চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জে গ্রাম্য শালিসি বৈঠকের মাধ্যমে স্ত্রী নয়ন
বেগমকে তালাক দিয়ে মাত্র ৯ মাসের শিশু সন্তান ইসরাত জাহান
ইভাকে অন্যত্রে বিক্রি করে দেয়ার অভিযোগ উঠেছে পাষন্ড পিতা
ইকবার মুন্সী’র বিরুদ্ধে।
গর্ভের শিশুকে ফিরে পেতে থানায়
লিখিত অভিযোগের ১৮ দিনেও পুলিশ কোনো প্রদক্ষেপ না
নেয়ায় পাগল প্রায় ওই শিশুটির গর্ভধারিনী মা।
থানায় লিখিত অভিযোগের প্রেক্ষিতে জানা যায়, গত দুই বছর
পূর্বে ফরিদগঞ্জ উপজেলার বাসারা গ্রামের আব্বাস মুন্সির
ছেলে ইকবাল মুন্সির সাথে একই উপজেলার পূর্ব দায়চারা
গ্রামের মৃত শাহআলম মোল্লার মেয়ে নয়ন বেগমের সাথে
ইসলামী শরিয়াহ মোতাবেক পারিবারিক ভাবে বিয়ে হয়। বিয়ের
পর থেকে স্বামী-ইকবাল মুন্সি তার স্ত্রীকে যৌতুকের দাবীতে
বিভিন্ন অজুহাতে একাধিকবার মারধর করে। চলমান অত্যাচার
নির্যাতনের মধ্যদিয়ে ইকবাল মুন্সি-নয়ন বেগম দম্পত্তির ঘর
আলোকিত করে ইসরাত জাহান ইভা নামে এক কন্যা সন্তান
আসে। কিš‘ পাষÐ স্বামী কোনো কাজ কর্ম না করে স্ত্রীর ওপর
নির্যাতন’র মাত্রা আরো বাড়িয়ে দেয়। এক পর্যায়ে গতবছরের
১৬ ডিসেম্বর একটি গ্রাম্য শালিসি বৈঠক হয়। বৈঠকে
সিদ্ধান্ত অনুযায়ী নয়ন বেগমের কাছ থেকে খালি স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর
রাখা হয়, এ সময় শালিসদার বলেন, ইকবাল মুন্সি ও নয়ন বেগম
দম্পত্তির তালাক কার্যকর হয়ে গেছে। পরে জোর পূর্বক নয়ন
বেগমের কোল থেকে তার একমাত্র শিশু সন্তান ইসরাত জাহান ইভা
(৯ মাস) কে ছিনিয়ে নিয়ে যায় ইকবাল মুন্সির পরিবারের
লোকজন। এরপর থেকেই গর্ভধারী মা নয়ন বেগম তার শিশু
সন্তানকে ফিরে পেতে বিভিন্ন মানুষের দারে দারে ঘুরে কোনো
সমাধান না পেয়ে থানায় লিখিত অভিযোগ করেন।
নয়ন বেগম জানান, আমার স্বামী আমাকে যৌতুকের জন্য
বিভিন্ন সময়ে মারধর করে। পরে শালিসদের কাছে বিচার দিলাম
সংসারে সুখের আশায়, কিš‘ সুখতো দূরের কথা। উল্টো তারা
আমার সন্তানকেই কোল থেকে ছিনিয়ে নিয়ে যায়।
নয়ন বেগম আরও বলেন, চাঁদপুর জেলার শাহরাস্তি উপজেলার
ওয়ারুক গ্রামে ১ লক্ষ ৩০ হাজার টাকা মূল্যে বিক্রি করে দেয়
আমার স্বামী ইকবাল মুন্সি। আমি আমার সন্তানকে ফিরে পেতে
চাই।
নয়ন বেগমের স্বামী ইকবাল মুন্সি মুঠোফোনে জানান, নয়ন
বেগমের সাথে তার শালিসী বৈঠকের মাধ্যমে তালাক
হয়েগেছে। আমাদের ইউনিয়নের ইউপি সদস্য সুমন, গ্রাম্য
শালিস আশু, জামাল, আবু তাহের, ফারুক হোসেন ও বাবুল নামে
ব্যক্তিদের উপস্থিতিতে তালাকের পরে শিশু সন্তানকে আমার
জিম্মায় দেয়া হয়। সন্তান বিক্রির যে অভিযোগ থানায় করেছে,
সেটি সঠিক নয়। আমি আমার এক সম্পর্কের খালাত বোনের
কাছে সন্তানকে লালন পালন করার জন্য দিয়েছি।
এবিষয়ে ফরিদগঞ্জ উপজেলার সুবিদপুর পূর্ব ইউনিয়নের ইউপি
সদস্য সুমন বলেন, শুনেছি শিশুটিকে পালক দেয়া হয়েছে,
বিক্রির বিষয় আমি জানিনা।
অভিযোগের বিষয়টি নিশ্চিত করে ফরিদগঞ্জ থানার উপপুলিশ
পরিদর্শক (এসআই) মো. মাহফুজ বলেন, শিশুটিকে উদ্ধার
অভিযান অব্যাহত আছে।