ডবলমুরিং থানার অভিযানে অনলাইন প্রতারক চক্রের ০৩ সদস্য গ্রেফতার

মোঃ ইসমাইল ইমন প্রকাশিত: ২০ মার্চ , ২০২৪ ০৭:২১ আপডেট: ২০ মার্চ , ২০২৪ ০৭:২১ এএম
ডবলমুরিং থানার অভিযানে অনলাইন প্রতারক চক্রের ০৩ সদস্য গ্রেফতার
সিএমপি 'র ডবল মুড়িং থানা সূত্রে জানা যায়,মামলার বাদি বাঁধন বড়ুয়া সিইপিজেড বেপজাতে চাকুরি করেন। গত ০৩/০৪ দিন পূর্বে ফেসবুকের মাধ্যমে মাহমুদা নামের একজন মেয়ের সাথে তার পরিচয় হয়। এর পর থেকে মাহমুদা পরিচয়দানকারী মেয়ের সাথে বাদির ব্যবহৃত মোবাইল নম্বর থেকে মাহমুদার মোবাইল নম্বরে কথাবার্তা প্রতিনিয়ত চলতো।

সিএমপি 'র ডবল মুড়িং থানা সূত্রে জানা যায়,মামলার বাদি বাঁধন বড়ুয়া সিইপিজেড বেপজাতে চাকুরি করেন। গত ০৩/০৪ দিন পূর্বে ফেসবুকের মাধ্যমে মাহমুদা নামের একজন মেয়ের সাথে তার পরিচয় হয়। এর পর থেকে মাহমুদা পরিচয়দানকারী মেয়ের সাথে বাদির ব্যবহৃত মোবাইল নম্বর থেকে মাহমুদার মোবাইল নম্বরে কথাবার্তা প্রতিনিয়ত চলতো।

কয়েকদিন কথা বলার পর মাহমুদা বাদিকে তার সাথে দেখা করতে বলে। গত ১৭ ই মার্চ অনুমানিক রাত ০৮ টার সময় মাহমুদা পরিচয়দানকারী মেয়ের সাথে ডবলমুরিং মডেল থানাধীন আগ্রাবাদ সিডিএ ৬নং রোডের শেষ মাথায় নির্মাণাধীন বিল্ডিংয়ের সামনে দেখা করতে গেলে বাদিকে উক্ত নির্মাণাধীন ভবনের ৩য় তলায় নিয়ে যায়। তথায় পৌঁছানোর ০২ থেকে ০৩ মিনিটের মাথায় অজ্ঞাতনামা ০৪ জন এসে উপস্থিত হয়।এসময় তারা বাদিকে এলোপাথাড়ি কিল, ঘুসি মারতে থাকে এবং ধারালো ছোরার ভয় দেখিয়ে বাদির ব্যবহৃত Samsung S20 Ultra জোরপূর্বক ছিনিয়ে নেয়। একপর্যায়ে বিবাদিরা বাদির পকেটে থাকা নগদ ৬,০০০/- টাকা এবং বাদির জাতীয় পরিচয়পত্র নিয়ে নেয়।

বিবাদিরা বাদির নিকট ২,০০,০০০/- টাকা দাবি করে, অন্যথায় বাদিকে মেরে ফেলবে মর্মে হুমকি দেয়। বাদি প্রাণভয়ে বাদির মোবাইল নম্বর থেকে নিকটতম কয়েকজন বন্ধুকে ফোন দিয়ে টাকা চাইলে বাদির বন্ধু বাপ্পি দে বাদির বিকাশ নম্বর ২০,০০০/- টাকা এবং বাদির অফিস কলিগ মো. আব্দুল মতিন বাদির বিকাশে ১০,০০০/- টাকা প্রেরণ করেন। তখন বিবাদিদের মধ্য ০২ জন বাদির বিকাশের পিন নাম্বার নিয়ে নিচে নেমে বাদির বিকাশ অ্যাকাউন্ট থেকে পর্যায়ক্রমে ৩০,০০০/- টাকা উত্তোলন করে নেয়। উক্ত ঘটনার বিষয়ে বাদি থানা পুলিশ কিংবা পরিবারের কাউকে কিছু না বলার জন্য অজ্ঞাতনামা বিবাদিরা ব্যবহৃত মোবাইলে বাদির ভিডিও ধারণ করে। ১৭ই মার্চ রাত অনুমান ১১:১০ মিনিটের সময় অজ্ঞাতনামা বিবাদিরা বাদিকে প্রাণে মেরে পেলার ভয়ভীতি দেখিয়ে নির্মাণাধীন বিল্ডিংয়ে নিচে নামিয়ে দিয়ে চলে যেতে বলে। বাদি প্রাণ ভয়ে কাউকে কিছু না বলে সিএনজিযোগে নিজের বাসায় চলে এসে থানায় অভিযোগ দায়ের করলে সূত্রোক্ত মামলা রুজু হয়।

মামলার প্রেক্ষিতে সিএমপি'র পশ্চিম বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার নিহাদ আদনান তাইয়ান সার্বিক দিকনির্দেশনায়, অতিরিক্ত উপ পুলিশ কমিশনার মো. আশরাফুল করিম ও সহকারী পুলিশ কমিশনার মুকুর চাকমার তত্ত্বাবধানে, ডবলমুরিং মডেল থানার এসআই আহলাদ ইবনে জামিল, পিপিএম, এএসআই/ শাহাদত হোসেন, এএসআই/ আনোয়ার হোসেন মামলার এজাহারনামীয় ও পলাতক আসামিদের গ্রেফতারের লক্ষ্যে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে বাদিকে সঙ্গে নিয়ে অভিযান পরিচালনা করে বাদির শনাক্ত মতে মামলার তদন্তে প্রাপ্ত ওসমান খালেক সাইহানকে ডবলমুরিং মডেল থানাধীন আগ্রাবাদ সিডিএ আবাসিকের ৬নং রোডের মাথা থেকে একই তারিখে ০৫:৩০ মিনিটের সময় গ্রেফতার করেন। 

গ্রেফতার পরবর্তী জিজ্ঞাসাবাদে মামলার ঘটনায় জড়িত থাকার কথা অকপটে স্বীকার করে। উপস্থিত সাক্ষীদের সম্মুখে ওসমান খালেক সাইহানকে জিজ্ঞাসাবাদে ভিকটিমের বিকাশ অ্যাকাউন্ট থেকে নেওয়া এবং তার ভাগের ২০,০০০ টাকার তার নিকট আছে মর্মে স্বীকার করলে উপস্থিত সাক্ষীদের সম্মুখে ১৮ই মার্চ ০৫:৫০মিনিটের সময় জব্দ তালিকা মূলে জব্দ করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে ওসমান খালেক সাইহান জানায় যে, ভিকটিমের কাছ থেকে নেওয়া মোট ৩৬,০০০ টাকা এবং মোবাইল বিবাদিরা ০৩ জনের মধ্যে ভাগ বণ্টন করে নিয়েছে। বিবাদি ওসমান খালেক সাইহান এর ভাগে ২০,০০০/- টাকা, আনিসুল ইসলাম আহাদের ভাগে ৬,০০০/- টাকা ও মোবাইল ফোন, পলাতক তালহার ভাগে ১০,০০০/- টাকা হিসেবে ভাগ বণ্টন করে নেয়। 

উল্লেখ্য যে, আনিসুল ইসলাম আহাদের স্ত্রী এজাহারনামীয় মাহমুদা হক প্র. মুমু। তদন্তে প্রাপ্ত আনিসুল ইসলাম আহাদ তার স্ত্রী মাহমুদা হক প্র. মুমুর মাধ্যমে বিভিন্ন জনকে টার্গেট করে নিয়ে এসে প্রেমের প্রলোভন দেখিয়ে আটক রেখে চাঁদা আদায় করে। গ্রেফতারকৃত ওসমান খালেক সাইহান এর দেয়া তথ্য মতে খুলশী থানাধীন দক্ষিণ জালাবাদস্থ গার্ডেন ভিউ আবাসিক এলাকা থেকে বাদির শনাক্ত মতে ১৮ ই মার্চ ১১:১৫ মিনিটের সময় তদন্তে প্রাপ্ত আনিসুল ইসলাম আহাদকে গ্রেফতার করা হয়।

জিজ্ঞাসাবাদে আটক আনিসুল ইসলাম আহাদ ঘটনায় জড়িত থাকার বিষয়ে স্বীকার করে। বাদির শনাক্ত ও ধৃত আনিসুল ইসলাম আহাদের দেয়া স্বীকারোক্তি ও উপস্থাপন মতে বাদির নিকট থেকে জোরপূরক আদায় কর নেয়া Samsung S20 Ultra 5G মডেলের মোবাইলটি উদ্ধার পূর্বক জব্দ করা হয়। 

গ্রেফতারকৃত আনিসুল ইসলাম আহাদের দেয়া তথ্য মতে এবং বাদির শনাক্ত মতে এজাহারনামীয় মাহমুদা হক প্র. মুমুকে খুলশী থানাধীন দক্ষিণ জালাবাদস্থ গার্ডেন ভিউ আবাসিক এলাকার নিজ বাসা থেকে গ্রেফতার করা হয়।

এই বিভাগের আরোও খবর

Logo