ভোলার তজুমদ্দিন-মনপুরা নৌরুটে যান্ত্রিক ত্রুটির অজুহাতে গত এক সপ্তাহ যাবত বন্ধ রয়েছে যাত্রীবাহি সী-ট্রাক এসটি ইলিশা। জেলা শহরের সাথে এই বিচ্ছিন্ন উপজেলার যোগাযোগের একমাত্র নৌরুটে নিরাপদ সি-ট্রাকটি বন্ধ থাকায় বাধ্য হয়ে অনুমোদনহীন অবৈধ ট্রলারে যাতায়াত করছেন যাত্রীরা। বর্ষা মৌসূম চলায় মেঘনার ডেঞ্জারজোনে যে কোন মূহুর্তে বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশঙ্কা করছেন ভোলার সচেতন মহল।
জানা গেছে, ভোলার জেলার একমাত্র বিচ্ছিন্ন উপজেলা হচ্ছে মনপুরা। এখানকার মানুষের যোগাযোগের একমাত্র ভরসা হচ্ছে নৌ-পথ। তাদের এই নৌ-পথ পাড়ি দিতে হয় সী-ট্রাক, ছোট ছোট এক তলা লঞ্চ, অবৈধ ট্রলারের মাধ্যমে। নিরাপদ যোগাযোগের একমাত্র ভরসা হচ্ছে সী-ট্রাক। বিআইডব্লিউটিসি থেকে মোঃ নুরুউদ্দিন মিয়া ইয়ানুর এন্টারপ্রাইজ এর নামে ইজারা নিয়ে মনপুরা-তজুমুদ্দিন নৌরুটে সী-ট্রাকটি পরিচালনা করছেন। যান্ত্রিক ত্রুটের অজুহাতে বন্ধ রয়েছে এই রুটে চলাচলকারী একমাত্র সী-ট্রাক এস.টি ইলিশা। আর সেই সী-ট্রাকটি গত মঙ্গলবার থেকে আজ অবধি পর্যন্ত বন্ধ রয়েছে বলে নিশ্চিত করেন টেন্ডারে পাওয়া সী-ট্রাক কর্তৃপক্ষের নিয়োজিত সুকানি মোঃ নিরব। তিনি আরও জানান, ঢাকা থেকে পার্টস আসলেই মেরামত করে ফের চালু হবে সী-ট্রাক।
ভুক্তভোগী যাত্রীরা অভিযোগ করে জানান, বিআইডব্লিউটিসি থেকে টেন্ডারে পাওয়া ঠিকাদীর প্রতিষ্ঠান ইয়ানুর এন্টারপ্রাইজের কর্নধার মোঃ নুরুউদ্দিন সী-ট্রাকটি মেরামত না করে নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় অনুমোদনহীন অবৈধ টলারে যাত্রী পারাপার করছে। এতে যে কোন সময় মেঘনার ডেঞ্জারজোনে দুঘর্টনায় ট্রলার ডুবির মাধ্যমে প্রাণহানির আশংকা করছেন যাত্রীরা। তারপরও বাধ্য হয়ে দুর্ভোগ সহ্য করে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে যাতায়াত করছেন তারা।
যাত্রী সজিব, রাজু, আল-আমিন, বৈশাখীসহ অনেকে জানান, সী-ট্রাক বন্ধ থাকায় বাধ্য হয়ে ট্রলারে মাল আর যাত্রী গাদাগাদি করে যাতায়াত করতে হচ্ছে। উপায় নাই, তাই দুর্ভোগ সহ্য করে যাতায়াত করছি। এই নৌরুটে নিরাপদ সী-ট্রাক সবসময় চালু রাখার দাবী জানিয়েছেন তারা। এছাড়াও সী-ট্রাক চালু না হওয়া অনেকে গর্ভবর্তী মা ও রোগিরা জেলা সদরে গিয়ে চিকিৎসা সেবা নিতে পারছেনা বলে অভিযোগ করছেন স্থানীয়রা।
সী-ট্রাক টেন্ডারে পাওয়া ঠিকাদার নুরুউদ্দিনের পক্ষে মোঃ নিরব উদ্দিন জানান, যান্ত্রিক ত্রুটির মেরামতের কাজ চলছে। দুই-একদিনের মধ্যে সী-ট্রাকটি চালু হবে। তবে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের পক্ষে অনুমোদনহীন ট্রলারে যাত্রী পারাপারের ব্যাপারে কিছু বলতে নারাজ।
ভোলা জেলা বিআইডব্লিটিসি’র ব্যবস্থাপক কাওছার হোসেন জানান, সী-ট্রাকটি যান্ত্রিক ত্রুটির কাজ শেষ করে ফের চলাচল করবে। যাত্রীদের অভিযোগের ব্যাপারে জানতে চাইলে উধ্বর্তন কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করতে বলেন তিনি।
বিআইডব্লিউটিসি’র উপ-মহাব্যবস্থাপক (বরিশাল অঞ্চল) খন্দকার তানভীর মুঠোফোনে জানান, যান্ত্রিক ত্রুটির কাজ শেষে সী-ট্রাক চলার কথা। ২দিন আগে টেন্ডারে পাওয়া নুরুউদ্দিনকে অফিসে ডেকে সী-ট্রাক চালুর বিষয়ে বলেছিলাম। ফের তাকে ডেকে দ্রুত সী-ট্রাক চালুর জন্য বলা হবে। দ্রুত সী-ট্রাক চালু না করলে ঠিকাদারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।