শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর শান্তিতে নোবেল বিজয়ী প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে নবগঠিত অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে অভিনন্দন জানিয়েছে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) সোনালী দলের শিক্ষকেরা। বুধবার (১৪আগস্ট) সকাল সাড়ে ১১টায় সোনালী দলের এক সাধারণ সভায় সংগঠনটির সভাপতি প্রফেসর ড. মো: হারুণ-অর রশিদ ও সাধারণ সম্পাদক প্রফেসর ড. আহমদ খায়রুল হাসানের স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে অভিনন্দন জানানো হয়।
বিবৃতিতে বলা হয়, বাংলাদেশে কোটা সংস্কারের জন্য বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ফলে ফ্যাসিষ্ট, স্বৈরাচারী সরকার পতনের পর গত ৮ আগস্ট ২০২৪ নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদ এবং গ্রামীণ ব্যাংকসহ অনেক প্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠাতা, সামাজিক ব্যবসা ধারণার প্রবর্তক প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে ১৭ সদস্যের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনকে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের সোনালী দল স্বাগত, আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানাচ্ছি।
এর মাধ্যমে ছাত্র, শিক্ষক ও জনতার গণঅভ্যুত্থানের ফলে স্বৈরাচারী শেখ হাসিনা সরকারের পতন ঘটে এবং তার দেশ ছেড়ে পালানোর কারণে দেশে যে সরকারবিহীনতা সৃষ্টি হয়েছিল, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের শপথ গ্রহণের মাধ্যমে তা দূর হয়েছে। বাংলাদেশ বর্তমানে যে চরম ক্রান্তিকাল অতিক্রম করছে, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। এ সময়ে দায়িত্ব গ্রহণকারী সরকারের সামনে রয়েছে নানা চ্যালেঞ্জ।
বিগত পনের বছরে স্বৈরাচারী সরকার আমাদের গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস করে ফেলেছে। শুধু ভোটের অধিকারই নয়, মানুষের বাকস্বাধীনতাও নিষ্পেষিত হয়েছে। সীমাহীন লুটপাট ও দুর্নীতির মাধ্যমে দেশের অর্থনীতিকে চরম সংকটে ফেলে দেওয়া হয়েছে। নগ্ন দলীয়করণের মাধ্যমে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ দেশের সকল প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে। বার বার কারিকুলাম পরিবর্তন এবং নানা পরীক্ষা- নিরীক্ষার মাধ্যমে দেশের শিক্ষাব্যবস্থায় চরম নৈরাজ্য সৃষ্টি করা হয়েছে। এই সংকটময় অবস্থায় নতুন সরকারকে সঠিক প্রাধান্য নির্ধারণ করে সুপরিকল্পিত পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে বলে আমাদের দৃঢ় বিশ্বাস।
বিশেষ করে, প্রথমেই আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনে জনগণের জান-মালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এখন সময়ের দাবি। এছাড়া, শিক্ষা, অর্থনীতি, এবং গণতান্ত্রিক সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানের প্রতি জনগণেরর আস্থা ফেরানোর লক্ষ্যে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে।ড. মুহাম্মদ ইউনূস-এর নেতৃত্বে নবগঠিত অন্তর্বর্তীকালীন সরকার জাতির ক্রান্তিকালে এমন গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বভার গ্রহণ করে দেশকে নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য আমরা গভীরভাবে কৃতজ্ঞ। আমাদের দৃঢ় বিশ্বাস, ড. ইউনূস-এর সততা, অভিজ্ঞতা, ও প্রজ্ঞা দেশের গণতান্ত্রিক মূল্যবোধকে পুনঃপ্রতিষ্ঠিত করবে এবং ন্যায়বিচার, মানবাধিকার ও অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির পথে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবে।
এই সংকটময় সময়ে, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার জনগণের আশা-আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ঘটাবে এবং নৈতিকতা ও ন্যায়বিচারের ভিত্তিতে পরিচালিত হবে। আমরা আশা করি, এই সরকারের অধীনে জাতি নতুন করে ঐক্যবদ্ধ হবে, রাজনৈতিক ও সামাজিক স্থিতিশীলতা ফিরে আসবে এবং দেশের গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলো শক্তিশালী হবে।আরও বলেন, ড. ইউনূস এবং তার নেতৃত্বাধীন সরকারের প্রতি পূর্ণ সমর্থন জ্ঞাপন করছি এবং প্রত্যাশা করছি যে, দেশকে একটি সমৃদ্ধ, শান্তিপূর্ণ ও সুশাসিত রাষ্ট্রে পরিণত করতে তারা তাদের সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা চালাবেন। আমাদের সকলের সহযোগিতায়, বাংলাদেশ একটি নতুন যুগের সূচনা করবে।