চার মাস ধরে এলাকায় জলাবদ্ধতা। নেই নতুন পোশাক কেনার টাকা। মাছ শিকার ও শাপলা বিক্রি করে চলছে তাদের সংসার। তার ওপর হামলা ও অগ্নিসংযোগের আতঙ্ক এখনো কাটেনি। এমন অবস্থায় শারদীয় দুর্গাপূজা উপলক্ষে যশোরের অভয়নগরে সুন্দলী ইউনিয়নের ডহরমশিয়াহাটী গ্রামের বাড়েধাপাড়ায় সেই মতুয়া সমপ্রদায়ের মাঝে নেই কোনো উৎসবের আমেজ। চলতি বছরের ২২শে মে বাড়েধাপাড়ার মতুয়া সমপ্রদায়ের ১৮টি বাড়িতে ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। সরজমিন দেখা যায়, সুন্দলী ইউনিয়নের ডহরমশিয়াহাটী গ্রামের চারিদিকে পানি। জলাবদ্ধতার কারণে বাড়েধাপাড়ার ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর যাতায়াতের একমাত্র বাহন তালের ডোঙা। বসতঘরের বারান্দা থেকে রাস্তা পর্যন্ত নির্মাণ করা হয়েছে বাঁশের সাঁকো। অধিকাংশ পরিবারের সদস্যরা জলাবদ্ধ অবস্থায় মানবেতর জীবনযাপন করছেন। দুর্গাপূজা শুরু হলেও তাদের চোখেমুখে রয়েছে আতঙ্কের ছাপ। নেই উৎসবের কোনো আমেজ। সংবাদকর্মী দেখে বাড়েধাপাড়ার প্রশান্ত বিশ্বাসের স্ত্রী কল্পনা বিশ্বাস জানান, ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগে ঘরবাড়ি, আসবাবপত্র ও বছরের জন্য মজুত খাবার পুড়ে যায়। প্রাণ বাঁচাতে আমরা পাশের গ্রামে পালিয়ে যাই। পরবর্তীতে পাল্টাপাল্টি মামলা দায়ের হলে আমাদের ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের পুরুষ সদস্যদের মধ্যে ৫ জনকে আটক করে পুলিশ। আর বাকি পুরুষ সদস্যরা গ্রেপ্তার আতঙ্কে গ্রাম ছেড়ে আত্মগোপনে চলে যান। মৃত পাগল চান বিশ্বাসের স্ত্রী সবিতা বিশ্বাস বলেন, দুর্গাপূজা শুরু হলেও উৎসব করার মতো কোনো অবস্থা নেই। বাড়ির শিশু ও বৃদ্ধদের জন্য নতুন পোশাক কেনার টাকা নেই। প্রতিদিন শিকার করা মাছ ও শাপলা বিক্রি করে চাল কিনতে হচ্ছে। খুবই কষ্টে জীবন কাটছে। উপজেলার সুন্দলী ইউপি চেয়ারম্যান বিকাশ রায় কপিল বলেন, ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলো সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোগে কিছু সহায়তা পেয়েছিল। তবে দুর্গাপূজা উপলক্ষে কোনো সহযোগিতা আসেনি। তারপরও ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে তাদের জন্য চেষ্টা চলছে। এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) আব্দুল্লাহ আল ফারুক বলেন, ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে পূজার মধ্যেই তাদের হাতে কিছু উপহার পৌঁছে দেয়ার চেষ্টা করবো।