর সাজসজ্জার জন্য ব্যবহার করা হয় রঙ বেরঙের রং এবং কয়েকজন নারী ও পুরুষ মিলে একটি করে দল গঠন করে তৈরি করে পাখা।

 মালিয়াট গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, কেউ তালপাতা গুলো পানি দিয়ে ভেজানোর কাজ করছে, কেউ পাতা রোদে শুকাচ্ছে। কেউকেউ আবার পাতা কেঁটে সাইজ করছে, বাঁশ চিরে শলা তৈরি করছে। কেউবা সুঁতা ও বাঁশের শলাতে রং লাগাচ্ছে। এভাবেই কয়েকজনের হাতের ছোঁয়ায় তৈরি পাখা গুলো কেউ আবার বিক্রয় স্থলে নেওয়ার জন্য বোঝা বাঁধছে। 

জেলা ও জেলার বাইরের বিভিন্ন এলাকা থেকে পাখা তৈরির প্রধান কাঁচামাল তালের পাতা পিচ প্রতি কেনা হয় ৫ - ৮ টাকা দরে। প্রতি পিচ পাতায় ৮ - ১০ টি পাখা তৈরি করা যায়। প্রতি পিচ বাঁশ কেনা হয় ১৫০ থেকে ২০০ টাকায়।প্রতিটি বাঁশে শতাধিক পাখা হয়। প্রতি পিচ পাখা তৈরিতে খরচ হয় ৬ থেকে ৮ টাকা। তৈরিকৃত পাখা গুলো পাইকারী বিক্রয় হয় ১২ থেকে ১৪টাকায় আর খুচরা বিক্রয় হয় ১৮ থেকে ২০  টাকা। এখানকার তৈরিকৃত পাখা গুলো স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে জেলার বাইরেও বিক্রি করা হয়।

 কারিগররা জানায়, সরকারি সুযোগ সুবিধা পেলে এই  পৈতৃক পেশাকে আরো আধুনিক করে, দেশের শিল্প খাতে আমরাও ভুমিকা রাখতে পারবো।

 এ বিষয়ে উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা ফেরদৌস নাজনীন বলেন , ইতি মধ্যে আমরা বিভিন্ন মহিলা উদ্যেগতাদের বিভিন্ন ট্রেনিং এর মাধ্যমে বিভিন্ন প্রশিক্ষন দিয়ে থাকি । সামনে আবার যদি কোণো প্রশিক্ষনের কর্মসুচি তাকে অবশ্যই আমরা তাদের প্রশিক্ষনের আওয়ায় আনবো । 

এ বিষয়ে কুমারখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ মাহাবুবুল হক  বলেন,  আমি জানতে পেরেছি কুমারখালী সদকী ইউনিয়নের মালিয়াট গ্রামে প্রায় ২ শতাধিক পরিবার পাখা বানিয়ে তাদের সংসার চালাচ্ছে। আমাদের উপজেলা প্রশাসন তাদের এই পাখা বিক্রি বাড়াতে উদ্যোক্তা ম্যাপ ও উদ্যোক্তা এ্যাপ তৈরি করেছে এবং তাদের নিয়ে একটি উদ্যোক্তা মেলাও করা হয়েছে। তারা যদি চাই তাদের সহজ শর্তে ঋনের  ব্যবস্থা করবে উপজেলা প্রশাসন ।

এই বিভাগের আরোও খবর

Logo