রাজবাড়ীর পাংশা উপজেলার কসবামাজাইল ইউনিয়নে দুই পক্ষের সংঘর্ষে অন্তত চারজন আহত হয়েছেন। এ সময় ভাঙচুর করা হয়েছে অন্তত ২০টি বসতঘর। হামলাকারীরা বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট জেনারেল এসএম মতিউর রহমানের গ্রামের বাড়ির গেটে হামলার চেষ্টা করেছে বলেও অভিযোগ উঠেছে।
মঙ্গলবার দুপুরে ইউনিয়নের লক্ষীপুর, সুবর্ণখোলা ও ভাতশালা গ্রামে এ সংঘর্ষ ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। আহতরা হলেন—কসবামাজাইল ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য তামজিদ হোসেন, স্থানীয় উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জামির হোসেন, ভাতশালা গ্রামের ইসমাইল হোসেন এবং আশিকুর রহমান তন্ময়। আহতদের স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সম্প্রতি এলাকাজুড়ে সামাজিক বিরোধ প্রকট আকার ধারণ করেছে। এরই ধারাবাহিকতায় ইউপি সদস্য তামজিদ হোসেনের সঙ্গে বাজারের ব্যবসায়ী মুল্লুক মিয়ার কথাকাটাকাটি হয়। পরে তা সংঘর্ষে রূপ নেয়। সংঘর্ষের সময় উভয় পক্ষের লোকজন একে অপরের বসতঘর ও দোকানে ভাঙচুর চালায়।
এ বিষয়ে অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট জেনারেল এসএম মতিউর রহমানের ভাতিজা এবং কসবামাজাইল ইউপি চেয়ারম্যান সুফল মাহমুদ বলেন, “এখানে একটি সামাজিক রীতি রয়েছে। সেই রীতি ভেঙে মুল্লুক মিয়া তামজিদ মেম্বারের সমাজ থেকে বেরিয়ে গেছে। তাই মুল্লুককে সামাজিক চাপে রাখা হচ্ছিল। এ নিয়ে সংঘর্ষ হয়। পরে প্রতিপক্ষের লোকজন আমার চাচা এসএম মতিউর রহমানের বাড়ির গেটে হামলার চেষ্টা চালায়।”
তিনি আরও জানান, এ ঘটনায় থানায় অভিযোগ দেওয়ার প্রস্তুতি চলছে।
অপরদিকে ইউপি সদস্য তামজিদ হোসেন বলেন, “আমি ওরা দুই রাজনৈতিক দলে আছি। ওরা চেয়ারম্যানের লোক, আর আমরা ভিন্ন দলে। সেই বিরোধ থেকেই ঝামেলা শুরু হয়। আমি হামলার শিকার হয়েছি। মতিউর রহমান স্যারের বাড়ির গেটে বহিরাগতরাই হামলার চেষ্টা করেছে।”
এ বিষয়ে পাংশা সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার দেবব্রত সরকার বলেন, “সম্প্রতি কসবামাজাইল ইউনিয়নের সীমান্তবর্তী শৈলকুপায় একটি হত্যাকাণ্ড ঘটে, যার মূল বাড়ি এই এলাকায়। সেই ঘটনাকে কেন্দ্র করে সামাজিক দ্বন্দ্ব আরও বেড়ে যায় এবং মঙ্গলবার তা সংঘর্ষে রূপ নেয়। খবর পেয়ে পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। বর্তমানে ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।”
তিনি আরও বলেন, “লেফটেন্যান্ট জেনারেল এসএম মতিউর রহমানের বাড়িতে হামলার বিষয়টি শুনেছি। তবে এখন পর্যন্ত এ বিষয়ে কোনো পক্ষ থানায় লিখিত অভিযোগ দেয়নি।”