রাজশাহীর তানোরে হঠাৎ ভারি বর্ষণের কারণে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় শতাধিক পুকুর ডুবে লাখ লাখ টাকার মাছ ভেসে গেছে। এতে পুকুর চাষিরা মারাত্মক ক্ষতির মুখে পড়েছেন। অনেকে রাত জেগে পুকুর পাহারা দিচ্ছেন এবং নেট জাল ফেলে যতটুকু সম্ভব মাছ রক্ষার চেষ্টা করছেন। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত শুক্রবার দিবাগত রাতে শুরু হওয়া ভারি বর্ষণ ভোর পর্যন্ত অব্যাহত থাকে। এতে তানোর উপজেলার বিভিন্ন গ্রাম প্লাবিত হয়। কলমার, রশিদ, আন্ধারাইল, কাঁসার দীঘি ও পার্শ্ববর্তী এলাকার অসংখ্য মৎস্যচাষির পুকুর পানির চাপে উপচে পড়ে যায়, ফলে কয়েক লাখ টাকার মাছ ভেসে যায়। কলমা ইউনিয়নের প্রসিদ্ধ মৎস্যচাষি সারুয়ার জাহান জানান, তার ১২টি পুকুরে নানা প্রজাতির মাছ চাষ করা হয়েছিল। হঠাৎ বর্ষণে সব পুকুর ডুবে গিয়ে মাছ নিঃশেষ হয়ে গেছে। এতে প্রায় ১৫ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে তিনি জানান। একই ইউনিয়নের রশিদ গ্রামের মৎস্যচাষি মামুন ও সরদার, কাঁসার দীঘির তৈয়বুর রহমান এবং আন্ধারাইল গ্রামের আব্দুল লতিফও একই দুর্ভাগ্যের শিকার হয়েছেন। তাদের পুকুরের প্রায় ৩০ লাখ টাকার মাছ ভেসে গেছে। হাবিবুর রহমান নামের আরেক চাষি জানান, তিনি একাধিক এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে ৯টি পুকুরে মাছ চাষ করেছিলেন। বর্ষণে সব মাছ নষ্ট হয়ে যাওয়ায় তিনি এখন ঋণ পরিশোধ করতে পারছেন না। তিনি বলেন, এখন আমি দিশেহারা। পরিবার চালানোই কষ্টকর হয়ে পড়েছে। এনজিওর কিস্তির টাকা কিভাবে দেব, বুঝতে পারছি না। তানোর উপজেলা মৎস্য সহকারী কর্মকর্তা হাজিজুর রহমান বলেন, একদিনের টানা ভারি বর্ষণে উপজেলার শতাধিক পুকুর ডুবে গেছে। চাষিদের ক্ষতির পরিমাণ বিশাল। তবে এখনো সঠিক পরিমাণ নির্ধারণ ও ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা প্রস্তুত করা সম্ভব হয়নি।এদিকে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও প্রশাসনের পক্ষ থেকে ক্ষতিগ্রস্ত চাষিদের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন এলাকাবাসী। তাদের দাবি, ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসনে সরকারি সহযোগিতা জরুরি হয়ে পড়েছে।