সোমবার, ১০ নভেম্বর ২০২৫, ০৬:৪৭ পূর্বাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম
ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধেই জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে ইন্দুরকানীতে বিয়ের দাবিতে প্রেমিকের বাড়িতে ৯ দিন ধরে অনশনে হিন্দু তরুণী সোনারগাঁয়ে ভূমি সেবা নিশ্চিত করতে উদ্যোগ নিলেন এসিল্যান্ড ফাইরুজ তাসনিম,সেবাগ্রহীতাদের সাধুবাদ নড়াইল-২, ‘ভাড়াটিয়া’ বা জোট প্রার্থী: ক্ষুব্ধ জনতা, বাধাগ্রস্ত স্থানীয় রাজনীতি ও উন্নয়ন অভয়নগরের নওয়াপাড়ায় ভৈরব নদের ওপর অত্যাচার যেন অলিখিত নিয়মে পরিণত লালপুরে ছাত্রলীগ নেতাকে আটকের পর ছেড়ে দিল পুলিশ সাপাহারে শিয়ালের কামড়ে নারী-শিশুসহ আহত ৩ পীরগঞ্জ স্বেচ্ছাসেবক লীগ সভাপতি গ্রেপ্তার মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারালেন তরুণ শিক্ষক ফরিদপুরের বোয়ালমারীতে বিএনপির দুই পক্ষের সংঘর্ষ

কমলগঞ্জের ৭ বাঁশমহাল ইজারা না হওয়ায় কোটি টাকার রাজস্ব গচ্ছা: পাচার ও বিনষ্টিতে অস্তিত্ব সংকটে বন

জায়েদ আহমেদ / ৫৩
Update Time : সোমবার, ১০ নভেম্বর ২০২৫, ০৬:৪৭ পূর্বাহ্ন

এক দশক ধরে নিলাম বন্ধ; সিন্ডিকেট, উচ্চ দর ও আইনি জটিলতায় হতাশ ইজারাদাররা; বন বিভাগের যোগসাজশে জমজমাট চোরাকারবারি


মৌলভীবাজার জেলার কমলগঞ্জ উপজেলার রাজকান্দি বনের অধীনে থাকা ৭টি গুরুত্বপূর্ণ বাঁশমহাল গত প্রায় এক দশক ধরে ইজারা হচ্ছে না। এর ভয়াবহ পরিণতি হিসেবে একদিকে যেমন চোরাকারবারিরা নির্বিচারে বাঁশ পাচার করছে, তেমনি মহালে বিপুল পরিমাণ বাঁশ পঁচে নষ্ট হচ্ছে। এর ফলে সরকার প্রতি বছর কোটি কোটি টাকার রাজস্ব হারাচ্ছে, অন্যদিকে স্থানীয় কতিপয় বন কর্মকর্তা-কর্মচারী ও পাচারকারীদের রমরমা ব্যবসা চলছে।

মৌলভীবাজারের বৃহত্তম রাজকান্দি বন রেঞ্জের অধীনে রয়েছে কুরমা, আদমপুর ও কামারছড়া বনবিট। এর মধ্যে আদমপুর ও কুরমা বনবিটে লাউয়াছড়া, চম্পারায়, বাঘাছড়া, ডালুয়াছড়া, কুরমাছড়া, সোনারাইছড়া, ও সুনছড়া নামে মোট ৭টি বাঁশমহাল রয়েছে। এই মহালগুলোতে বিভিন্ন প্রজাতির বিপুল পরিমাণ বাঁশ রয়েছে, যা ফি বছর ইজারা দিয়ে সরকার বড় অঙ্কের রাজস্ব আয় করত।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, বর্তমানে পিকআপ, ট্রাক, ঠেলাগাড়ি এমনকি নদী পথেও মহাল থেকে বাঁশ পাচার হচ্ছে। স্থানীয় রেঞ্জ কর্মকর্তা, বনবিট কর্মকর্তা ও অফিসের যোগসাজশে এই পাচারকাজ চলে। কেউ অভিযোগ জানালে বন বিভাগ সেগুলোকে ‘বাড়ি-ঘরের বাঁশ’ বলে এড়িয়ে যায়। ফলে আগামী কয়েক বছরের মধ্যে বনের বাঁশের অস্তিত্ব বিলীন হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন তারা। পরিবেশকর্মীদের দাবি, ইতিমধ্যে ৭টি মহালের বেশিরভাগ মূল্যবান বাঁশ কেটে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।

জানা যায়, দর কমানোর অজুহাতে ইজারাদাররা সিন্ডিকেট করে নিলামে অংশ নিচ্ছেন না। সাবেক ইজারাদারদের দাবি, দরপত্রের মাধ্যমে বাঁশের যে মূল্য নির্ধারিত হয়, তা তাদের বিক্রি মূল্যের (প্রতি বাঁশ ২০ টাকা) চেয়েও বেশি পড়ে যায়।
সিলেট বন বিভাগ ২০২৫-২৬ সালের জন্য দরপত্র আহ্বান করলেও কোনো মহালদার সাড়া দেননি। সূত্র জানায়, বিগত সময়ে প্রতিযোগিতার কারণে মহালগুলোর মূল্য কয়েক গুণ বেড়ে যাওয়ায় অনেকে বিজ্ঞপ্তিতে সাড়া দিয়েও ইজারা নেননি। এছাড়া, কিছু মহালে মামলার মাধ্যমে জটিলতা সৃষ্টি করে রাখা হয়েছে।
পরিবেশকর্মীদের একাংশ মনে করেন, মহালে পর্যাপ্ত বাঁশ না থাকায় ইজারাদাররা আগ্রহ দেখাচ্ছেন না।

বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) জেলা শাখার সভাপতি সালেহ সোহেল ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “বাঁধা ছাড়াই বাঁশ চুরি করে বিক্রি করা যায়, এ জন্য কেউ ইজারা নিতে চান না।” তিনি অবিলম্বে জড়িতদের আইনের আওতায় এনে বন, বাঁশ, বেত ও বনের প্রাণীকুল রক্ষায় শক্ত পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানান।
এ বিষয়ে মৌলভীবাজার বন বিভাগের সহকারী বন সংরক্ষক নাজমুল আলম জানান, “বিভিন্ন জটিলতার কারণে বাঁশমহালগুলো ইজারা দেওয়া যাচ্ছে না।” তবে বর্তমানে ব্যবস্থাপনা পরিকল্পনা বিভাগ মহালে বাঁশের পরিমাণ পরিমাপ করছে। তিনি আশা প্রকাশ করেন, রিপোর্ট পাওয়ার পর যেসব মহাল ইজারা দেওয়া সম্ভব, সেগুলোর জন্য দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category