সংযোগ সড়ক বাস্তবায়নের দাবিতে লংগদুতে মানববন্ধন

তাজ মাহমুদ প্রকাশিত: ২৯ মে , ২০২৫ ১৮:১৩ আপডেট: ২৯ মে , ২০২৫ ১৮:১৩ পিএম
সংযোগ সড়ক বাস্তবায়নের দাবিতে লংগদুতে মানববন্ধন
রাঙ্গামাটির লংগদু-নানিয়ারচর সড়ক নিয়ে ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে মানববন্ধন

২৯ মে, ২০২৫ বৃহস্পতিবার সকাল ১১ টায় রাঙ্গামাটিরর লংগদু উপজেলার সর্বস্তরের ভুক্তভোগী জনগনের উদ্যোগে রাঙ্গামাটি-লংগদু ভায়া নানিয়ারচর সড়ক নিয়ে উপজাতীয় সন্ত্রাসী সংগঠন ইউপিডিএফ এর ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে এবং সংযোগ সড়কটি অতিদ্রুত  বাস্তবায়নের দাবিতে রাস্তার কাজ শুরুর দাবিতে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ কর্মসূচী পালন করে।'

উক্ত মানববন্ধনটি প্রেসক্লাবের সভাপতি এবিএস মামুনের সভাপতিত্বে ও মোঃ নুরুল ইসলাম সেলিমের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত হয়। এতে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের লংগদু উপজেলা সভাপতি মোঃ তোফাজ্জল হোসেন, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী লংগদু উপজেলা আমীর মাওলানা মোঃ নাছির উদ্দীন, ইসলামী শাসনতন্ত্র আন্দোলনের হাফেজ আব্দুল মতিন, বিএনপির সাধারন সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ, যুগ্ম সাধারন সম্পাদক শাহ আলম মুরাদ,শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের সভাপ্পতি মোঃ মমঞ্জুরুল হক, ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম কেন্দ্রীয় স্বমন্বয়ক বি এস কলিন্স চাকমা, লংগদু প্রেসক্লাবের প্রধান উপদেষ্টা মোঃ এখলাস মিয়া খান, সেক্রেটারি মোঃ আলমগীর হোসেন, শামছুল ইসলাম মাসুদ প্রমুখ।

উল্লেখ্য, পার্বত্য জেলা রাঙ্গামাটির নানিয়ারচর লংগদু বাঘাইছড়ি ও দীঘিনালা উপজেলা সাথে সড়ক অবকাঠামোর উন্নয়নে প্রচেষ্টা এ অঞ্চলে সাধারণ মানুষের দীর্ঘদিনের প্রাণের দাবি। সাম্প্রতিক সময়ে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর (সওজ বিভাগ) নানিয়ারচর-লংগদু এর ২৪ কিলোমিটার রাস্তার সম্ভাব্যতা যাচাই বাছাই শুরু করলে বিষয়টি পাহাড়ের উগ্রবাদী সশস্ত্র সন্ত্রাসী সংগঠন ইউপিডিএফের নজরে আসে এবং উক্ত কাজ বন্ধের বিরোধিতা করে ‘নানিয়ারচর-লংগদু বন ও পরিবেশ রক্ষা কমিটি’ ব্যানারে গত ২৬ মে বিক্ষোভ কর্মসূচির আয়োজন করে। তাদের দাবি লংগদু-নানিয়ারচর সড়ক নির্মাণ হলে পরিবেশ ধ্বংস হবে। সড়কের ফলে এলাকার বনজ সম্পদ ও বন্যপ্রাণীর জন্য হুমকি হয়ে উঠবে বলেমনে করেন। কিন্তু এর পেছনে মূল লক্ষ্যই হলো  নানিয়ারচর-লংগদু প্রস্তাবিত সড়কের নির্মাণ কাজ বন্ধ করা।

এর প্রতিবাদে মানববন্ধন কর্মসূচীতে বক্তারা বলেন, লংগদু-নানিয়ারচর সড়কটি নির্মাণ হলে শুধু নানিয়ারচর ও লংগদু নয়, বাঘাইছড়ি, দীঘিনালা ও সাজেকবাসীও উপকৃত হবে। এই অঞ্চলে বসবাসরত প্রায় তিন থেক সাড়ে তিন লক্ষ মানুষ সরাসরি উপকারভোগী হবে। এ অঞ্চলের উপর যেমন রাষ্ট্রীয় কর্তৃত্ব ও নিরাপত্তা জোরদার হবে। তেমনি সন্ত্রাসীদের অবৈধ কার্যক্রমে বাঁধাগ্রস্থ হবে।  ইউপিডিএফে এর কারণেই পরিবেশ রক্ষার নামে রাস্তার বিরোধিতা করছে।

ইতিপূর্বেও বহুবার  ইউপিডিএফ এসব উন্নয়ন কাজে বাঁধা দিয়েছে। তারা চায়, অবৈধ অস্ত্রের মাধ্যমে পাহাড়ে আধিপত্য বজায় রেখে  সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি ও জনদুর্ভোগকে কাজে লাগিয়ে তাদের চাঁদাবাজি ও অস্ত্র ব্যবসা আরও বিস্তৃত করতে। পরিবেশ রক্ষার নামে এটি তাদের নতুন এক ষড়যন্ত্র। কিন্তু আমরা তা আর হতে দিতে চাই না। আমরা চাই উন্নতি, আমরা চাই মুক্তি

তারা আরো বলেন, এই পার্বত্য অঞ্চলে ইউপিডিএফেের এই কর্মসূচি হলো উন্নয়ন বিরোধী ও স্বার্থান্বেষী রাজনীতি। ইউপিডিএফ তাদের স্বার্থ রক্ষার্থে কর্মসূচির নামে হুমকি সৃষ্টি করছে, ভীতিকর পরিবেশ তৈরী করছে।  একটি স্বাধীন রাষ্ট্রে জনকল্যাণমুখী উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে বাঁধাসৃষ্টি মেনে নেওয়া যায় না। রাষ্ট্রের উচিত জরুরি ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় প্রদক্ষেপ গ্রহণ, সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি, খুন,গুম বন্ধ করতে ও অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারে জোরালো ভূমিকা পালন করা। এবং এই রাস্তার কাজ যতদ্রুত সম্ভব শুরু করে জনগনের কাঙ্খিত  স্বপ্নকে বাস্তবে রুপ দেয়ার আহবান জানান।

স্থানীয় কৃষকদের মতে, সড়ক নির্মাণ হলে সহজেই কৃষিপণ্য বাজারজাত করতে পারবেন তারা। ফলে কৃষির উৎপাদন ও আয়ের উৎস বাড়বে, এ অঞ্চলের অর্থনীতি চাকা সচল হবে।  এসব এলাকার সাথে ঢাকা- চট্টগ্রামে সরাসরি উৎপাদিত পণ্য সরবরাহ করা সম্ভব হবে। 

উপজেলার সচেতন মহলে মতে, সড়ক যোগাযোগ সৃষ্টি হলে শিক্ষা, স্বাস্থ্য, চিকিৎসা,  কৃষি, পর্যটন শিল্প ও ব্যবসার সম্প্রসারণ ঘটবে। ছেলে মেয়েরা উচ্চ শিক্ষার ক্ষেত্রে যাতায়াত করতে পারবে। এতে অত্রাঞ্চলে নতুন নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে, তরুণদের জন্য সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচিত হবে।

এই বিভাগের আরোও খবর

Logo