কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতাল এ দূর্নীতির খতিয়ান

কামরুল হাসান প্রকাশিত: ৩১ আগস্ট , ২০২৫ ১৫:৪৪ আপডেট: ৩১ আগস্ট , ২০২৫ ১৫:৪৪ পিএম
কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতাল এ দূর্নীতির খতিয়ান
নেপথ্যে কলকাঠি নাড়ে কয়েকজন কোটিপতি কর্মচারী,ইন্ধনদাতা স্বয়ং তত্বাবধায়ক, নিয়োগ/অফিস আদেশ ছাড়া কর্মরত বিভিন্ন জন, অর্থ আত্মসাৎ হয় সুক্ষ কৌশলে

কক্সবাজার বাসীর চিকিৎসার সর্বশেষ ঠিকানা এখন নিজেই দূরারোগ্য রোগে আক্রান্তকাগজে কলমে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট এই হাসপাতালের উপর নির্ভরশীল কক্সবাজার জেলা ২৯ লক্ষ জনগণপার্শ্ববর্তী জেলা বান্দরবনের তিন উপজেলা লামাআলীকদম ও নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার প্রায় ৩ লক্ষ জনগণরোহিঙ্গা ১৫ লক্ষ ও পর্যটক, জেলার মেগা প্রকল্পরোহিঙ্গা ক্যাম্প এবং বিভিন্ন চাকরি তে আরো ১ লক্ষ জনগণ সবসময় কক্সবাজার থাকে । এরকম একটি গুরুত্বপূর্ণ জেলায় জেলা সদর হাসপাতালে ২০২৩ সালের ১৯শে সেপ্টেম্বর তত্বাবধায়ক হিসেবে যোগদান করেন মং টিন ঞো । যোগদান করার পর থেকে ধীরে ধীরে তৈরি করতে থাকেন নিজস্ব বলয় ও সিন্ডিকেট তার ফলস্রুতিতে ভেঙ্গে পড়তে শুরু হয় হাসপাতালের স্বাস্থ্য সেবা ব্যবস্থা । তিনি ধরা কে সরা জ্ঞান করে সকল অন্যায়কে প্রশ্রয় দিতে শুরু করলে ওয়ার্ড বয় হয়ে গেছে ডাক্তারপিয়ন হয়ে যায় কর্তানার্স হয়ে উঠে স্বর্গের দূতএভাবে প্রতিটি সেক্টর নিজ নিজ দায়িত্বের বাইরে গিয়ে যে যেমনে পারে দখল করতে থাকে পদ পদবি । এসব কিছুতে নুন্যতম দৃষ্টি দেয় নাই সিন্ডিকেট বানিজ্যের মূলহোতা ও অত্র হাসপাতালের তত্বাবধায়ক মং টিন ঞো । তিনি সবসময় টাকা আর টাকা ছাড়া কোন কিছুই ছিনে নাই । বারবার জনবল সংকটের কথা বলে স্বাভাবিক চিকিৎসা সেবা ব্যাহত করে চিকিৎসা খাত কে তুলে দিয়েছেন সিন্ডিকেটের হাতে । তার এই হাসপাতালে যোগদানের পর থেকে ঠিক নাই খাবার মানরোগিদের ঔষধ প্রাপ্তি । শেষ ছিল না রোগির স্বজনদের অভিযোগ এর গত ২রা আগষ্ট রামু থেকে আগত একটা সাপে কাটা রোগী কে জরুরি বিভাগে কোন ধরনের চিকিৎসা না দিয়ে সরাসরি ওয়ার্ডে পাঠিয়ে দেওয়া হয় যেখানে কোন মেডিকেল অফিসার ছিল না৬ই আগষ্ট বিষপান করা একজন মহিলা রোগিকে জরুরি বিভাগে কোন ধরনের চিকিৎসা না দিয়ে/ওয়াশ না করে মহিলা মেডিসিন ওয়ার্ডে পাঠিয়ে দেয়া হয়সেখানে নিয়ে যাওয়ার পরও ওয়াশ না করায় রোগীর স্বামী ও স্বজনরা জানতে চাইলে বলে ওয়ার্ডে কোন ওয়াশ করার নিয়ম নাই এবং ডাক্তার এর খোজ নেয়া শুরু করলে জানতে পারে এই মুহুর্তে ইন্টান ডাক্তার ছাড়া আর কেউ নাই আগামী কাল সকালে স্যার আসলে দেখবে

এই হাসপাতালেওয়ার্ড মাষ্টার থাকার কথা ২ জন আছে ৩ জননিজের স্বার্থে শিমুল কান্তি দে কে অবৈধভাবে ওয়ার্ড মাষ্টার এর কাজ করাচ্ছে তত্বাবধায়ক মং টিন ঞো যার কোন বৈধ নিয়োগ বা আদেশ নাইঅথচ সে দখল করে আছে রুম নং ২১৯, অবাক করার বিষয় নাম আছে ওয়ার্ড বয়ের তালিকায় ৩ নং এ।তাও এই শিমুল কান্তি দে কে অবৈধ ভাবে আউট সোর্সিং এ অর্ন্তভূক্ত করা হয় বিদেশ চলে যাওয়া মনি কামালের নামের স্থলেএখানেই শেষ নয় এই শিমুল কান্তি দে হচ্ছে টাকার মেশিন যত অবৈধ কর্মকান্ড আছে সব তার নখদর্পনে কারন হলো এই হাসপাতালের দূনীতি কারনে সদ্য বদলী হওয়া তুষার কান্তি দে হরো তার আত্মীয় এবং গুরু । এ ব্যাপারে জানতে শিমুল কান্তি দে এর ব্যবহৃত মোবাইল নং ০১৮২৭৪৯৯৭৩২ এ ফোন করলে বিস্তারিত তথ্য না দেওয়ায় এই প্রতিবেদক তার মুখোমুখি হলে সে বলে আমি দীর্ঘদিন আইওএম এ কর্মরত ছিলাম ওখানে প্রকল্প শেষ হওয়ার পর আউটসোর্সিং এ আরেক জন ষ্টাফ চলে যাওয়ায় ওখান থেকে আমাকে ১০০০০ করে টাকা দেওয়া হতএখন গত জুন মাস থেকে আউটসোর্সিং ও বন্ধআমি এখানে কোন ধরনের বৈধ নিয়োগ পত্র ছাড়া ওয়ার্ড মাষ্টার হিসেবে কাজ করতেছিআমার মতো এ রকম আরো অনেকেই অবৈধ ভাবে এখানে কর্মরত আছে । কেন বেতন ছাড়া এখানে কাজ করেন কোন মধু এখানে জড়িত তখনই বেরিয়ে আসে তত্বাবধায়ক মং টিন ঞো এর নাম উনি আমাকে আগামী প্রজেক্টে নিয়োগ দেবেন এই আশ্বাসের কারনে এখানে থেকে গেছি, উনার অনুমতি ছাড়াতো আমি এখানে কাজ করতেছি না । আরো যদি আপনাদের কোন কিছু জানার থাকে তাহলে উনার থেকে জানতে পারেন ।এই বিষয়ে জানার আগে তথ্য উপাত্ত সংগ্রহ করে জানা যায় কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালে ওয়ার্ডবয়আয়াক্লিনার ও টেকনোলজিষ্ট কর্মরত আছে ১৩০ জনএর মধ্যে আউটসোর্সিং এর ৬৪ জন কর্মচারী আছে বলে জানা গেছে, কিন্তু বাস্তব চিত্র ভিন্ন এখানে কর্মরত আছে ৫ জন,যাদের বেতন হচ্ছে সরকারী নিয়ম অনুসারে ১৬১৩০ টাকা করে পাওয়ার কথাকিন্তু উনাদের কে দেয়া হয় ১০০০০ টাকা করে, বাকি ৬১৩০ টাকার জন্য তাদের থেকে নেওয়া হয় অগ্রীম চেক নিয়ে নেয় যাতে করে কেউ উনার কথার বাহিরে যেতে না পারে । আউটসোর্সিং নাম আছে কিন্তু কর্মরত নেই ৬ জন কর্মচারী কিন্তু বেতন উত্তোলন করা হয়এই টাকা কার পকেটে যায়। এ টাকা পুরোটাই মেরে দিচ্ছে তত্বাবধায়ক ও আউটসোর্সিং সুপারভাইজার অভি । এ ব্যাপারে এই প্রতিবেদক ভূক্তভোগী আউটসোর্সিং ষ্টাফদের নাম না প্রকাশ করার শর্তে কয়েকজন কর্মচারীর সাথে কথা বলে ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন এবং উক্ত কর্মচারীরা যে কোন জায়গায় গিয়ে সাক্ষ্য দিতে রাজি আছে এবং তাদের বক্তব্যের ভিডিও ক্লিপ প্রতিবেদকের কাছে সংরক্ষিত আছে , এ ব্যাপারে জানার জন্য আউটসোর্সিং এর সুপারভাইজার অভির ব্যবহৃত ০১৮১৯***১৬৮ নং এ অনেকবার কল করার পর এই প্রতিবেদক নিজের পরিচয় দিয়ে বার্তা পাঠালেও সে ফোন রিসিভ ও করে নাই কোন ধরনের বার্তাও দেয় নাইপরে বিশ্বস্থ সূত্রে জানা যায় সে শুধুমাত্র হাসপাতালের তত্বাবধায়ক এর ফোন ছাড়া অপরিচিত কোন ফোন রিসিভ করেন নাতাই উনার বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয় নাই।এই ব্যাপারে জানতে তত্বাবধায়ক মং টিন ঞো এর ব্যবহৃত ০১৭৪৯***৬৩৯ নং এ প্রতিবেদকের পরিচয় দিয়েও বক্তব্য নিতে না পারায় পরবর্তীতে তার সাথে সাক্ষাৎ করলে বলেন এধরনের কোন ঘটনা তার জানা নেই, পরে যখন এই প্রতিবেদকের কাছে তথ্য উপাত্ত আছে বলা হয় তখন ভিন্ন সুরে স্বীকার করে বলেন আমি তো তাদের একাউন্টে টাকা দিই এখানে আমার দায়িত্ব শেষ, যখন পাল্টা প্রশ্নে জিজ্ঞাসা করা হয় সরকারের এই টাকা কোথায় যাচ্ছে তা কি আপনার দেখার দায়িত্বের মধ্যে পড়ে না বা আপনার এখানে কর্মরত কর্মচারীরা ঠিক মতো তাদের বেতন/পারিশ্রমিক পাচ্ছে কিনা এটা জানা কি আপনার উচিৎ না, তখন বলে আমি একটু করে জেনেছি কিছু কিছু কর্মচারীর থেকে টাকা নেওয়া হয়েছে এগুলো ফেরত দেওয়ার ব্যবস্থা করা হচ্ছে ।এ ব্যাপারের জানার জন্য তত্বাবধায়ক মং টিন ঞো কে বারবার অনুরোধ করার পরও আউটসোর্সিং এর সুপারভাইজার অভি কে ফোন করার কথা বললে তিনি কৌশলে এড়িয়ে যান, এক পর্যায়ে আবারও যখন জানতে চাওয়া হয় সরকারী অর্থ তছরুপের দায় আপনি কিভাবে এড়াবেন তখন উনি চুপ করে থাকেন ।

এ ব্যাপারের এই প্রতিবেদক গত ১৭ই আগষ্ট বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডা: সেখ ফজলে রাব্বির সাথে দেখা করলে জানান সব গুলো বিষয় নোট নিলাম সব গুলো বিষয় দ্রুত একটা ব্যবস্থা নেওয়া হবে ।কিন্তু দূ:ভাগ্য এখনও দৃশ্যমান কোন পরিবর্তন চোখে পড়তেছে না ।

উল্লেখ্য যে, ইতমধ্যে এই তত্বাবধায়ক মং টিন ঞো এর দূর্নীতি, অনিয়ম ও সিন্ডিকেট বানিজ্যের বিরোদ্ধে কক্সবাজারের বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন মানববন্ধন পালন করেছে কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালের উত্তর গেইটে ।

এই বিভাগের আরোও খবর

Logo