কটিয়াদী'র অজপাড়া গাঁয়ের ছোট্ট একটি প্রতিষ্ঠান; এসএসসিতে অর্জন করেছে অভূতপূর্ব সাফল্য

নিজস্ব প্রতিবেদক প্রকাশিত: ১৪ জুলাই , ২০২৫ ১৭:৫২ আপডেট: ১৪ জুলাই , ২০২৫ ১৭:৫২ পিএম
কটিয়াদী'র অজপাড়া গাঁয়ের ছোট্ট একটি প্রতিষ্ঠান; এসএসসিতে অর্জন করেছে অভূতপূর্ব সাফল্য
কিশোরগঞ্জ জেলার কটিয়াদী উপজেলার লোহাজুরী ইউনিয়নের প্রত্যন্ত অঞ্চলের ছোট্ট একটি গ্রাম চরকাউনিয়া।

কিশোরগঞ্জ জেলার কটিয়াদী উপজেলার লোহাজুরী ইউনিয়নের প্রত্যন্ত অঞ্চলের ছোট্ট একটি গ্রাম চরকাউনিয়া। এখানেই ২০০৪ সালে মোকাদ্দেম আফ্রাদ গোলাপ নামের একজন শিক্ষক নিজ প্রচেষ্টায় গড়ে তুলেছিলেন এই "আসাদুজ্জামান "স্বপন কিন্ডারগার্টেন এন্ড হাই স্কুল" নামের ছোট্ট প্রতিষ্ঠানটি। স্কুলটি প্রতিষ্ঠার পর থেকেই এই অজপাড়া গাঁয়ে জ্ঞানের ছড়াচ্ছে আসাদুজ্জামান স্বপন কিন্ডারগার্টেন এন্ড হাই স্কুল"।  এটি ব্যক্তি উদ্যোগে গড়ে উঠা একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান। প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই স্কুলটি খুব ছোট পরিসরে যাত্রা শুরু করেছিলো। এখনও ছোট ছোট টিনশেডের কক্ষেই চলছে পাঠদান। তীব্র গরমে যখন তাপমাত্রা বেড়ে যায় তখন শিক্ষার্থীদের যেনো কষ্ট না হয়, সেজন্য টিনের চালে মটরের মাধ্যমে পানি ছিটানো হয়। এভাবেই প্রায় দুই যুগেরও অধিক সময় ধরে প্রতিষ্ঠানটি সুনামের সাথে লোহাজুরী গ্রামের আলোকবর্তিকা হয়ে আলোর জ্যোতি ছড়াচ্ছে এই ছোট্ট প্রতিষ্ঠানটি। প্রতিষ্ঠার পর এবছরই প্রথমবারের মতো প্রতিষ্ঠানটি এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণের সুযোগ পায়। এবছর ওই প্রতিষ্ঠানে এস‌এসসি পরীক্ষার্থী ছিলো ২৮ জন। এর মধ্যে শতভাগ পাশ করার পাশাপাশি ২২ জন জিপিএ-৫ পেয়ে উপজেলায় বেশ সুনাম অর্জন করেছে। তন্মধ্যে ২ জন গোল্ডেন জিপিএ-৫ ! আর বাকী ৬ জন জিপিএ-৫ এর কাছাকাছি ছিলো। কেউ ৪.৯৬, আবার কেউ ৪.৮৩ এমন ! এ প্রতিষ্ঠানটির অভূতপূর্ব সাফল্যে শিক্ষক,শিক্ষার্থী, অভিভাবক সহ সকলেই আনন্দ উল্লাস প্রকাশ করছে! এ প্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান শিক্ষক মোকাদ্দেম আফ্রাদ গোলাপ স্যার এই অভূতপূর্ব সাফল্যের জন্য প্রতিষ্ঠানের সকল শিক্ষক-শিক্ষিকা, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের অভিবাদন ও প্রাণঢালা অভিনন্দন জানিয়েছেন। মূলত প্রতিষ্ঠানটির ভালো ফলাফলের ক্ষেত্রে বিশেষ অবদান রয়েছে যার তিনি হলেন ওই প্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান শিক্ষক মোকাদ্দেম আফ্রাদ গোলাপ স্যারের দক্ষ ব্যবস্থাপনা, শিক্ষকমণ্ডলীর নিরলস পরিশ্রম ও পরীক্ষার্থীদের অধ্যবসায়ের ফলে এ ফলাফল অর্জন সম্ভব হয়েছে। এ কৃতিত্বপূর্ণ ফলাফল ধরে রাখার ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠানটির পাশে থাকার জন্য এলাকাবাসীকে তিনি উদাত্ত আহ্বান জানিয়েছেন। এই প্রতিষ্ঠানটির উল্লেখযোগ্য দিক হলো: 
ছোট পরিসর থেকে বৃহৎ : অল্প কিছু শিক্ষার্থী নিয়ে যাত্রা শুরু হলেও, বর্তমানে এটি একটি উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে।
গ্রামের শিক্ষা বিস্তারে ভূমিকা : প্রত্যন্ত অঞ্চলের শিশুদের শিক্ষার সুযোগ করে দিচ্ছে।
ব্যতিক্রমী উদ্যোগ: গরমে শিক্ষার্থীদের কষ্ট কমাতে টিনের চালে পানি ছিটানোর ব্যবস্থা সত্যিই প্রশংসার দাবি রাখে।
আলোকবর্তিকা: গ্রামের শিক্ষাব্যবস্থার জন্য একটি আলোকবর্তিকা হিসেবে কাজ করছে।

উল্লেখ্য, ২০১৬ সাল থেকে নিয়মিত প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছে প্রতিষ্ঠানটি। সেখানেও ঈর্ষনীয় সাফল্য ছিলো। ২০১৬ সালে শতভাগ পাশ! ২০১৯ সালে ২৫ জন জিপিএ-৫, শতভাগ পাশ ছিলো! এ প্রতিষ্ঠানটির উত্তরোত্তর সফলতা দিন দিন বৃদ্ধি পেয়েই যাচ্ছে।

তবে সবচেয়ে আশ্চর্যের বিষয় হলো, এই ছোট্ট প্রতিষ্ঠানটির পাশাপাশি রয়েছে জালালপুর ও লোহাজুরী হাইস্কুল। তবে সেসব প্রতিষ্ঠানে একটাও জিপিএ-৫ নেই। অথচ লোহাজুরীর আসাদুজ্জামান স্বপন কিন্ডারগার্টেন এন্ড হাইস্কুলে ২৮ জনের মধ্যে ২২ জনেই কৃতিত্বের সাথে অর্জন করেছে জিপিএ-৫।

এই বিভাগের আরোও খবর

Logo