নাটোরের বড়াইগ্রামে ১ নং জোয়াড়ী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আলী আকবর এর বিরুদ্ধে পরিকল্পিত হামলার অভিযোগ এনে পাল্টা সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সোমবার (২৬ মে) সন্ধ্যায় উপজেলার আহাম্মদপুর একটি রেস্টুরেন্টে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে জোয়াড়ী ইউনিয়ন যুবদল ও ছাত্রদল।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে জোয়াড়ী ইউনিয়ন যুবদলের সভাপতি প্রভাষক হুমায়ুন কবির রান্টু বলেন, নাটোর জেলা বিএনপির দপ্তরের দায়িত্বে থাকা যুগ্ম আহ্বায়ক মোঃ সাইফুল ইসলাম আবতাব স্বাক্ষরিত একটি সকর্তীকরণ বিজ্ঞপ্তি/চিঠি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশ করা হয়েছে যে, জেলা যুবদল ও ছাত্রদল ছাড়া নাটোর জেলা বিএনপির সমন্ত কমিটি বিলুপ্ত করা হয়েছে , জেলা বিএনপির অনুমতি ছাড়া দলীয় ব্যানার ব্যবহার করে যেকোনো কর্মসূচি পালন করলে সেটা দলীয় শৃঙ্খলা পরিপন্থি হিসেবে গণ্য হবে। ছাত্রদলের কমিটি বিদ্যমান থাকায় জেলা যুবদল ও ছাত্রদলের পরামর্শে বড়াইগ্রাম থানা যুবদল ও ছাত্রদল আগামী ৩০শে মে শহিদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের ৪৪তম শাহাদৎ বার্ষিকী যথাযোগ্য মর্যাদায় পালনের লক্ষ্যে বিভিন্ন ইউনিয়নে দাওয়াতি কার্যক্রম চলমান রয়েছে। তারই অংশ হিসেবে গত ২৫ মে বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে আমরা কয়েকজন ১নং জোয়াড়ী ইউনিয়ন পরিষদের সামনে দাওয়াতি কার্যক্রম পরিচালনা করছিলাম। ঠিক তখনি পরিষদের মধ্যে থেকে এসে চেয়ারম্যান আলী আকবর, বেলাল, সোহানুর মাস্টার, রেজাউল করিম, জাহিদ হাসান, জিল্লুর রহমান, আলমগীর হোসেন, জাহিদ হাসান-২, মেহেদী হাসান বাপ্পি, মোহন মিয়া, মোহাম্মদ সরকার, সাদেক হোসেন, সাইফুল ইসলাম, জুলহাস উদ্দিন, আশরাফ আলী, মাহাবুব রহমান, সম্রাট আলী, আঃ সালাম সহ আরো অনেকে আমাদের উপরে অতর্কিত হামলা চালায়।তাদের হাতে থাকা লাঠিসোঠা, রড, হাতুরি ও পিস্তল প্রদর্শন করে ত্রাশের রাজত্ব কায়েম করে। অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি এড়ানোর জন্য অস্ত্রের মুখে আমরা দ্রুত স্থান ত্যাগ করি। এতে আমাদের কয়েকজন নেতাকর্মী আহত হয়, তাদের স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
এ সময় বক্তারা অভিযুক্ত চেয়ারম্যান আলী আকবর কে আওয়ামী লীগের দালাল ও স্বৈরাচার শেখ হাসিনার দোসর উল্লেখ করে বলেন, থানা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সদস্য সচিব থাকা অবস্থায় কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে আওয়ামীলীগের নির্বাচনকে বৈধতা দেবার জন্য তাদের সাথে আতাত করে আওয়ামীলীগের ভোটে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়। শুধু তাই নয়, বিগত উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামীলীগের প্রার্থী তার ঘনিষ্ঠ বন্ধু মোয়াজ্জেম হোসেন বাবলুর পক্ষে প্রকাশ্যে নির্বাচনী প্রচারনা চালিয়ে যায়। এছাড়া দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নিজের স্বার্থ ও অবস্থান পাকাপুক্ত করার লক্ষ্যে আওয়ামীলীগের প্রার্থী ডাঃ সিদ্দিকুর রহমান পাটোয়ারীর নির্বাচনী মঞ্চে বক্তব্য প্রদান ও মিছিল করে, যার ছবি ভাইরাল হয়ে এখনো সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিদ্যমান।
বক্তারা আরো বলেন, আওয়ামী লীগের মদদপুষ্ট হওয়ায় গত ১৬ বছরে আলী আকবর, বেলাল, রবিউল গং এর নামে কোন মামলা হয় নাই। পক্ষান্তরে, বিএনপি'র ত্যাগী ও নির্যাতিত নেতাদের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক মামলাতে সক্রিয়ভাবে সহযোগিতা করেছে আলী আকবর গং। বর্তমানে বিতাড়িত ফ্যাসিষ্ট হাসিনার দোসরদের পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য নতুন করে রাজপথের পরিক্ষিত নেতাকর্মীদের নামে মিথ্যা, বানোয়াট, কুরুচিপূর্ণ, ভিত্তিহীন অপপ্রচার চালিয়ে যাচ্ছে, যা সংগঠনের জন্য মারাক্তক ক্ষতিকারক। সবশেষে বক্তারা জেলা বিএনপির কাছে দাবি জানিয়ে বলেন, দলীয় মুখোষধারী হাসিনার দোসরদের দল থেকে বহিষ্কার সহ কঠিন শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা সময়ের দাবি। আমরা নিজেদের নিরাপত্তার জন্য বড়াইগ্রাম থানায় একটি অভিযোগ দাখিল করেছি, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতি অনুরোধ এই অভিযোগ নিয়মিত মামলা হিসেবে গ্রহণ করে দোষীদের অবিলম্বে গ্রেফতারের জোর দাবী জানাচ্ছি।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, উপজেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক মোস্তাফিদুল হক বকুল, বড়াইগ্রাম পৌর যুবদলের সভাপতি আঃ খালেক, উপজেলা ছাত্রদলের সভাপতি জাহিদ হাসান বিপুল, যুগ্ম সম্পাদক রাশিদুল, জোয়াড়ী ইউনিয়ন ছাত্রদলের সভাপতি রাকিব উদ্দিন, যুগ্ম সম্পাদক ইকবাল হোসেন সহ বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিক বৃন্দ।
উল্লেখ্য, ২৫ মে রাত দশটায় চেয়ারম্যান আলী আকবর এর উপর সশস্ত্র সন্ত্রাসী হামলা হয়েছে দাবি করেন এবং এই হামলার সাথে জড়িত নাটোরের দত্তপাড়ার যুবদল নেতা জুয়েল ও রাজীব, বড়াইগ্রাম পৌর যুবদল সভাপতি আঃ খালেক, কায়েমকোলার যুবদল নেতা আরিফ, জোয়াড়ি ইউনিয়ন যুবদলের সভাপতি হুমায়ুন কবীর রান্টু, স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহবায়ক রাশেদুল ইসলাম , জোয়াড়ি ইউনিয়ন ছাত্রদল সভাপতি রাকিব, কায়েমকোলার যুবদল নেতা ইকবাল ও গাফফারসহ ১০/১২ অজ্ঞাত ব্যক্তিকে অভিযুক্ত করে রাত্রি সাড়ে এগারোটার দিকে ইউনিয়ন পরিষদের নিজ অফিস কক্ষে আকস্মিক একটি সংবাদ সম্মেলন করেন জোয়াড়ী ইউপি চেয়ারম্যান আলী আকবর।