আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনকে সামনে রেখে কাঠালিয়ার প্রার্থীদে প্রচার প্রচারনায় ব্যস্ত সময় কাটাছে। তবে আওয়ামী লীগ দলীয় প্রার্থীদের প্রচারনায় বেশি দেখা যাচ্ছে। অন্য দলের প্রার্থীরা এখন পর্যন্ত তেমন প্রচার-প্রচারনায় অংশ নেননি।
আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনকে সামনে রেখে কাঠালিয়ার প্রার্থীদে প্রচার প্রচারনায় ব্যস্ত সময় কাটাছে। তবে আওয়ামী লীগ দলীয় প্রার্থীদের প্রচারনায় বেশি দেখা যাচ্ছে। অন্য দলের প্রার্থীরা এখন পর্যন্ত তেমন প্রচার-প্রচারনায় অংশ নেননি।
কাঠালিয়া উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে ৮ জন, ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৫ জন ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৪ জন সহ ১৭ জন প্রার্থীর পদচারনায় হাট বাজার ও গ্রামের চায়ের দোকান গুলো মুখরিত হয়ে উঠেছে। এদের মধ্যে জাতীয় পার্টি ও একজন স্বতন্ত্র, বাকী ১৫ জন আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে জড়িত।
স্থানীয় রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা এর কারন হিসেবে মনে করছে, সরকার নির্বাচনী আইনে সংশোধন আনায় এবং নির্বাচনে দলীয় প্রতীক উঠিয়ে দেওয়ায় সম্ভাব্য প্রার্থীদের মধ্যে আস্থা ও বিশ^াস বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে প্রার্থীদের সংখ্যা বেড়েছে এবং আগে থেকে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছে।
ইতোমধ্যে প্রার্থীদের পক্ষ থেকে নানা রংগের পোষ্টার, ব্যানার, ফেস্টুন ও বিল বোডে পুরো উপজেলার হাট-বাজার ও গ্রাম ছয়লাব হয়ে গেছে। প্রতিদিন নিজের পক্ষে ভোটারের শক্তি জানান দেওয়ার জন্যে চলছে মটর সাইকেল মহড়া। সভা-সমাবেশে ভোটারদের দেয়া হচ্ছে চমকপ্রদ প্রতিশ্রæতি। প্রার্থীরা বিভিন্ন ধর্মীয় অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে ধর্মীয় অনুশাসনের কথা শুনিয়ে নিজের পক্ষে ভোট নেয়ার চেষ্টা করছেন। কেউ মাদক মুক্ত উপজেলা, কেউ টাকা জমা রেখে গ্রাম্য শালিশ ব্যবস্থা বিলুপ্ত করা, কেউ চাাঁদাবাজ দুর করা আবার কেউ বেকারদের কর্মসংস্থান ও গ্রামকে শহরে রুপান্তরিত করার প্রতিশ্রæতি দিয়ে যাচ্ছে। তবে প্রার্থীদের এ প্রতিশ্রæতি আমলে নিচ্ছেন না ভোটাররা। কারন বিগত নির্বাচন গুলোতে এ রকম বহু প্রতিশ্রæতি দিয়েছেন। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয়নি।
নির্বাচনকে সামনে রেখে বিভিন্ন প্রার্থীরা ইতোমধ্যে গণসংযোগ, উঠান বৈঠক, পথসভা, মিটিং মিছিল ও ইফতার পার্টিতে ব্যস্ত রয়েছে। প্রতিদিন উপজেলার সর্বত্র হাট-বাজার ও চায়ের দোকনগুলোতে চলছে নির্বাচনী আলাপ-আলোচনা। আসন্ন কাঠালিয়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগ দলীয় যে সকল প্রার্থী দিনরাত মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন তারা হলেন বর্তমান চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক মোঃ এমাদুল হক মনির, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান গোলাম কিবরিয়া সিকদার, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদ মোঃ তরুন সিকদার, ঝালকাঠি জেলা আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি এ্যাডভোকেট আঃ জলিল, উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারন সম্পাদক মোঃ কাওসার আহমেদ জেনিভ সিকদার, ব্যাবসায়ী মোঃ শহীদুল ইসলাম, জাতীয় পার্টি নেতা মোঃ মোদাচ্ছের হোসেন মিঠু এবং আওয়ামী লীগ নেতা মোঃ ফরিদ উদ্দিন তালুকদার।
অপরদিকে ভাইস চেয়ারম্যান পদে যাদের নাম শোনা যাচ্ছেন তারা হলেন, বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান ও উপজেলা ছাত্রলীগ সাবেক সভাপতি মোঃ বদিউজ্জামান বদু সিকদার, উপজেলা বিএনপি’র সাবেক সভাপতি ও আওয়ামী লীগ নেতা ডাঃ আব্দুল জলিল মিয়াজী, উপজেলা হিন্দু বৈদ্য ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ও আওয়ামী লীগ নেতা গৌতম মন্ডল, ঝালকাঠি জেলা ছাত্রলীগের সহ সভাপতি মোঃ সোহেল খান সাদ্দাম ও ঠিকাদার মোঃ আরিফ হোসেন।
মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান হিসেব যাদের তৎপরতা দেখা যাচ্ছে তারা হলেন, বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান ফাতিমা খানম, আওয়ামী লীগ নেত্রী নাজনিন আক্তার তুলি, আওয়ামী লীগ নেত্রী মোসাঃ শেফালী বেগম, চেঁচরীরামপুর ইউনিয়ন মহিলা আওয়ামী লীগ সভানেত্রী মোসাঃ নাজমা আক্তার।
সাধারণ মানুষ ধারনা করছেন প্রতীক না থাকলে এবং প্রশাসন নিরেপক্ষ ভূমিকা পালন করলে পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দেয়া সম্ভব হবে।
দক্ষিন আউরা গ্রামের মোঃ শাহিন জমাদ্দার বলেন- নির্বাচনের আগে প্রার্থীরা অনেক ওয়াদা দেন, কিন্তু নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে কোন ওয়াদাই রাখেন না। নির্বাচনের পূর্বের এসব ওয়াদা আমাদের কাছে মূল্যহীন।
উপজেলা শহরের রিক্সা চালক মোঃ ইব্রাহিম জানান, নির্বাচনে প্রতীক না থাকলে আমরা ইচ্ছামত ভোট দিতে পারবো।
কাঠলিয়া বাজারের ব্যবসায়ী সোহরাব হোসেন বলেন, বিগত নির্বাচন গুলোতে মানুষ পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিতে পারেনি। উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে প্রতীক না থাকলে আমরা পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিতে যাবো।
কাঠালিয়া বাজার ব্যবসায়ী সমিতির কোষাধ্যক্ষ মোঃ রফিকুল খোকন জানান, এবারের নির্বাচনে প্রতীক না থাকলে প্রার্থীদের কাছে ভোটারদের কদর বারবে। আমরা পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করতে পারবো।
সাবেক জেলা পরিষদ সদস্য মোঃ শাওখায়াত হোসেন অপু সিকদার বলেন, নির্বাচন কমিশন যদি উৎসব মুখর ভোটের পরিবেশ তৈরি করতে পারে তবে এ নির্বাচনে ভোটারের উপস্থিতি বৃদ্ধি পাবে।
উল্লেখ্য যে, কাঠালিয়া উপজেলায় ৬টি ইউনিয়নে ৯৩ হাজার ২২০ জন ভোটার রয়েছে। ৪০টি কেন্দ্রে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচন কমিশনের তথ্য মতে কাঠালিয়া উপজেলায় তৃতীয় ধাপে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।