রাজশাহীর তানোর উপজেলায় আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয়েছে টাইফয়েড কনজুগেটেড ভ্যাকসিন (টিসিভি) ক্যাম্পেইন–২০২৫।পরোববার (১২ অক্টোবর) সকাল ১০টায় তানোর উপজেলার চাপড়া উচ্চ বিদ্যালয় চত্বরে এই কর্মসূচির উদ্বোধন করেন তানোর উপজেলা নির্বাহী অফিসারের প্রতিনিধি হিসেবে তানোর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আফজাল হোসেন।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন চাপড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জিল্লুর রহমান। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন তানোর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাক্তার বার্নাবাস হাসদাক।
এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা-কর্মচারী, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, শিক্ষক-শিক্ষার্থী, অভিভাবকসহ অসংখ্য গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্য সহকারী সেতাউর রহমান উপস্থিত চারজন ছাত্রছাত্রীকে টিসিভি টিকা প্রয়োগের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন ঘোষণা করেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, টাইফয়েড প্রতিরোধে দেশব্যাপী চলমান এই টিকাদান কর্মসূচির অংশ হিসেবে তানোর উপজেলার সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের বিনামূল্যে টিসিভি টিকা প্রদান করা হচ্ছে।
টাইফয়েড একটি মারাত্মক সংক্রমণজনিত ব্যাধি, যা সাধারণত দূষিত পানি ও খাদ্যের মাধ্যমে ছড়ায়। এই টিকা শিশুদের দেবে দীর্ঘমেয়াদি সুরক্ষা এবং টাইফয়েড সংক্রমণের ঝুঁকি উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস করবে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা। তানোর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কর্মকর্তা ডা. বার্নাবাস হাসদাক বলেন,
“টাইফয়েড জ্বর একটি মারাত্মক সংক্রমণজনিত রোগ, যা অনেক সময় জীবনহানির কারণ হতে পারে। তাই অভিভাবকদের উচিত তাদের সন্তানদের নির্ধারিত সময়ে টিসিভি টিকা নিশ্চিত করা।”
তিনি আরও জানান,উপজেলার প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, কমিউনিটি ক্লিনিক এবং আউটরিচ টিকাদান কেন্দ্রে পর্যায়ক্রমে এই টিকা দেওয়া হবে। দেশের প্রায় ৫ কোটি শিশুকে একটি ডোজ টিসিভি টিকা প্রদান করা হবে— যা জনস্বাস্থ্য সুরক্ষায় এক যুগান্তকারী পদক্ষেপ।
কর্মসূচির অংশ হিসেবে
বিদ্যালয় পর্যায়ে টিকাদান কার্যক্রম চলবে আগামী ৩০ অক্টোবর ২০২৫ পর্যন্ত,
আর কমিউনিটি পর্যায়ে টিকাদান কার্যক্রম চলবে ১৩ নভেম্বর ২০২৫ পর্যন্ত।
এক্যম্পেইনের মাধ্যমে ৯ম শ্রেণি পর্যন্ত সকল স্কুলপড়ুয়া শিক্ষার্থীদের টিকা দেওয়া হবে।
পবর্তীতে কমিউনিটি পর্যায়ে ৯ মাস থেকে ১৫ বছর বয়সী শিশুদের টিসিভি টিকা প্রদান করা হবে।
সরকারের এই টিসিভি টিকাদান কর্মসূচি বাস্তবায়িত হলে দেশব্যাপী টাইফয়েড জ্বরের প্রাদুর্ভাব উল্লেখযোগ্যভাবে কমে যাবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শিশুদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে এবং নিরাপদ শৈশব গড়ে তুলতে সরকারের এই উদ্যোগ স্বাস্থ্যখাতে এক যুগান্তকারী সাফল্য হিসেবে বিবেচিত হবে।