আলফাডাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে টাকা আত্নসাতের অভিযোগ

নাজিম বকাউল প্রকাশিত: ২৮ নভেম্বর , ২০২৪ ১৯:০৬ আপডেট: ২৮ নভেম্বর , ২০২৪ ১৯:০৬ পিএম
আলফাডাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে টাকা আত্নসাতের অভিযোগ
আলফাডাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে টাকা আত্নসাতের অভিযোগ

ফরিদপুর জেলার আলফাডাঙ্গা উপজেলার গত ২০২২-২৩ অর্থবছরে ৪টি প্রকল্পের প্রায় ৯ লাখ টাকার কাজ না করে আত্নসাতের অভিযোগ উঠেছে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সারমিন ইয়াছমিন এবং প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা প্রণব পান্ডের বিরুদ্ধে। এছাড়াও ২০২৩-২৪ ইংঅর্থ বছরের আরও দুটি প্রকল্পের দেড় লাখ টাকা হরিলুটের অভিযোগ রয়েছে।গোপন অনুসন্ধানে জানা যায় ,  গত ২ অর্থবছরের কয়েকটি অনুমোদিত তালিকা যাচাই করতেই এই অনিয়মের সত্যতা  মিলে এই দুই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে।গোপনসূত্রে খোজ নিয়ে জানা যায়, ফরিদপুর ১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য  মনজুরহোসেনের অফিসিয়াল প্যাডে গত ২০২২-২৩ ইং  অর্থবছরের টিআর এর বিশেষ বরাদ্দেরমুজিব শতবর্ষ পার্কের সৌন্দর্য বর্ধনের ২ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা, উপজেলাপরিষদের মধ্যে সৌন্দর্য বর্ধনের ২ লক্ষ টাকা মুজিব শতবর্ষ পার্কের জন্যরাইড ক্রয়  এর ২ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা এবং উপজেলা পরিষদের ভিতরে আগেইস্থাপিত বঙ্গবন্ধু ম্যুরালের সৌন্দর্য বর্ধন বাবদ ২ লক্ষ টাকা গত ২০২৩সালের জানুয়ারি মাসের  ৩০ তারিখে তৎকালীন জেলা প্রশাসক প্রকল্পগুলি অনুমোদনকরেন। বিধিমোতাবেক পরবর্তীতে উক্ত প্রকল্পগুলি বাস্তবায়নের জন্য একটি করেপ্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটি গঠন করার নিয়ম রয়েছে। শুধুমাত্র নিয়ম রক্ষার্থেজনপ্রতিনিধিদের নাম ব্যবহার করে একটি প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটি গঠন করেনপ্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা প্রণব পান্ডে এবং তৎকালীন উপজেলা নির্বাহীকর্মকর্তা (ইউএনও) রফিকুল হক। কিন্তু কোন কাজ না করেই প্রকল্প বাস্তবায়নকমিটির কাউকে না জানিয়ে ওই টাকা উত্তোলন করে নিজেদের কাছে রেখে দেন তারা।অনুমোদিত প্রকল্প এলাকায় পরিদর্শন করে দেখা যায় কোন প্রকার কাজ সম্পাদনহয়নি।এ অভিযোগের ব্যাপারে  একটি প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটির সভাপতি আবুল বাশার শেখ জানান,  "এই প্রকল্প সম্বন্ধে কিছুই জানিনা৷ কোথায় কি কাজ করেছে ? কে সভাপতি তাও আমি জানিনা, আমি কোন টাকা উত্তোলন করি নাই।অপর দুটি প্রকল্পের সভাপতি আব্দুল ওহাব পান্নু জানান, ২ টি কাজের পিআইসিআমাকে করা হয়েছিলো বলে আমি জানতে পারি, কিন্তু আমি কোন টাকা উত্তোলনকরিনাই পরবর্তীতে প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা এবং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মহোদয় আমাকে একটি সাক্ষর দিতে বললে তারা আমাদের উর্ধতন কর্মকর্তা হওয়ায় আমি তাদের কথায় একটি সাক্ষর করি।
বিষয়টা নিয়ে সাবেক  উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রফিকুল হক  জানান ,ওই প্রকল্পের সমস্ত টাকা বর্তমান উপজেলা নির্বাহী অফিসার সারমিন ইয়াসমিনের কাছে জমা আছে ।ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে   প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা প্রণব পান্ডে বলেন, আমি এবং আগের ইউএনও টাকা উত্তোলন করে নগদ টাকা বর্তমান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা  সারমিন ইয়াছমিনের নিকট জমা দিয়েছি ।এ বিষয়ে তৎকালীন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রফিকুল হক জানান, ওই প্রকল্পের ৯ লক্ষাধিক  টাকা উপজেলা এলজিইডি প্রকৌশলী রাহাত ইসলামকে সামনে রেখে তৎকালীন এসিল্যান্ড রজত বিশ্বাস এর কাছে বুঝিয়ে দিয়ে আসি পরবর্তী ইউএনওকে বুঝিয়ে দেবার জন্য। এখনও ওই টাকা বর্তমান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সারমিন ইয়াছমিন এর নিকট রয়েছে সে আমাকে ফোন করেছিলো, যেভাই আমার বদলি হয়েছে আপনার রেখে যাওয়া টাকার কাজ করে দিবো।এ বিষয়ে প্রকৌশলী রাহাত ইসলাম জানান , তিনি ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেন এবং টাকাগুলি বর্তমান ইউএনও সারমিন ইয়াছমিন এর কাছে আছে বলে জানান। দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে রফিকুল হক বদলি হয়ে গেলে, নির্বাচনকালীন সময়ে জ্যোতিশ্বর পাল নামে একজন ইউএনও যোগদান করেন। নির্বাচন শেষ হবার পরেতিনি বদলি হলে তার স্থলে ২৪ সালের ১২ ফেব্রুয়ারী যোগদান করেন বিসিএস প্রশাসন ক্যাডারের ৩৪ ব্যাচের সারমিন ইয়াছমিন নামের এই কর্মকর্তা। তিনিকোন কাজ না করেই বদলি হয়ে চলে যাচ্ছেন। গত ১৩ নভেম্বর তার বদলি আদেশ হয়েছে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের বাস্তবায়ন  পর্যবেক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগে।আরও জানা যায়  ২০২৩-২৪ অর্থ বছরে আরও দুটি প্রকল্পে  হারুন অর রশিদ নামের সাবেক এক পৌর কাউন্সিলরকে প্রকল্পের সভাপতি করে দেড় লক্ষ টাকা উত্তোলনকরে নিজের পকেটে রেখে দেন এই উপজেলা নির্বাহী কর্ম কর্তা , বাস্তবে যে কাজের কোন প্রমাণ মেলেনি।ইউএনও শারমিন ইয়াছমিনের কার্যালয়ে গেলে তিনি  জানান , তিনি টাকাগুলো তার কাছে আছে বলে স্বীকার করে  সাংবাদিকদের সহায়তা চান যেন   দ্রুত এ কাজের সমাধান হয় ।   

এই বিভাগের আরোও খবর

Logo