উলিপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসক ও যন্ত্রপাতির সংকটে সেবা বিঘ্নিত

মোঃ রেজাউল ইসলাম প্রকাশিত: ৬ এপ্রিল , ২০২৫ ১১:৪০ আপডেট: ৬ এপ্রিল , ২০২৫ ১১:৪০ এএম
উলিপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসক ও যন্ত্রপাতির সংকটে সেবা বিঘ্নিত
উলিপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসক ও প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতির সংকটে স্বাস্থ্যসেবা মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে

উলিপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসক ও প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতির সংকটে স্বাস্থ্যসেবা মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। ৫টি ইসিজি যন্ত্রের মধ্যে ৪টিই ছয় মাস ধরে অকার্যকর, ডিজিটাল আলট্রাসনোগ্রামের প্রিন্টার নষ্ট, এবং সার্জারি চিকিৎসক না থাকায় এক বছরেরও বেশি সময় ধরে সব ধরনের অপারেশন বন্ধ। এতে উপজেলার পাঁচ লক্ষাধিক মানুষ স্বল্পমূল্যে প্রয়োজনীয় চিকিৎসাসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।

উলিপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে বর্তমানে ১৬ জন চিকিৎসকের পদ থাকলেও কর্মরত মাত্র ৩ জন। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক, বিশেষ করে গাইনি, শিশু, মেডিসিন ও নাক-কান-গলা বিভাগে কোনো চিকিৎসক নেই। এছাড়া ল্যাব টেকনিশিয়ান, অফিস সহায়ক, ওয়ার্ড বয় ও পরিচ্ছন্নতাকর্মীর পদও শূন্য।

সম্প্রতি হাসপাতাল পরিদর্শন করে দেখা গেছে, ইসিজি ও আলট্রাসনোগ্রামের অভাবে রোগীদের বাইরের ডায়াগনস্টিক সেন্টারে যেতে বাধ্য করা হচ্ছে। অনেকেই আর্থিক সমস্যার কারণে পরীক্ষা করাতে পারছেন না।

থেতরাই গ্রামের বাসিন্দা মোজাম্মেল হক (৬০) হার্নিয়ার সমস্যা নিয়ে চিকিৎসা নিতে এসেছিলেন। কিন্তু অপারেশন করার মতো সার্জন না থাকায় তাকে কুড়িগ্রাম সদরে যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়। ধরণীবাড়ি ইউনিয়নের বাসিন্দা লুৎফর রহমান (৬৬) শ্বাসকষ্ট নিয়ে ভর্তি হয়েও ইসিজি যন্ত্র অকার্যকর থাকায় পরীক্ষা করতে পারেননি।

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ বলেন, “যন্ত্রপাতি মেরামতের জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে, কিন্তু সাড়া মেলেনি। চিকিৎসক ও স্টাফ সংকটের কারণে আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করেও সেবা দিতে হিমশিম খাচ্ছি।”

ওয়ার্ড বয় কর্তৃক ফোঁড়া কাটার অভিযোগ সম্পর্কে তিনি বলেন, “সার্জারি চিকিৎসক না থাকায় জরুরি ক্ষুদ্র অপারেশনগুলো জরুরি বিভাগে করা হয়, তবে ওয়ার্ড বয়রা তা করে না। বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হবে।”

দৈনিক ২৫০-৩০০ বহির্বিভাগীয় ও ৫০ জন অন্তঃবিভাগীয় রোগী সেবা নিলেও সংকটের কারণে এই স্বাস্থ্যকেন্দ্রটি ঠিকমতো কাজ করতে পারছে না। স্থানীয়দের দাবি, দ্রুত চিকিৎসক নিয়োগ ও যন্ত্রপাতি মেরামতের ব্যবস্থা করা হোক, যাতে সাধারণ মানুষ প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা পেতে বাধাগ্রস্ত না হন।

এই বিভাগের আরোও খবর

Logo