সোমবার, ১০ নভেম্বর ২০২৫, ০৭:২৯ অপরাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম
দীঘিনালায় অবৈধ ইটভাটায় ইউএনও’র অভিযান ফরিদগঞ্জে দরিদ্র নারীকে ফাঁকি দিয়ে সরকারি চাল চুরির অভিযোগ বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে ‎দরিদ্র নারীদের অর্থের প্রলোভন দেখিয়ে সমাবেশে এনে প্রতারণার অভিযোগ হাসান মামুন ছাড়া কেউ নয়, দশমিনা-গলাচিপা বিএনপির ঐক্যবদ্ধ ঘোষণা আশুলিয়ায় বকেয়া বেতন ও বন্ধ কারখানা চালুর দাবিতে শ্রমিকদের বিক্ষোভ মাগুরায় পেঁয়াজের বাজার নিয়ন্ত্রণে রাখতে সভা চট্টগ্রাম-২ (ফটিকছড়ি) আসনের সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী অধ্যক্ষ মুহাম্মদ নুরুল আমিনের সমর্থনে প্রীতি সমাবেশ অনুষ্ঠিত মাগুরায় ধানের দাম কম বিপাকে কৃষক বীরগঞ্জে ওয়ার্ল্ড ভিশনের প্রোগ্রাম কোয়ালিটি সেলফ রিভিউ ২ দিনের কর্মশালা অনুষ্ঠিত ফ্যাসিস্ট আ.লীগ পেশাজীবি সংগঠনগুলোকে লেজুড়বৃত্তিক করে রেখেছিলো

মোগল হাট সীমান্তে দুই বাংলার মিলন মেলা, কান্নায় ভাসলো স্বজনরা

মিলন কুমার বর্মন / ৩৮
Update Time : সোমবার, ১০ নভেম্বর ২০২৫, ০৭:২৯ অপরাহ্ন

রবিবার (১৯ অক্টোবর) দিনব্যাপী মা বৃদ্ধেশ্বরী পুজো (‘বুড়ির মেলা’) উপলক্ষে লালমনিরহাটের মোগল হাট সীমান্ত ছিল একেবারে উন্মুক্ত।
লালমনিরহাট মোগল হাট সীমান্তের জারিধরলা নদীর পাড় ঘেষা শ্রী শ্রী মা বৃদ্ধেশ্বরী পুজোয় দুই দেশের মানুষের বিনা পাসপোর্ট ও  ভিসা ছাড়াই ভারতের পূজারী এবং  বাংলাদেশের পুরোহিতের অংশগ্রহণে এই মিলন মেলায় হাজারো লোকের সমাগম ঘটে।
লালমনিরহাটের দুর্গাপুর ও মোগলহাট সীমান্তে ধরলা নদীর পাড়ে ৯২৭ নম্বর সীমান্ত পিলারের কাছে রবিবার দিনভর অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ-ভারত সীমান্ত মিলনমেলায় উপস্তিত হৃদয় কুমার জানান প্রায় দুই যুগ পরে দেখা হয় আপন দুই বোনের। একে অপরকে দেখেই তারা কান্নায় ভেঙে পড়েন। প্রায় দশ- পনের মিনিট ধরে শুধু কান্নাই চলেছে। চোখের জলে ফুটে উঠেছে সেই দীর্ঘ অপেক্ষার প্রশান্তি।
বড় বোন শুশীলা রানী (বাংলাদেশ) এনেছিলেন মিষ্টি, ইলিশ মাছ ও টাঙ্গাইলের শাড়ি। ছোট বোন নিয়তি রানী (ভারত) নিয়ে এসেছিলেন ভারতের মিষ্টি, মসলা, প্রিন্ট শাড়ি ও জামদানি। উপহার বিনিময়ের সময়ও তাদের চোখে অশ্রু থামেনি।
বাংলাদেশের শুশীলা রানী (৬০) কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, “প্রায় ২৪ বছর হলো বোনের সঙ্গে দেখা হয় না। ২০০৯ সালের পর মোবাইল ফোনে কথা হতো, তাতে মন ভরত না। ২০২১ সালের পর ভিডিও কলে কথা বলেছি, কিন্তু বুকের কষ্ট যায়নি। আজ বুড়ির মেলায় এসে বোনের দেখা পেয়ে মনটা জুড়িয়ে গেল।”
শুশীলা রানীর (৬০) বাড়ি লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলার দেওডোবা গ্রামে। আর নিয়তি রানীর (৫৮) বাড়ি ভারতের পশ্চিমবঙ্গের কোচবিহার জেলার দিনহাটা থানার গিদালদহ গ্রামে।
নিয়তি রানী জানান, প্রায় ২৪-২৫ বছর আগে তিনি ভারতে চলে যান। বাবা-মা দুজনেই মারা গেছেন— দেখা হয়নি। এখন বাংলাদেশে কেবল দিদি বেঁচে আছেন।
এমন হাজারো পরিবারের আবেগ ভরা গল্প জানা যায় এই মিলন মেলায়। প্রতি বছরই ধরলা নদীর পাড়ে সীমান্ত ঘেঁষে ভারতের কোচবিহার জেলার দিনহাটা থানার দড়িবাস এলাকায় শ্রী শ্রী মা বৃদ্ধেশ্বরী দেবীর পূজা উপলক্ষে বসে এই সীমান্ত মেলা।
একটি সূত্র জানায়, এ বছরের পূজার বিশেষত্ব হলো— মন্দিরের পুরোহিত আসেন বাংলাদেশ থেকে, আর পূজারী ভারতের। দুই দেশের মানুষ একসাথে পূজা দেন, প্রসাদ খান, আর একদিনের জন্য হলেও ভুলে যান সীমান্তের বিভাজনরেখা।
বাংলাদেশের পুরোহিত বিকাশ চন্দ্র চক্রবর্তী ও ভারতের পূজারী জ্যোতিষ চন্দ্র রায় বলেন, এই আয়োজন সম্প্রীতির প্রতীক। দুই দেশের ভক্তরাই মন্দির পরিচালনা করেন। এটি সীমান্ত পেরোনো ভালোবাসার এক অফুরন্ত দৃশ্য।
উল্লেখ্য এ মিলন মেলায় শুধু লালমনিরহাটের মানুষ জনই নয় — রংপুর, গাইবান্ধা, দিনাজপুর, নীলফামারী, ঠাকুরগাঁও, পঞ্চগড় ও কুড়িগ্রাম থেকেও বিভিন্ন ধর্মাবলম্বী মানুষজন এসেছে তাদের নিজ নিজ স্বজনদের এক নজর দেখতে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category