শ্রাবণের অকাল বৃষ্টিতে তানোরে বিপর্যস্ত কৃষকরা — শতশত বিঘা আমন ধান পানির নিচে

নিজস্ব প্রতিবেদক প্রকাশিত: ১৯ জুলাই , ২০২৫ ১৬:০২ আপডেট: ১৯ জুলাই , ২০২৫ ১৬:০২ পিএম
শ্রাবণের অকাল বৃষ্টিতে তানোরে বিপর্যস্ত কৃষকরা — শতশত বিঘা আমন ধান পানির নিচে

শ্রাবণের প্রথম দিকে হঠাৎ করে টানা দুই দিনের ভারী বর্ষণে রাজশাহীর তানোর উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় কৃষকরা চরম বিপদের মুখে পড়েছেন। বিশেষ করে মোন্নাপাড়া,  গোল্লাপাড়া ও কাজীপাড়াসহ আশপাশের এলাকাগুলোতে শতশত বিঘা আমন ধান পানির নিচে তলিয়ে গেছে। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন এলাকার অসংখ্য কৃষক, যাদের অনেকেই পুঁজির অভাবে ধান চাষ করেও ন্যায্য মূল্য না পাওয়ার হতাশায় ছিলেন।
তানোর মোন্নাপাড়ার কৃষক আজমত হোসেন (৫৫) জানান, বাজারে আলুর ন্যায্য দাম না পেয়ে অনেক ক্ষতির মুখে পড়েছিলাম। ভেবেছিলাম আমনের ফলন ভালো হলে কিছুটা ঘুরে দাঁড়ানো যাবে। কিন্তু এই হঠাৎ বর্ষণে সব শেষ হয়ে গেল। জমির ধান পানির নিচে তলিয়ে গেছে। এখন মহা বিপদে পড়েছি, কী করবো ভেবে পাচ্ছি না। গত দুই দিনে যেভাবে বৃষ্টি হয়েছে, তা বর্ষাকালের স্বাভাবিক প্রবাহের চেয়ে অনেক বেশি বলে জানিয়েছেন স্থানীয় আবহাওয়া পর্যবেক্ষকরা। হঠাৎ এই ভারী বর্ষণে তানোরের নিচু জমিগুলোতে পানি জমে যায়, যা ধান চাষের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। কৃষকরা বলছেন, ধানের চারা একটানা দুই-তিন দিনের বেশি পানির নিচে থাকলে তা পঁচে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের অভিযোগ, এখনো পর্যন্ত কোনো সরকারি বা বেসরকারি প্রতিষ্ঠান থেকে ত্রাণ, সার্বিক সহায়তা বা পরামর্শ পাওয়া যায়নি। তাঁরা দাবি করেছেন, স্থানীয় কৃষি অফিস যেন জরুরি ভিত্তিতে ক্ষতিগ্রস্ত জমি পরিদর্শন করে ক্ষতিপূরণ নিশ্চিত করে এবং বিকল্প ব্যবস্থা নেওয়ার উদ্যোগ গ্রহণ করে।
কৃষক রাব্বানী হোসেন বলেন,ধান চাষে আমার সর্বশেষ সম্বল বিনিয়োগ করেছি। ব্যাংক থেকেও ঋণ নিয়েছি। এখন যদি ধান না পাই, ঋণ শোধ করবো কীভাবে? পরিবার চালাবো কী দিয়ে?
অন্যান্য কৃষকরাও একই সুরে হতাশা প্রকাশ করে বলেছেন, কৃষি নির্ভর এই অঞ্চলে এমন প্রাকৃতিক দুর্যোগ তাদের দিশেহারা করে তুলেছে।এই দুর্যোগ পরিস্থিতিতে তানোরের কৃষকরা সরকারের সহানুভূতি ও সহযোগিতা কামনা করছেন। এখন সময় তাদের পাশে দাঁড়ানোর — না হলে ধান হারানো কৃষকরা এবার হয়তো হেরে যাবেন জীবনের কাছে।

এই বিভাগের আরোও খবর

Logo