এক ইউনিয়নেই ২৩ ইটভাটা

মাসুদ রেজা ফিরোজী প্রকাশিত: ২৫ জানুয়ারী , ২০২৪ ১০:৩৯ আপডেট: ২৫ জানুয়ারী , ২০২৪ ১০:৩৯ এএম
এক ইউনিয়নেই ২৩ ইটভাটা
মাদারীপুর সদর উপজেলার পাঁচখোলা ইউনিয়নের উত্তর পাঁচখোলা গ্রামে যেখানে ছিল একসময়ে শুধু সবুজের সমারোহ। সেখানে দুই-তিন ফসলি জমিতে বিভিন্ন ধরনের ফসল ফলাতো কৃষকরা। এখন সেখানে ইটভাটার আগ্রাসনের ফলে সেই সব ফসলি জমি হারিয়ে গেছে।

মাদারীপুর সদর উপজেলার পাঁচখোলা ইউনিয়নের উত্তর পাঁচখোলা গ্রামে যেখানে ছিল একসময়ে শুধু সবুজের সমারোহ। সেখানে দুই-তিন ফসলি জমিতে বিভিন্ন ধরনের ফসল ফলাতো কৃষকরা। এখন সেখানে ইটভাটার আগ্রাসনের ফলে সেই সব ফসলি জমি হারিয়ে গেছে। 

সরেজমিন দেখা গেছে, মাদারীপুর সদর উপজেলার উত্তর পাঁচখোলা গ্রামের ফসলি জমিতে রহিম খান ও সোবাহান ফকির গড়ে তুলেন একাধিক ইটভাটা। বিভিন্ন স্থানে গভীর গর্ত করে উর্বর মাটি তুলে ফেলা হচ্ছে। আবার কোথাও সারি সারি ইট সাজিয়ে রাখা হয়েছে। পাশেই চিমনি দিয়ে বের হচ্ছে কালো ধোয়া যা পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর। এর কারণে নষ্ট হচ্ছে ফসলি জমি। শুধু এই দুই মালিকই নয় এমন চিত্র সারা মাদারীপুরেই।

 অনুসন্ধানে জানা গেছে, মাদারীপুর সদর উপজেলার পাঁচখোলা ইউনিয়নেই গড়ে তোলা হয়েছে ২৩টি ইটভাটা যা এদের মধ্যে অধিকাংশ ইটভাটার ইট পোড়ানোর অনুমতি রয়েছে। স্থানীয়দের অভিযোগ করে বলেন, পরিবেশ অধিদপ্তর ও জেলা প্রশাসনের এক শ্রেণির অসাধু কর্মকর্মাদের যোগসাজসেই এই অবৈধ কর্মকাণ্ড চলছে। এতে করে স্বাস্থ্যগত মারাত্মক ঝুঁকিতে রয়েছে স্থানীয় বাসিন্দারা। একারণে ক্ষুব্ধ এখন সাধারণ নাগরিকরা। পাঁচখোলা গ্রামের বাসিন্দা মোকলেসুর রহমান মোল্লা বলেন, আমাদের এলাকায় আগে বিভিন্ন ধরনের ফসল উৎপাদিত হতো। কিন্তু গ্রামের অধিকাংশ ফসলি জমি এখন ইটভাটার দখলে। এরা জমি এমনভাবে গর্ত করে যাতে করে পাশের জমি ভেঙ্গে পড়ে। এভাবেই জমিগুলো দখল করছে। ইটভাটার কারণে নষ্ট হচ্ছে ফসলি জমি, স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে রয়েছে মানুষ। আমরা এর প্রতিকার চাই। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মাদারীপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের এক কর্মকর্তা জানান, কৃষি ও কৃষিজমি নষ্টের অন্যতম প্রধান কারণ হচ্ছে ইটভাটা। এ ছাড়া ভাটার দূষণ ও বিরূপ প্রভাবে আশপাশের জমির ফসলহানি হচ্ছে। কর্তৃপক্ষের উচিত নয় ফসলি জমি নষ্ট হয় এমন স্থানে ইটভাটার লাইসেন্স দেওয়া। অথচ ফসলি জমিতেই গড়ে উঠেছে ইটভাটা। মাদারীপুর জজ কোর্টের এপিপি অ্যাডভোকেট আবুল হাসান সোহেল বলেন, ইট প্রস্তুত ও ভাটা নিয়ন্ত্রণ আইনে বলা আছে আবাসিক এলাকা ও কৃষি জমিতে কোনো ইটভাটা স্থাপন করা যাবে না। শুধু তা-ই নয়, ওই আইনে বলা হয়েছে নির্ধারিত সীমারেখার (ফসলি জমি) এক কিলোমিটারের মধ্যেও কোনো ইটভাটা করা যাবে না। মাদারীপুর ইটভাটা শিল্প মালিক সমিতির দায়িত্বশীল নেতারা এই বিষয় কথা বলতে রাজি হননি। এমনকি অভিযুক্ত ইটভাটা মালিকরাও কথা বলতে চান না। এ ব্যাপারে মাদারীপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আল মামুন বলেন, কোনো কৃষি জমি নষ্ট করে ইটভাটা করা যাবে না। আইনগতভাবে এটা নিষিদ্ধ। অবৈধ ইটভাটা থাকলে সেগুলো বন্ধ করে দেওয়া হবে।


এই বিভাগের আরোও খবর

Logo