ফরিদগঞ্জে লক্ষ্মীপুরে কিশোর গ্যাংয়ের হামলায় গুরুতর আহত ৩, আতঙ্ক এলাকা বাসি

জাকির হোসেন সৈকত প্রকাশিত: ৫ জানুয়ারী , ২০২৫ ১৭:২০ আপডেট: ৫ জানুয়ারী , ২০২৫ ১৭:২০ পিএম
ফরিদগঞ্জে লক্ষ্মীপুরে কিশোর গ্যাংয়ের হামলায় গুরুতর আহত ৩, আতঙ্ক এলাকা বাসি
চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ কিশোর গ্যাংয়ের হামলায় তিনজন গুরুত্বর আহত। আহত ১ জনকে ঢাকা পঙ্গু হাসপাতালে আরেকজনকে আলীগঞ্জে একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রয়েছে।

চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ কিশোর গ্যাংয়ের  হামলায় তিনজন গুরুত্বর আহত। আহত ১ জনকে ঢাকা পঙ্গু হাসপাতালে  আরেকজনকে আলীগঞ্জে একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রয়েছে। অন্যজনকে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে বাড়িতে আনা হয়েছে । ঘটনার পরে স্থানীয় লোকজন ৯৯৯ ফোন দেওয়া হলে এখন পর্যন্ত  পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়নি। এতে করে আরো বেশি আতঙ্কিত রয়েছে এলাকাবাসী। ঘটনাটি বৃহস্পতিবার (২ জানুয়ারী) রাত ৮টার দিকে উপজেলার ৩ নং সুবিদপুর ইউনিয়নে লক্ষীপুর গ্রামের আনন্দ বাজারের পাশে ঘটে। ঘটনার সূত্রে জানাযায়,   লক্ষীপুর এলাকার সরদার বাড়ির সামনে ঐদিন একটি ওয়াজ মাহফিল ছিলো। ওয়াজ থেকে তিনজন মিলে বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দেয়। এসময় প্রতিপথে রাত ৮টার দিকে রাস্তা সংক্ষেপ করার জন্য তারা  বিলের মাঝখান দিয়ে বাড়িতে যাচ্ছিলাম। এসময় হঠাৎ জামতলা এলাকার পূর্ব পাশে বালুর মাঠে তাদের উপর সঙ্ঘবদ্ধ চক্রের সদস্যরা পিছন থেকে অতর্কিত হামলা চালায়।এই সময় চিৎকার করলে ওয়াজের মাইকের আওয়াজ এর কারনে কেউ শুনতে পারেনাই।  পাশের বাড়ির লোকজন নামাজ পড়তে বের হলে তাদের চিৎকারের শব্দ শুনতে পায়। তিনি দৌড়ে আসলে তারা দ্রুত পালিয়ে যায় । এই সময় ১জনকে কাঁদা মাটির ভিতর থেকে উদ্ধার করে অন্যজনকে আহত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখে বাকী ১জন আহত অবস্থায় দোকানের কাছে চলে যায় । স্থানীয় লোকজন তাদেরকে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে পাঠিয়ে দেয়। আহতরা হলেন, শাহাদাত হোসেন, পিতা সিরাজুল ইসলাম। সবুজ হোসেন, পিতা নুরুজ্জামান। ফরহাদ হোসেন, পিতা ফরিদ আহমেদ। এরা তিনজনই দিকদাইর গ্রামের ফকির বাড়ির বাসিন্দা। হামলাকারি কিশোর গাঙ্গের সদস্যরা হলেন-৩ নং সুবিদপুর ইউনিয়নের লক্ষীপুর গ্রামের আনন্দ বাজার এলাকার মাসুদের ছেলে আরমান, দ্বীন ইসলামের ছেলে সিয়াম, নাছিরের ছেলে ইউনুস, কাউসারের ছেলে তানভীরসহ প্রায় ১৫/২০ জন কিশোর গ্যাং এই হামলার সাথে জড়িত আছেন বলে স্থানীয় লোকজন বলেন। প্রত্যক্ষদর্শী আবু ইউছুপ জানান, আমরা সাড়ে সাত বা পৌনে আটটার দিকে  ঘরে চা এবং বিস্কিট খাচ্ছিলাম। এ সময় হঠাৎ বাহিরে ডাক চিৎকার শুনতে পাই। এবং সাথে সাথে বাহিরে আসলে দেখি কিশোর বয়সের কিছু ছেলেপেলে এদিক-সেদিক দৌড়াদৌড়ি করে চলে যাচ্ছে। এবং আহত তিনজনের মধ্যে দুইজনকে দেখি গুরুতর অবস্থায় পড়ে আছে। এবং একজন  মাথার বিভিন্ন রকম আঘাত এবং পুরো শরীরেই রক্ত মাখা। আর একজন একটু একটু কথা বলতে পারলেও তিনিও আহত অবস্থায় আছেন। এ সময় তারা বলেন আমাদের সাথে আরেকজন আছে। তখন তাকে খুঁজতে খুঁজতে পার্শ্ববর্তী ডোভায় কাঁদার মধ্যে মাথা ঢুকানো অবস্থায় পাওয়া যায়। পরে তাকে তুলে এনে গরম পানি দিয়ে পরিষ্কার করা হয়। এবং তাদের গুরুতর অবস্থায় হাসপাতালে পাঠিয়ে দেই। এ সময় প্রত্যক্ষদর্শী আলমগীর হোসেন বলেন, আমি মাহফিলে ছিলাম, বাড়ি থেকে আমাকে ফোন দিলে ঘটনাস্থলে এসে দেখি ৩জনই গুরুতর অবস্থা। পরে তাদের উদ্ধার করি এবং গরম পানি দিয়ে তাদেরকে পরিষ্কার করে দ্রুত হাসপাতালে পাঠিয়ে দেই। শাহাদাতকে গুরুতরভাবে আঘাত করে এবং তার একটি পা  পুরোপুরি ভেঙ্গে দেয়। এবং শাহাদাতকে পাশের ডোবায় নিয়ে তার মাথা কাদামাটির ভেতরে ঢুকিয়ে তাকে মেরে ফেলতে চায়।  এছাড়া সবুজের মাথায় আঘাত করে তাকে একেবারেই গুরুতর আহত করে। এবং ফরহাদকে শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত করে তাকে গুরুতর ভাবে আহত করে। আমি ৯৯৯ একাধিকবার ফোন দেই কিন্তু পুলিশ এখানে আসে নাই। শাহাদাত, সবুজ ও ফরহাদের বড় ভাই মা এবং বাবা জানান তারা অত্যন্ত অসহায় ও গরিব মানুষ। ঘটনার দিন শাহাদাত, সবুজ এবং ফরহাদ লক্ষ্মীপুর এলাকায় ওয়াজ শুনতে আসে। কিছুক্ষণ তারাও ওয়াজ শুনে বাড়িতে যাওয়ার পথে উপরে উল্লেখিত সন্ত্রাসীরা তাদের সন্তানদের উপর এভাবে নির্যাতন চালায়। এবং তাদের সাথে থাকা মোবাইল ও টাকা পয়সা সব নিয়ে যায়। তারা উল্লেখিত সন্ত্রাসীদের কঠোর বিচার কামনা করছেন। ইউনিয়ন বিএনপি'র সাধারণ সম্পাদক ইমাম হোসেন সহ নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এলাকার অসংখ্য মানুষ এই প্রতিনিধিকে জানান এই কিশোর গাংয়ের অত্যাচারে আমরা অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছি। কোথাও কোন কথা বলতে পারছি না। এরা প্রত্যেকেই আগে আওয়ামী রাজনীতির সাথে জড়িত ছিল।এদের অত্যাচারে এলাকার ছোট বড় সবাই আতঙ্কিত অবস্থায় রয়েছে। স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান বেলায়েত হোসেন বলেন, লক্ষীপুর এলাকার এই কিশোর গাং কর্তৃক ঢাকায় একজনকে মেরে ফেলার খবর পেয়েছি। তারা এখন এলাকায় সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছে। এদের ভয়ে কেউ কথা বলতে পারছে না। আমি চেয়ারম্যান হিসাবে প্রশাসনিকভাবে এর ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য অনুরোধ করব। এবং এদেরকে দমাতে আমার পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ সহযোগিতা থাকবে বলে তিনি জানান। তিনি আরো বলেন এরা ইতিপূর্বে আওয়ামী রাজনীতির সাথে জড়িত ছিল। আওয়ামী লীগের আমলের সেই পুরোনো দিনের অভ্যাস আবার মাথা ছাড়া দিয়ে উঠতেছে। এদের কঠোর হস্তে দমন করা উচিত। ফরিদগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ শাহ আলম বলেন, আমার কাছে এখন কোন অভিযোগ আসেনি।অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা গ্রহন করবো।

এই বিভাগের আরোও খবর

Logo